আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় যেসব ভেষজ ব্যবহার হয়।
আয়ু’ শব্দের অর্থ ‘জীবন’ এবং ‘বেদ’ শব্দের অর্থ ‘জ্ঞান’ বা ‘বিদ্যা’। ‘আয়ুর্বেদ’ শব্দের অর্থ জীবনজ্ঞান বা জীববিদ্যা। অর্থাৎ যে জ্ঞানের মাধ্যমে জীবের কল্যাণ সাধন হয় তাকে আয়ুর্বেদ বা জীববিদ্যা বলা হয়।
আয়ুর্বেদ চিকিত্সা বলতে ভেষজ বা উদ্ভিদের মাধ্যমে যে চিকিত্সা দেয়া হয় তাকে বুঝানো হয়। এই চিকিত্সা ৫০০০ বছরের পুরাতন। অথর্ববেদ এর যে অংশে চিকিৎসা বিদ্যা বর্ণিত আছে তা-ই আয়ুর্বেদ।
আদি যুগে গাছপালার মাধ্যমেই মানুষের রোগের চিকিৎসা করা হতো। এই চিকিত্সা বর্তমানে ‘হারবাল চিকিত্সা’ তথা ‘অলটারনেটিভ ট্রিটমেন্ট’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
বিশ্বেও এই চিকিত্সা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কারণ মর্ডান এলোপ্যাথি অনেক ঔষধেরই side effect বা পার্শ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় পার্শ প্রতিক্রিয়া নাই।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় যেসব উপাদান ব্যবহৃত হয় সেসব উপাদান নিচে দেওয়া হলো –
মধু
হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ঔষুধ হিসাবে মধু ব্যবহার হয়ে আসছে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় মধুর সাথে ঔষধি গাছ, লতাপাতা, শেকড় ও নানা প্রকারের মশলা মিশিয়ে বিভিন্ন রোগে ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন একটু মধু খাওয়া আয়ুর্বেদ সমর্থন করে।
সোনালী বা গাঢ় বাদামী রঙের ঘন তরলটিতে জীবন রক্ষাকারী সকল প্রয়োজনীয় উপাদান বিদ্যমান যেমনঃ এনজাইম, পানি, ভিটামিন, মিনারেলস, এন্টি-অক্সিডেন্ট (ব্রেইন ফাঙ্কশন উন্নত করে) ইত্যাদি।
দুটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে মধু আপনার রক্তের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মান বাড়ায়। প্রাচীন কাল থেকে মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্টের কারণে ক্ষত এবং পোড়া নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
প্রতিদিন এক চামচ আদার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে কাশি কমবে।
কালমেঘ পাতা
কালমেঘ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। দীর্ঘদিন ধরে এটি চীন ও ভারতীয় আয়ুর্বেদিক চিকিত্সায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালমেঘ গাছের প্রত্যেকটি অংশই খুব তিক্ত হয় যার কারণে কালমেঘকে তিক্ততার রাজাও বলা হয়।
এটি আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক বিভিন্ন ধরণের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
কালমেঘ পাতা জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা, গলা বসে যাওয়া, টন্সিলাইটিস ইত্যাদি ক্ষেত্রে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কালমেঘ পাতা ভালো করে ধুয়ে হালকা গরম পানি মিশিয়ে ছেকে নিতে হবে।
এই কালমেঘ পাতার রস যেকোনো রকম ঠান্ডা লাগা জনিত রোগ খুব তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। তবে এর স্বাদ অতন্ত্য তিত্কুতে, তাই রস খাওয়ার সাথে সাথে এক চামচ মধু খেয়ে নিলে ভালো।
ত্রিফলা
আয়ুর্বেদ শান্ত্রে নয় আধুনিক গবেষণায়ও প্রমাণিত হয়েছে যে, দ্রব্যগুণে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে হরিতকী, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আমলকী এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে বহেড়া।
‘ত্রিফলা‘ কথাটির মানে হচ্ছে তিন ফলের সমাহার বা মিশ্রণ। ত্রিফলায় থাকা তিনটি ফল হলো হরিতকি (Haritaki), আমলকি (Amaloki) এবং বহেড়া (Bibitoki)।
হলুদ
আয়ুর্বেদের জন্মলগ্ন থেকেই হলুদের সঙ্গে এই শাস্ত্রের নাড়ির সম্পর্ক।
হাজার বছর আগেও তৎকালীন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা জানতেন প্রকৃতিক এ উপাদানটি হল পুষ্টিকর উপাদানের একটি পাওয়ার হাইজ, যাকে ঠিক উপায়ে যদি কাজে লাগানো যায়, তাহলে শরীরকে নিয়ে আর কোনো চিন্তাই থাকবে না।
মাংসপেশির ব্যথা, বাত ব্যথা, জয়েন্টের ব্যথা, দাঁতের মাড়িতে ব্যথা, মাসিকের পেটে ব্যথা। ব্যথা ছাড়া কোনো কথা নেই। বিশ্বাস করুন বা না করুন, আপনি যদি প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকেন তবে আপনি প্রাকৃতিক এই উপাদানটি
নিম পাতা
আয়ুর্বেদে নিম পাতাকে “স্কিনের রানী” বলা হয়। নিম পাতার ঔষধী গুন এতই বেশী যে এটাকে “গ্রাম্য ঔষুধের ফার্মেসী” বলা হয়। নিমগাছ আমরা সবাই চিনি। এটার উপকারীতা সম্পর্কে কম বেশি জানি।
বাড়ির আঙ্গিনায় ও রাস্তার পাশে নিম গাছ দেখা যায়। কথায় আছে বসত বাড়ির দক্ষিণ পাশে নিম গাছ থাকা ভালো।খোস পাচড়া ও চুলকানি সারতে নিমপাতা অতুলনীয়।
এক্ষেত্রে নিমপাতা ও নিম গাছের ফুল দুটোই ভালো কাজ করে। খোস পাচড়া- খোস পাচড়া হলে নিমপাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে খোস পাচড়া কমে যায়।
এছাড়া নিম পাতার সাথে সামান্য কাঁচা হলুদ পিষে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ আকারে ৭-১০ দিন ব্যবহার করলে খোস-পাঁচড়া ও পুরনো ক্ষত কমে যায়।
আমলকী
আয়ুর্বেদে আমলকী অমৃত ফল হিসাবে পরিচিত।
ভেষজ গুণে অনন্য আমলকী গাছের ফল ও পাতা দুটিই ওষুধরূপে ব্যবহার করা হয়। আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন “সি” রয়েছে।
পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে- আমলকীতে পেয়ারার চেয়ে ৩ গুণ, কাগজি লেবুর চেয়ে ১০ গুণ বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
এছাড়াও কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন “সি” রয়েছে।
তুলসী
প্রকৃতি মায়ের এক অফুরুন্ত ঔষুধের ভান্ডার এই তুলসী বা তুলসী পাতা। আয়ুর্বেদে তুলসীকে “হাড়ের রানী”, “গুল্মের রানী” এবং “প্রকৃতির মা ঔষুধ” বলা হয়েছে। ঔষুধী ও আধ্যাত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে একে জীবনের একটি elixir হিসাবে সম্মানিত করা হয়।
তুলসী পাতা কাশি সারাতে চমৎকার কাজ করে। কাশি হলে তুলসী পাতা, আদা ও মধুর একসঙ্গে মিশিয়ে খান৷ দ্রুত আরাম পাবেন। এছাড়া তুলসী চা খেতে পারেন।
তুলসী চা বাজার থেকে কিনতে পারেন বা নিজেরা ঘরে তৈরি করতে পারেন। ঘরে তৈরি করতে গেলে এক্ষেত্রে আদা কুচি, এলাচ গুঁড়ি এবং পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন। তারপর সামান্য মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিন। কাশি কমাতে সাহায্য করবে।
দূর্বা ঘাস
প্রাচীনকাল থেকে কোথাও কেটে গেলে রক্ত পড়া বন্ধ করতে দূর্বা ঘাস ব্যবহার করা হতো।
যেখানে সেখানে অযত্নে বেড়ে ওঠে দূর্বা ঘাস। রক্তক্ষরণ, কেটে যাওয়া বা আঘাতজনিত রক্তপাত বন্ধে, চুল পড়া কমাতে, চর্মরোগ দূর করতে, দন্তরোগ ও আমাশয়ে বেশ উপকারী দূর্বা।
ছোট বেলায় খেলার সময় পরে গিয়ে হাত পা কেটে গেলে দূর্বা ছেঁচে রস বের করে লাগিয়ে দিলে সাথে সাথে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যেত।
প্রাচীনকাল থেকে কোনও স্থান কেটে গেলে রক্ত বন্ধ করতে দূর্বা ঘাস ব্যবহার করা হয়। কয়েকটি দূর্বা ঘাস হাতের তালুতে পিষে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
কাটা স্থান জোড়া লাগে এবং শুকিয়ে যায়।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভেষজ গুণ। এটি প্রাকৃতিক ভাবে শীতলকারক। তাই প্রচন্ড গরমে শীতল বুলাতে এক গ্লাস অ্যালোভেরা শরবতই যথেষ্ট।
অনেক ধরনের সমস্যার এক এবং অব্যর্থ ঔষধ অ্যালোভেরা (Aloe Vera)। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় একে বলা হয় ঘৃতকুমারী। অ্যালোভেরা ক্রিম, জেল, টুথপেস্ট, ফেসওয়াস, লোশন, শ্যাম্পুতে, তেলে এবং মলমে ব্যবহার করা হয়।
মানবদেহের জন্য যে ২২টা এমিনো এসিড প্রয়োজন তার ৮টি অ্যালোভেরাতে রয়েছে। এছাড়াও আছে ভিটামিন “এ”, ভিটামিন বি-1, ভিটামিন বি-2, ভিটামিন বি-6, ভিটামিন বি-12, ভিটামিন “সি” এবং ভিটামিন “ই” .
