গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন সময়ে কি কি খাওয়া দরকার। জেনে নিন।

স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের জন্য সবসময় স্বাস্থ্যকর খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু গর্ভবতী মায়ের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন মায়ের জীবনে একমাত্র গর্ভকালীন সময় ছাড়া অন্য কোনো সময়ে পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্বটা এতো বড়ো হয়ে সামনে আসে না। একজন গর্ভবতী মা গর্ভকালীন সময়ে যে সকল খাবার গ্রহণ করে থাকে সেটাই তার গর্ভের শিশুর বেড়ে ওঠার একমাত্র রসদ। কোনো বাড়িতে গর্ভবতী মহিলা থাকলে প্রথমে প্রয়োজন, গর্ভের বাচ্চার গঠন ও উন্নতির জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর ও শক্তি প্রদানকারী  খাবারের যোগান নিশ্চিত করা এবং না থাকলে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কারণ কয়েক মাস পরে তার শরীরে যে পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে সেটা সামলে ওঠার মতো শারীরিক সক্ষমতা তার আছে কি না- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

গর্ভবতী মায়েদের প্রতিবারের খাবারের তালিকায় বাচ্চার বৃদ্ধির জন্য আমিষ জাতীয় খাবার রাখা উচিৎ। কারণ গর্ভবতী মেয়েদের ক্ষেত্রে ডাক্তারী পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর একটা কথা প্রায়শ শোনা যায়- বাচ্চার ওজন কম। এই সময়ে মায়ের শরীরের জন্য অতিরিক্ত পুষ্টির বিষয়টা বজায় রাখা দরকার। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা বজায় রাখা খুবই সহজ। এটা কঠিন কিছু নয়। স্পেশাল (Special ) বা দামি খাবারের দরকার নেই। দরকার শুধু বিভিন্ন পদের খাবার যেগুলো আমাদের হাতের কাছেই পাওয়া যাই। একটু বুদ্ধি করে এবং সতর্কতার সাথে এগুলো আমরা সংগ্রহ করতে পারি। খাবারগুলো হলো – ভাত, ডাল, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সবুজ-শাকসবজি ও ফলমূল।

গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকাঃ এবার একটু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।

ফলিক অ্যাসিড (Folic Acid ) সমৃদ্ধ খাবার :

ফলিক অ্যাসিড বাচ্চার ব্রেন ডেভেলপমেন্ট এর জন্য খুবই দরকারী। সাইট্রাস ফ্রুটস যেমন-  লেবুজাতীয় ফল অর্থাৎ কমলালেবু, পাতিলেবু, কাগজীলেবুসহ সকল প্রকার লেবুজাতীয় ফলে প্রচুর পরিমানে ফলিক অ্যাসিড বিদ্যমান। এছাড়া পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি, Beans, ফর্টিফায়েড এন্ড enriched cereals তেও পাওয়া যায়।

ক্যালসিয়াম ও আইরন সমৃদ্ধ খাবার :

দুধ, দই, cheese, সার্ডিন ও স্যামন মাছ হাড় সহ, কিছু কিছু সবুজ শাকসবজি যেমনঃ কচু শাক, কলমী শাক, পালং শাক ইত্যাদি।

মাংস, পোল্ট্রি, মাছ, ড্রায়েড beans এন্ড peas, Iron ফর্টিফায়েড cereal,

শুষ্ক ফল ও শস্যদানা :

সকল প্রকারের বাদাম যেমনঃ চীনাবাদাম, almond, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, Walnut বা আখরোট ইত্যাদি। মিষ্টি আলু, শুকনা বীজ যেমন- কুমড়া, সীম, তিল ইত্যাদি।

Dried ফ্রুটস যেমনঃ খেঁজুর, কিসমিস,

ডাবের পানি, আখের রস, তরমুজের রস গর্ভবতী মায়েদের প্রাতঃকালীন অসুস্থ্যতা দূর করে। মিনারেলস- এ পরিপূর্ণ ডাবের পানি বা তরমুজের রস সকালে বা দুপুরের দিকে খালি পেটে খাওয়া ভালো। খুব ভরা পেটে না খাওয়াই ভালো।

প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে জল খেতে হবে। দুই লিটারের কম হলে হবে না।

মাছের তেল বিশেষ করে কড লিভার অয়েল খুবই উপকারী। এতে ওমেগা-৩ fatty অ্যাসিড বিদ্যমান। সামুদ্রিক মাছ সবসময়ের জন্য ভালো(Omega-৩বিদ্যমান থাকে ) শুধু যেসব মাছ ক্ষতিকর মার্কারি উপাদান বহন করে সেগুলো খাওয়া যাবে না।

সবসময় হাসিখুশি থাকুন। গান শুনুন। ভালো ভালো বই পড়ুন। ব্রেইন খাটিয়ে কিছু করুন। সুস্থ্যসবল মা-ই পারে সুস্থ্য বাচ্চা জন্ম দিতে। আর সুস্থ্যসবল বাচ্চাই হোক আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।