গরমে সুস্থ্য থাকতে যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা স্বাস্থ্যকর।

গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। রোদের তেজ যেন বেড়েই চলেছে। তবে থেমে নেই জনজীবন। নানা প্রয়োজনে ঝাঁজাল রোদ মাথায় নিয়েই বেরোতে হচ্ছে বাইরে। এজন্য সতর্ক থাকা প্রয়োজন। প্রচণ্ড গরম বা সূর্যের আঁচে যেকোনো মুহূর্তে যে কেউ অসুস্থ্য হয়ে পড়তে পারে।

তাই এক্ষেত্রে আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু অনেকেই তা করেন না। তারা নিজেদের ইচ্ছা মতো অতিরিক্ত জাঙ্কফুড, তেল ও মসলাদার জাতীয় খাবার খেয়েই চলেন। আর তারপরই নানা ধরণের অস্বাস্থ্যকর ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়। তাই এমন কিছু খাবার আছে যা সর্বদাই আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত।

তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক সেই খাবারগুলো কি কি?

অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার:

ঝাল, মসলাদার, চটপটে খাবার কার না ভালো লাগে। তবে তীব্র এই গরমে নিজের প্রয়োজনেই সংযম পালন করতে হবে। মরিচ, আদা, গোলমরিচ, জিরা, দারুচিনি ইত্যাদি বিপাকক্রিয়ার গতি বাড়ায়। ফলে স্বাভাবিকভাবে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।

মাংস:

আমরা সকলেই জানি যে মাংস হজম করা সহজ নয়। গ্রীষ্মের মরসুমে অতিরিক্ত মাংস খাওয়া হজম পদ্ধতির উপর চাপ বাড়ায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা হজম করার সময় শরীরকে গরম করে।

তাই গরমের দিনে মাংস প্রয়োজন মতো খাওয়াই ভালো। পাশাপাশি ডায়রিয়ার বা পাকস্থলিতে অস্বস্তির কারণও হতে পারে এ খাবারগুলো।

তৈলাক্ত খাবার ও জাঙ্ক ফুড:

পুরি, শিঙাড়া, বার্গার, পিৎজা ইত্যাদি খাবার কার না খেতে মন চাই। কিন্তু গরমে এসব খাবার শরীরটাকে আরও গরম করে। তাছাড়া হজমের সমস্যা দেখা দেয়, বাড়ায় খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঝুঁকিও এমনকি ভাজা খাবার ত্বকে ব্রণের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

চা ও কফি:

গ্রীষ্মে চা এবং কফির মতো গরম পানীয় এড়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, বাহ্যিক উত্তাপের কারণে শরীরের তাপমাত্রা ইতিমধ্যে উচ্চতর এবং এমন সময় আপনি যদি গরম কোন কিছু খান তাহলে শরীরের ভিতরে আরো গরম হয়ে যাবে। ফলস্বরূপ পিত্তর উপাদান বৃদ্ধি পায় যা পাচনতন্ত্র এর জন্য ক্ষতিকর।

চা ও কফি দুটোই শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়, তাই গরমে সুস্থ থাকতে চা, কফি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো।

চিজ দেওয়া সস:

সকল প্রকার চিজ বা পনির সমৃদ্ধ সস থেকে দূরে থাকতে হবে গরমের দিনগুলোতে। কারণ এগুলোতে থাকে প্রায় ৩৬০ ক্যালরি। আর খাওয়ার পর শরীর ছেড়ে দেওয়ার মতো অনুভূতি হয়। সসের পরিবর্তে সতেজ ফল ও সবজি কিংবা সালাদ বেছে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে টমেটো আদর্শ বিকল্প।

অ্যালকোহল:

অ্যালকোহল পান করা শরীরের জন্য আসলেই খারাপ। আর গরমের দিনেতো এটি অত্যাধিক পান করলে শরীর শুকিয়ে যায়। তাই এটি বাদ দিয়ে এর চেয়ে মজাদার ঠাণ্ডা পানীয় বা শরবত পান করুন।

আম:

আহ কি সুন্দর সুমিষ্ট আম মায়াবী তার গন্ধ। ইচ্ছা করে আমের ঝুঁড়ি ধরে শেষ করে দি। তবে এমন টি করবেন না খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকে নজর দিতে হবে। যে কোনও কিছুর অতিরিক্ত ব্যবহার খারাপ একই নিয়ম আমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আম প্রাকৃতিক চিনিতে সমৃদ্ধ। তাই কয়েকটি আম একবারে খেয়ে ফেললে পেট খারাপ হতে পারে। অতিরিক্ত আম খেলে শরীরের গরমের কারণে ব্রণ হতে পারে।

আইসক্রিম:

গরমে আইসক্রিম খাওয়া যাবে না এমনটা নয়। আপনি গরমে অবশ্যই আইসক্রিম খেতে পারেন। বাইরের আইসক্রিম না খেয়ে আমরা ঘরে বানিয়ে খেতে পারি। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা হজম করার সময় শরীরকে গরম করে। কেনা আইসক্রিমগুলি প্রায়শই অসুস্থতাজনিত ব্যাকটিরিয়া বিকাশ করে তাই এড়ানো উচিত। বিশেষজ্ঞরা কেবলমাত্র আপনার দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলেই ঘরে তৈরি আইসক্রিম খাওয়ার পরামর্শ দেন।

গরমের দিনে ঘাম হয় প্রচুর। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে পানি, লেবুর শরবত ও ফলের রস পান করুন। যাতে পানিশূন্যতা না হয়। আর অবশ্যই বাইরে বের হওয়ার সময় ব্যাগে পানির বোতল রাখতে ভুলবেন না।

রেফারেন্স: