যেসব খারাপ অভ্যাসগুলির জন্য আমরা অসুস্থ্য হই।

মানুষ অভ্যাসের দাস। এই অভ্যাসগুলি খারাপ হতে পারে আবার ভালোও হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আমাদের মধ্যে যে অভ্যাসগুলি আছে সেগুলি খারাপ অভ্যাস।

যা আমাদের শরীরকে খারাপের দিকে নিয়ে যায়। তাই আমাদের সুস্থ্য থাকতে হলে এসব অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

তার আগে জানতে হবে কোন অভ্যাসগুলি খারাপ অভ্যাস যার কারনে আমরা অসুস্থ্য হয়ে যায়। এমন কয়েকটি অভ্যাস নিচে দেওয়া হলো –

সকালের খাবার না খাওয়া:

আমরা অনেক সময় সকালের খাবারটা বাদ দি। কিন্তু এটা আমাদের করা উচিত নয়। এতে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।

সকালের খাবার না খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর শক্তি সঞ্চয় করতে এবং ক্যালোরি সঞ্চয় করতে ব্যহত হয়। তাই এক বারে দুপুরে খাব বেশি করে এই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসুন।

চেষ্টা করুন সকালে ঘুম থেকে ওঠার দুই ঘন্টার মধ্যে খাবার খাওয়ার। ব্রেকফাস্টে প্রোটিন, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট এর ভারসাম্যপূর্ণ খাবার গ্রহণ করা উচিত।

পর্যাপ্ত পানি পান না করা:

পানি দেহের সিস্টেমগুলিকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।

যেমন শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, আমাদের শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার কোন বিকল্প নাই।

রক্ত ৯২% পানি থাকে। তাই পানি রক্তের সব দূষিত পদার্থ বের করে দিয়ে রক্ত পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং আমাদের পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

আপনি আপনার ডায়েটে উচ্চ পানিযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করে তরল গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারেন। যেমন- আঙ্গুর, কমলা, আপেল, নাশপাতি, শসা, তরমুজ ইত্যাদি।

দাঁত দিয়ে নখ কাটা:

দাঁত দিয়ে নখ কাটা সব খারাপ অভ্যাসগুলির মধ্যে একটি। সমস্ত বাচ্চা এবং কিশোরের প্রায় অর্ধেক লোক তাদের নখ কামড়ায়।

এটা আপনার বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে সহায়তা করতে পারে।

কারণ, আপনার হাত জীবাণুর আখড়া ছাড়া আর কিছুই নয়। এই জীবাণু পুরোপুরি আপনার নখে লুকানো থাকতে পারে।

যখন আপনি আপনার নখ কামড়াবেন তখন এই জীবাণু আপনার শরীরে প্রবেশ করবে এবং আপনার অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়াবে।

পর্যাপ্ত ঘুম না পড়া:

বর্তমানে ইয়াং জেনারেশনের কাছে রাত জাগা একটি কমন বিষয়। ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তারপরও রাত জাগা আমাদের কাছে একটি সাধারণ বিষয় বলে মনে হয়।

দীর্ঘ সময় ধরে টিভি দেখা:

আপনি যত বেশি টিভি দেখেন, আপনার তত কম শারীরিক ক্রিয়াকলাপ হয়, এবং ওজন বৃদ্ধি, টাইপ-2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

৯০০০ জনেরও বেশি লোকের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, যারা দিনে ২ ঘন্টার বেশি টিভি দেখেছেন তারা বেশি বেশি শর্করাযুক্ত সফট ড্রিঙ্কস এবং উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার, উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার, প্রসেসড স্নাক খেয়েছেন।

খুব বেশি ফাস্টফুড খাওয়া:

পিজা বার্গার এবং ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এরকম খুব বেশি ফাস্টফুড খাওয়া হার্টের রোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ট্রান্স ফ্যাট, যা প্রায়শই ফাস্টফুডে পাওয়া যায়। এই ফ্যাট ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল এবং রক্তের চর্বি বৃদ্ধি করে যা ধমনী শক্ত করার ক্ষেত্রে অবদান রাখে পাশাপাশি ধমনীর আশপাশে ফ্যাটি ফলক তৈরিতে অবদান রাখে।

ক্ষুধার্ত না তারপরও খাওয়া:

অবশ্যই বেঁচে থাকার জন্য খাবারের প্রয়োজন, তবে আপনি যখন ক্ষুধার্ত না তারপরও খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

এই অভ্যাস আপনার ওজন বৃদ্ধি করে এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি যেমন হার্টের ‌রোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করা:

অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আপনি সর্বচ্চো এক গ্লাস পান করতে পারেন কিন্তু তার বেশি নয়।

অ্যালকোহল কোনও পুষ্টি সরবরাহ না।

দাঁত ব্রাশ না করে বিছানায় যাওয়া:

দিনের শেষে, আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। দাঁত ব্রাশ করতে ইচ্ছা করছে না তাড়াতাড়ি বিছানায় চলে গেলেন। চিন্তা করছেন কাল সকালে দাঁত ব্রাশ করবেন।

রাতে ব্রাশ না করার অভ্যাস এটা আপনার দাঁতের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। দাঁতে ফলক হয়ে মাড়ির রোগ হয়। তাই রাতের খাবারের ঠিক পরে ব্রাশ করুন।

ধূমপান করা:

ধূমপান করা হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে তুলতে পারে, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার রোগে, ফুসফুস ক্যান্সার, মুখ ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

এমনকি ধূমপান করার ফলে মূত্রাশয় ক্যান্সারও হয়ে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের অভিমত অনুসারে ধূমপান কিডনিসহ শরীরে সব অঙ্গের জন্যই ক্ষতিকর।

রেফারেন্স: