টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ কি কি?

ডায়াবেটিসের একটি ধরন হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। এটি সাধারণ ডায়াবেটিসের থেকে কিছুটা আলাদা হয়ে থাকে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস একজন মানুষের রক্ত শর্করার মাত্রাকে হাই করে তোলে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস খুবই প্রচলিত সমস্যা। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি ঘটে।

এই রোগের কারণে শরীর প্রয়োজনীয় মাত্রায় ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না, তাই রক্তে দেখা দেয় উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতি।

টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সূচনা হয় ধীরে ধীরে। ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সূক্ষ্ম হয় যার কারণে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা যায় না।

যার ফলে বিনা চিকিত্‍সায় শরীরে ডায়াবেটিসের মাত্রা প্রকট আকারে বেড়ে যায়। যা অনেক সময় জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দেখা দেয়।

চলুন জেনেনি, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের প্রধান লক্ষণগুলি –

ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া :

টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীদের ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ অনুভব করতে দেখা যায়। আর এ কারণে অনেকেই ব্যক্তিগত জীবনে বেশ সমস্যা ভুগে থাকেন।

ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে শরীরে রক্ত শর্করার মাত্রা খুব বেড়ে গেলে কিডনিগুলো রক্তকে পরিস্রাবণ করে অতিরিক্ত শর্করা বের করে দিতে চেষ্টা করে।

এর ফলে একজন মানুষের ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ আসে, বিশেষ করে রাতে।

তৃষ্ণাবোধ হওয়া :

টাইপ-২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ হলো তৃষ্ণাবোধ হওয়া। আপনি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলেও কিছুক্ষণ পর পর আপনার তৃষ্ণাবোধ হবে।

এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এ তৃষ্ণাবোধটি আপনার প্রকৃত তৃষ্ণা নয়। মস্তিষ্ক থেকে তৃষ্ণার এ অনুভূতিটি তৈরি হয় যার ফলে একজন ডায়াবেটিস রোগীর সচরাচরের চেয়ে বেশি তৃষ্ণাবোধ হয়।

ক্লান্তি বা দুর্বলতা দেখা দেয় :

অনেকেরই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে দুর্বলতা বা ক্লান্তি দেখা দেয়।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস শরীরকে মারাত্মক দুর্বল করে তোলে। প্রচুর খাবার খাওয়া সত্ত্বেও শরীর ক্লান্ত মনে হয়।

মূলত শরীরের রক্তপ্রবাহ থেকে কোষগুলোতে পর্যাপ্ত শর্করা যেতে পারে না বলে এই ক্লান্তি হয়ে থাকে।

ক্ষুধাবোধ বৃদ্ধি পায় :

টাইপ-২ ডায়াবেটিসের প্রধান লক্ষণের মধ্যে অন্যতম হলো ক্ষুধাবোধ অনেক বেড়ে যাওয়া।

খাদ্য উপাদান থেকে কোনো শক্তি উত্‍পাদন করতে পারে না শরীর। যার ফলে দেখা দেয় অতিরিক্ত ক্ষুধাভাব।

বারবার খাবার গ্রহণের পরেও ক্ষুধাভাব পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হয় না। একারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত লোকেরা প্রতিনিয়ত ক্ষুধা অনুভব করেন।

ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া :

রক্তের উচ্চ মাত্রার শর্করা শরীরের স্নায়ু ও রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

এর ফলে ক্ষত শুকাতে সপ্তাহের পর সপ্তাহ বা কয়েক মাস লেগে যেতে যায়। ক্ষত ঠিক হতে যত দেরি হবে, সংক্রমণের ঝুঁকি তত বাড়তে থাকবে।

ওজন কমতে শুরু করে :

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে দেহের ওজন মারাত্মক ভাবে কমে যায়। ডায়াবেটিস হলে শরীর তার প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়।

যার কারণে শরীরে পর্যাপ্ত শক্তির ঘাটতি দেখা দেয়। এতে শরীর তার জমাকৃত ফ্যাট ব্যবহার করা শুরু করে। যে কারণে হুট করেই ওজন কমতে শুরু করে।

চোখ জ্বালাপোড়া ও চোখে ঝাপসা দেখা :

রক্তে শর্করার মাত্রা যখন বেশি হয় তখন চোখ জ্বালাপোড়া করে। এ সমস্যা বাড়তে থাকলে অনেক সময় আপনার চোখে বড় ধরণের ক্ষতিও হতে পারে।

আবার রক্তের অতিরিক্ত শর্করা চোখের ছোট ছোট রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে, যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।

শুরুতে এর চিকিসৎসা না নিলে রক্তনালীগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

রেফারেন্স: