গর্ভাবস্থায় গরুর দুধ খাওয়ার উপকারিতা।
একটি নতুন জীবন তৈরি করা সহজ নয়। প্রতিনিয়ত গর্ভের শিশু বেড়ে ওঠার জন্য দরকার সঠিক পুষ্টি। তার জন্য গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
এই সব স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে দুধ অন্যতম। প্রতিদিন ফল, শাক সবজি খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করা উচিত।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য দুধ কেন প্রয়োজনীয়?
গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে গরুর দুধ পান করা খুবই জরুরী। যদি দিনে ১ গ্লাস দুধ পান করা যায় তাহলে একটি সুস্থ্য বাচ্চা প্রসব হবে।
এছাড়া প্রসবের পর মায়ের বুকের দুধে বাচ্চার অধিক পুষ্টির জন্য মায়েদের দরকার গরুর দুধ পান করা।
তাই গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে দুধ পান করা মায়েদের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
গরুর দুধের পুষ্টিগুণ
দুধের অপরিহার্য উপাদান ল্যাকটোজ যা দৈহিক গঠন, বিকাশ ও মেধা বৃদ্ধিতে সহায়ক। মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার মূল উপাদান দুধ। নিচে গরুর দুধের কিছু পুষ্টি উপাদান দেওয়া হলো –
- ক্যালোরি: ১৪৬
- প্রোটিন: ৮ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম: ২৮% (RDA)
- ভিটামিন “ডি”: ২৪% (RDA)
- রিবোফ্লাভিন (বি-2): ২৬% (RDA)
- ভিটামিন বি-12: ১৮% (RDA)
- সেলেনিয়াম: ১৩% (RDA)
গর্ভাবস্থায় দুধ খাওয়ার উপকারিতা
নিচে গর্ভাবস্থায় দুধ খাওয়ার উপকারিতা দেওয়া হলো –
হাড়ের জন্য ভালো:
গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যকর হাড় এবং দাঁতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান হলো ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামের সব চাইতে ভালো উৎস দুধ।
এছাড়া দুধ ভিটামিন “ডি” এর ভালো উৎস যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
ক্যালসিয়াম ভিটামিন “ডি” এর সাহায্যে আমাদের হাড় ও দাঁতে শোষিত হয়ে হাড় ও দাঁতের গঠন দৃঢ় করে এবং দাঁতের ক্ষয়রোধ করে।
প্রোটিনের একটি ভাল উৎস:
প্রোটিন গর্ভবতী মায়েদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ। দুধ হল প্রোটিনে ভরপুর একটি পানীয়।
প্রোটিন শিশুর দেহে বৃদ্ধি এবং বিকাশ, সেলুলার মেরামত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয়।
দুধকে একটি “সম্পূর্ণ প্রোটিন” হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যার অর্থ এটি আমাদের শরীরের সর্বোত্তম স্তরে কাজ করে।
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন “ডি” এর চাহিদা পূরণ করে:
দুধ অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং গর্ভাবস্থায় মহিলাদের জন্য ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন “ডি” এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
আপনি কি জানেন যে কেন গর্ভাবস্থায় আপনার ভিটামিন ডি প্রয়োজন? একটি গবেষণা অনুসারে, গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ভিটামিন “ডি” পাওয়া শিশুর ভবিষ্যতে অ্যালার্জি হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে।
এগুলি ছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন এবং ১০০০ থেকে ১৩০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় দুধ পান করা আপনার ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারে।
ভ্রূণের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য:
গর্ভাবস্থায় দুধ পান করাও ভ্রূণের বৃদ্ধি এবং এটি বাচ্চাকে লম্বা হতে সাহায্য করতে পারে।
দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে – এগুলি সবই শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়।
ক্যালসিয়াম এবং আয়রনে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে দুধ শিশুর হাড়ের গঠন ও বিকাশ এবং শিশুকে অক্সিজেন পরিবহনে সহায়তা করে।
অন্তঃসত্ত্বা ভ্রূণের বিকাশের জন্য দুধের প্রয়োজনীয় সমস্ত ভিটামিন রয়েছে।
অনেকের দুধে এলার্জি থাকতে পারে। যাদের পেটে অস্ত্রোপচার (অপারেশন) করা হয়েছে তাদের জন্য দুধপান নিষিদ্ধ। কোনোকিছু অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না। তাই পরিমাণমতো খাবেন।