এই শরবত আপনার লিভারকে সুস্থ রাখার একটি দুর্দান্ত উপায়। কারণ দেহ পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্ট ও হাইড্রেটেড থাকলে লিভার সর্বোত্তমভাবে কাজ করে। অ্যালোভেরার শরবত লিভারের জন্য আদর্শ কারণ এটি হাইড্রেটিং এবং ফাইটোনিট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ।
চিরতা
“চিরতা” হলো খুবই তিক্ত, পাকস্থলীর বায়ুনাশক, রেচক, জ্বররোধী, অ্যান্টি-পাইরেটিক, অ্যান্টি-পিরিয়ডিক, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, এন্টি পেটিক এবং অ্যান্টি-হেল্মিন্টিক।
এটি পাইলস, চর্মরোগ, জ্বর, কোষ্টকাঠিন্য, ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।কমা
তারুণ্য ধরে রাখতেও চিরতার গুরুত্ব অপরিসীম। নিজের তারুণ্য ধরে রাখার জন্য রোজ চিরতার জল খেতে পারেন। কারণ চিরতা রক্তকে পরিষ্কার করে। রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।
হরিতকী
হরিতকী আয়ুর্বেদিক ঔষুধ ‘ত্রিফলা’ এর অন্যতম প্রধান উপাদান। রোগ প্রতিরোধ ও রোগ নিরাময়ের বৈশিষ্ট্যর জন্য আয়ুর্বেদে হরিতকীর অবস্থান অনেক উপরে।
আয়ুবের্দ চিকিৎসা শাস্ত্রে, তেঁতো স্বাদের ছোট এ ফল মানব দেহের জন্য মহাষৌধ হিসেবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
হরি অর্থ হল যা চুরি করে এবং তকীর অর্থ যা ত্বকের আভা পরিষ্কার করে। অর্থাৎ হরতকী হল যা দেহ থেকে সমস্ত রোগকে সরিয়ে দেয় এবং ত্বকে উজ্জ্বলতা এনে দেয়।
গলা ব্যথা এবং এলার্জি থেকে শুরু করে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বদহজম পর্যন্ত বিভিন্ন রোগ নিরাময় করতে লোকেরা হরিতকী ব্যবহার করে।
ক্ষত নিরাময়ে, ছত্রাকের সংক্রমণ, মুখের শ্লেষ্মা ঝিল্লির প্রদাহ, হাঁপানি, পাইলস এবং কাশিতেও উপকারী হরিতকী।
জবা ফুল
জবা ফুল আয়ুর্বেদিক এবং ভেষজ ওষুধ তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। চা, চাটনি, স্যুপ এবং তরকারী তৈরিতে লোকেরা জবা ফুল ব্যবহার করে।
এটি একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুল। ফুলের ঔষধি মূল্যটি প্রাচীন বিজ্ঞান, আয়ুর্বেদ এবং চীনা ভেষজবিজ্ঞানে বর্ণিত হয়েছে।
গন্ধ নেই তাতে কি হয়েছে? এর রয়েছে অবিশ্বাস্য কিছু ঔষধি গুন।
আয়ুর্বেদে লাল জবা ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন রোগের প্রতিকারক হিসাবে, ত্বক ও চুলের যত্নে এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এটি কাজ করে।
আয়ুর্বেদ মাথাব্যাথা, ফোলাভাব, ঋতুস্রাব, চুলের যত্ন, সর্দি, ভিনেরিয়াল রোগ নিরাময়ের জন্য স্বল্প মেয়াদে বন্ধ্যাত্বকে উৎসাহিত করে এবং ঋতুস্রাবকে উদ্দীপিত করতে পাতা, ফুল এবং শিকড় ব্যবহার করা হয়। এটি জোলাপ হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।
এটি খুশকিও নিরাময় করে এবং অকালে চুল পড়া বন্ধ করে। জবা ফুল বেঁটে নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল কাল হয়।
মেথি
মেথির ব্যবহার শুধুমাত্র রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ নয়- আয়ুর্বেদিক ঔষুধ প্রস্তুতিতে, রূপচর্চায় আর চুলের যত্নে মেথি ব্যবহার হয়ে থাকে।
প্রচুর ফাইবার রয়েছে মেথি বীজে যা ওজন কমায় এবং পেট ভরিয়ে রাখে ফলে খিদের অনভূতি কমিয়ে ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে।
চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যায় কম-বেশি সকলেই ভোগে।
এই সমস্যা থেকে চুলকে রক্ষা করতে মেথির ভূমিকা অপরিসীম। মেথির বীজ ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে সজীব ও প্রাণবন্ত। মেথির বীজে ত্বকের মৃত কোষ তুলে ত্বক তরুণ ও উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।
ব্রাক্ষী
আয়ুর্বেদিক ওষুধগুলিতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রূপে ব্যবহৃত হয় ব্রাহ্মী। এই শাকে অনেক ঔষধি গুনাগুণ আছে। স্বরভঙ্গ, বসন্তরোগে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে, শিশুদের কফ ও কাশিতে এই শাক খাওয়ানো হয়ে থাকে।
ভৃঙ্গরাজ
ভ্রিংরাজ বা ভৃঙ্গরাজ গাছের পাতার রস আয়ুর্বেদিক ওষুধে লিভারের টনিক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। কিছু গবেষণায় দেখা যায় যে, এই ভেষজটি লিভারের কোষ তৈরিতে সহায়তা করতে পারে।
চুলের জন্য অনেক উপকারী হওয়াই অনেকে একে কেশরাজকে বলে। পাতা, ফুল ও ফলসহ বেটে রস তৈরী করে নিয়মিত কিছুদিন মাথায় দিলে, চুল পড়া বন্ধ হবে, চুল লম্বা ও কালো হবে।
যষ্টিমধু
যষ্টিমধু মূলে থাকা আইসোফ্লাভিন গ্লাব্রেন এবং আইসোফ্রাভিন গ্লাব্রিডিন হচ্ছে ফাইটোএস্ট্রোজেন। এটি আয়ুর্বেদিক ঔষধ প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তবে অধিক পরিমাণে যষ্টিমধু একদিনে খেলে গ্লাইসাররিজিনিক এসিড রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় এবং মাংসপেশী দুর্বল করে দেয় ও হাইপোক্যালেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অনেকে হার্টের রোগ, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, কাশি, ব্যাকটিরিয়া এবং ভাইরাস সংক্রমণের মতো রোগের চিকিৎসার জন্য যষ্টিমধু ব্যবহার করে। এটি নিয়মিত ক্যাপসুল আকারে বা পানির সাথে খাওয়া যায়।
এছাড়া যষ্টিমধু দিয়ে চাও বানিয়ে খেতে পারেন। এই চা গলায় ব্যথা কমাতে পারে। যষ্টিমধু তরল আকারে কফ বের করে দেয় এবং কাশি ভালো করতে পারে।
থানকুনি পাতা
পেটের পীড়ার মহৌষধ অর্থাৎ পেটের রোগ নিরাময় করতে থানকুনি পাতার কোনো বিকল্প নেই। যে কোনো পেটের ব্যাথা থেকে পরিত্রান পেতে আপনি এটা নিয়িমিত খেতে পারেন।
Fountain of youth অর্থাৎ যৌবনকে ধরে রাখতে প্রাকৃতিক মহৌষধ থানকুনি পাতা আয়ুর্বেদ অনুসারে কয়েক হাজার বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। সংস্কৃতে থানকুনি ‘ব্রাহ্মী’ নামে পরিচিত। তবে আয়ুর্বেদে একে বলা হয় ত্বাষ্ট্র। উৎপত্তিস্থল ভারত।
থানকুনি পাতা সকল ধরনের পেটের রোগের মহৌষধ। থানকুনি পাতা বেটে খাওয়া সবথেকে ভালো। পাতা বেটে মিহি করে একটু লবন ও সর্ষের তেল সহযোগে গরম ভাতের সঙ্গে খান।
এছাড়া থানকুনি খেলে বদহজম, ডায়রিয়া, আমাশয় ও পেটব্যথা সেরে যায়। মুখে রুচি আনে।