ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় পানের উপকারিতা।
ইলেক্ট্রোলাইট খনিজ উপাদানের সমষ্টি। আমরা প্রতিদিন যে খাবার ও পানীয় গ্রহণ করি তার থেকেই শরীর ইলেক্ট্রোলাইটের যোগান পায়। শরীরের দৈনন্দিন কাজ করতে ব্যবহার হয় ইলেক্ট্রোলাইট।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শরীরের পানি ও অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করা, পেশি, স্নায়ু, হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের কার্যক্রম বজায় রাখা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোনো কোষের ক্ষয়পূরণ করতে সাহায্য করা।
কার্যকরভাবে এবং সঠিকভাবে পানিশূন্যতা দূর করার জন্য ইলেক্ট্রোলাইটের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ আপনি যখন ব্যয়াম বা অনেক শারীরিক পরিশ্রমের পর যখন পানি বা তরল খাচ্ছেন তখন পানিশূন্যতা দূর করার পাশাপাশি আপনার শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন ও খনিজ পাচ্ছে কিনা তা খেয়াল রাখা প্রয়োজন। পানির মধ্যে যদি খনিজ উপাদান থাকে তখন তাকে ইলেক্ট্রোলাইট বলা হয়।
শরীরে শক্তি যোগাতে ইলেক্ট্রোলাইট যুক্ত পানীয় খুব প্রয়োজন। প্রতিদিন আমাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং ঘামের কারণে দেহ থেকে এই উপাদান বের হয়। আমাদের শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে হলে নির্দিষ্ট মাত্রার ইলেক্ট্রোলাইট আমাদের শরীরে থাকতে হবে।
ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় পানের উপকারিতা
ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় পানের উপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলো-
শক্তি যোগায়:
শরীরচর্চার সময় আমাদের শরীর থেকে ঘামের সাথে যে পানি বের হয়ে যায় তা পূরণ করতে হলে আমাদের বাড়তি তরল পান করতে হয়। আমাদের শরীরের স্বাভাবিক পানির মাত্রা কমে গেলেই শক্তি কমতে থাকে।
ঘামের সাথে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ইলেক্ট্রোলাইট বের হয়। তাই আমাদের শরীরচর্চার সময় ইলেক্ট্রোলাইট মিশ্রিত পানি পান করলে শরীরের ক্ষয় পূরণ হবে এবং শরীর অবসাদগ্রস্ত হবে না। শরীরের সাভাবিক কার্যক্রম সক্রিয় থাকবে।
হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়:
গ্রীষ্মের গরমে বাইরে চলাফেরা করার সময় রোদে ত্বক পুড়ে যাওয়া থেকে হিট স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। ত্বক ঘামের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখে। তবে এই অতিরিক্ত গরমের জন্য শরীরের এই প্রক্রিয়া নষ্ট হতে পারে। আর তখনই আমাদের বিভিন্ন ঝুঁকির সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ সময় ইলেক্ট্রোলাইট পানি পানের মাধ্যমে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং ঝুঁকি এড়ানো যায়।
রোগ নিরাময়ে সহায়ক:
ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদি সমস্যার জন্য আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণ পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ক্ষয় হয়। তাই এসময় আমাদের প্রচুর পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এতে আমাদের শরীরের ক্ষয় পূরণ হয়ে থাকে। অন্যান্য তরল খাবারের পাশাপাশি ইলেক্ট্রোলাইট যুক্ত পানি পান করলে আমাদের শরীরের খুব উপকার হয়ে থাকে। এটি আমাদের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।
স্নায়বিক কার্যক্রমে ভূমিকা:
শরীরের আর্দ্রতা কমলেই মস্তিষ্কের ক্ষমতা, মনযোগ ইত্যাদি দুর্বল হয়ে পড়ে। ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়তে সোডিয়াম ও পটাসিয়াম থাকে। সোডিয়াম স্নায়ুকোষে বৈদ্যুতিক শক্তি সৃষ্টি করেতে সাহায্য করে যা বিভিন্ন স্নায়ুর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে।
পটাসিয়াম স্নায়ুকোষকে নিউট্রালাইজ করে বা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে এবং সেখানে আবার বৈদ্যুতিক শক্তি সৃষ্টি হতে পারে।