গর্ভকালীন সময়ে শিমের বীজ খাওয়ার উপকারিতা।

শিমের বীজের মধ্যে ফোলেট সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। ফোলেট স্বাস্থ্যের জন্য, সুস্থ্য লাল রক্তকণিকা তৈরি করতে এবং গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের নিউরাল টিউব ত্রুটি রোধে সহায়তা করে। ১৫৫ গ্রাম শিমের বীজে ৪৮২ মাইক্রোগ্রাম ফোলেট থাকে।

শিমের বীজ কেবল একটি সুস্বাদু খাবার নয়, পুষ্টিতেও পরিপূর্ণ। এগুলি পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং প্রোটিন দিয়ে ভরা তাই নিরামিষাশীদের জন্য শিমের বীজ একটি ভাল মাংসের বিকল্প হতে পারে।

প্রোটিন গর্ভাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ এটি আপনার শিশুর বিকাশে সহায়তা করে। শিমের বীজ শিশুর জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং দ্রুত গতিতে বাচ্চাকে বাড়াতে সহায়তা করে।

গর্ভকালীন সময়ে শিমের বীজ খাওয়ার উপকারিতা

নিচে গর্ভকালীন সময়ে শিমের বীজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –

আমিষের উৎস:

গর্ভকালীন সময়ে প্রোটিন বা আমিষ খবুই প্রয়োজনীয় একটি খনিজ উপাদান। প্রোটিন বা আমিষ শিমের বীজের একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যা দেহকে সুস্থ্য রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিমের বীজে দুই ধরণের প্রোটিনের উৎস: সম্পূর্ণ আমিষ এবং অসম্পূর্ণ আমিষ। শিম নিরামিষ ভোজীদের মায়েদের আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারে। ১০০ গ্রাম শিমের বীজে আমিষ আছে প্রায় ২৫ গ্রাম।

অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো:

গর্ভকালীন সময়ে শিমের বীজ অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। শিমের বীজ অন্ত্রের সমস্যা দূর করে এবং উপকারী ব্যাকটিরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

এটি অন্ত্রের বিভিন্ন ধরণের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করতে এবং ওজন হ্রাস করতে পারে। শিমের বীজে প্রচুর ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।

আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি করে:

হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে আয়রনের প্রয়োজন। শিমের বীজ আয়রনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে, যার ফলে গর্ভের শিশুর স্মৃতিশক্তি বিকাশের ও ভ্রূণের বিকাশে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস:

শিমের বীজ গর্ভকালীন সময়ে রক্তে গ্লুকোজের স্তর স্থিতিশীল করতে বা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারে। এতে ফাইবার বেশি থাকে, যা রক্তের গ্লুকোজ হ্রাস করতে সহায়তা করে।

২০১৮ সালের এক পর্যালোচনার দেখা গেছে যে, উচ্চ ফাইবারযুক্ত ডায়েট টাইপ-2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। তাই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও হ্রাস শিমের বীজ খেতে পারেন।

অ্যামিনো অ্যাসিডের উৎস:

শিমের বীজে অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে। অ্যামিনো অ্যাসিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং বিভিন্ন রোগ ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, অ্যামিনো অ্যাসিড দ্বারা তৈরি প্রোটিন শিশুর দেহের কোষ এবং মায়েরও একটি দুর্দান্ত ভিত্তি তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সতর্কতা

কোন কোন ক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যা, পেটে ব্যথা হতে পারে শিমের বীজ খেলে। এর কারণ শিমের মধ্যে র‌ফিনোজ থাকে, এটি এক ধরণের ফাইবার। যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

তবে আপনি যদি জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হন বা অন্য কোনো কারণে রেগুলার কোনো মেডিকেল কোর্স-এর মধ্য দিয়ে যান তাহলে অবশ্যই খাওয়ার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।