চির তরুণ থাকতে কী ধরণের খাবার খাওয়া উচিৎ?

প্রতিটি মানুষ চায় সবসময় নিজের সৌন্দর্য ধরে রাখতে। কিন্তু চাইলেই এটা সম্ভব হয় না। আসলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের পরিবর্তন হবে, এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

বয়স বাড়লেও শরীর মন সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকাটাই হলো তারুণ্য। দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন অনেক কিছু।

সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যকর খাবার, হাঁটাচলা, ব্যায়াম, পজিটিভ চিন্তা করা, মনকে প্রফুল্ল রাখা আর এই সব কিছুর পাশাপাশি রূপচর্চা তো রয়েছেই।

প্রতিদিনই মানুষের একটু একটু করে বয়স বাড়ে, বিশেষ করে ২৫ বছর বয়সের পর থেকে ত্বকে তার প্রভাব পরতে শুরু করে।

তবে এটা কিন্তু কোনো দুঃসংবাদ নয়। পরিবর্তন এবং বিকাশ- এটাই প্রকৃতির নিয়ম। শরীর, ত্বক, মন, অর্থাৎ পুরো মানুষটিই বদলায় ধীরে ধীরে। তাই চির তরুণ থাকার কিছু উপায় আছে। রয়েছে কিছু খাবার যেগুলো ধরে রাখবে আপনার চির তারুণ্য।

চির তরুণ থাকতে যেসব খাবার খাওয়া উচিৎ

চির তরুণ থাকতে যেসব খাবার খাওয়া উচিৎ তা নিচে দেওয়া হলো –

১. সকালে ঘুম থেকে উঠে ২ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। এর পর বাথরুমে যান। সারা দিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস বাড়তি পানি খাবেন।
২. বাথরুম থেকে ফিরে এসে আরও এক গ্লাস পানি খান এবং তার পর দুধ ছাড়া খুব হালকা এক কাপ চা খান।

আপনার ওজন যদি বেশির দিকে চলে যায় তাহলে চিনি খাওয়া ছেড়ে দিন। লাল চা দিনে কমপক্ষে ২ – ৪ কাপ খাবেন।

৩· ভিটামিন “সি” একটি বৈপ্লবিক খাদ্যপ্রাণ। এর গুণাগুণ অসংখ্য। জানা গেছে, দিনে ১ হাজার মিলিগ্রাম ভিটামিন “সি” খেলে মানুষ চির তরুণ থাকে।

তবে ভিটামিন ট্যাবলেট খেলে কোনো উপকার পাওয়া যায় না। প্রতিদিনই খেতে হবে ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ তাজা ফলমূল। 

ভিটামিন “সি” ক্যান্সার ঠেকাতে সাহায্য করে। আমলকি, সব ধরনের লেবু, টমেটো, কমলা, পেয়ারা, নানা রকর টক স্বাদের ফলে বিভিন্ন মাত্রায় ভিটামিন “সি” রয়েছে।

৪· রেডমিট খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। ফার্মের মুরগিও খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। শুধু চর্বিহীন বাচ্চা মুরগির মাংস খাওয়া ভালো।
৫· প্রচুর পরিমাণে আধা-সেদ্ধ শাক-সবজি, তরিতরকারি এবং খুব অল্প পরিমাণে ভাত-রুটি, রাখা উচিত আপনার দৈনন্দিন মূল খাদ্য তালিকায়। ভাজা জাতীয় খাবার খাবেন না।

অতিরিক্ত তেল, চর্বি, ঘি, মাখন খাবেন না। মসলার বিভিন্ন ভেষজ গুণ আছে, তবুও রান্নায় খুব বেশি মসলা ব্যবহার করবেন না।

৬· সালাদ হিসাবে প্রতিদিন বেশি করে খাবেন কাঁচা লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা, টমেটো ,শসা ইত্যাদি।
৭· বিধিনিষেধ না থাকলে সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খাবেন।
৮· ছোট-বড় সব ধরনের মাছ খাওয়া ভালো।

সমুদ্রের মাছ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে তো খুবই ভালো। কেননা সমুদ্রের মাছে আছে প্রচুর পরিমানে আয়োডিন

৯· তিলের তেলে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ শরীরকে শক্তিশালী করে। তিলের তেল  এমন একটি তেল যা ত্বকের পাশাপাশি আপনার চুল এবং হাড়ের জন্য খুবই উপকারী।

বিশেষত খাবারে ব্যবহৃত তিলের তেল হাড়ের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও অবদান রাখে।

১০. দই সার্বিক সুস্বাস্থ্যে তাই দারুণ উপকারী। এটি ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ভিটামিন ডি উপাদানে সমৃদ্ধ। দই হাড় শক্তিশালী রাখে এবং মাংসপেশিকে সবল ও সুস্থ্য রাখে।

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিকস, যা হজমে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে এটি বার্ধক্যজনিত রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।

১১. অলিভ ওয়েল এর স্বাস্থ্যগুণ বহুবিধ। সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে যেকোনো খাবারে এটি ব্যবহার করা যায়। জলপাই তেলের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে।

যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এছাড়া ত্বক নমনীয় ও কোমলা রাখতে অপরিসীম ভূমিকা রাখে।

১২.  ডালিম ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ও নতুন কোষ গজাতে সাহায্য করে।

এতে রয়েছে ভিটামিন “সি”। যা ত্বক কুচকে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও এটি ত্বককে সুরক্ষা দেয়।

এটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিটিউমর উপাদানেও সমৃদ্ধ। এর ফলে রূপ-লাবণ্যমই থাকে।

১৩. কমলা ভিটামিন “সি” এর চমৎকার উৎস। এ উপাদান কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। এ কোলাজেন ত্বক নরম রাখে এবং চর্মরোগ দূর করে।

শুধু তাই নয়, ত্বক মসৃণ রাখতেও এটি সহায়তা করে। এটি খেলে ত্বক ঝুলে যায় না। এটি খাওয়ার ফলে মানসিক অবসাদ দূর হয়।

এভাবেই চলুক আগামী কিছুদিন তারপর নিজেই দেখবেন আপনার এনার্জি লেভেল কত বেড়েছে।

আপনি কতটা ঝরঝরে অনুভব করছেন। আমাদের অন্তরের বিশ্বাসই আমাদের লক্ষ্য অর্জনের মূল হাতিয়ার। তাই বিশ্বাস করুন নিজেকে আর ভালোবাসুন নিজের কাজকে।