পাটশাক রক্তশূন্যতা দূর করে, কোষ্ঠকাঠিন্যতা কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পাটগাছের গাছের কচি পাতা শাক হিসাবে খাওয়া হয়। এই শাকটি খুবই অল্প দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এর স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য। এই শাকের গুণ ও উপকারিতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।
পাটশাক ভাজি কিংবা শুক্ত হিসাবে খাওয়া হয় অথবা ডালে দিয়েও খাওয়া যায়। পাটশাক দুই রকমের হয় তেতো পাটশাক আর মিষ্টি পাটশাক।
পাটশাকে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন “সি”, “ই”, ‘কে” রয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ক্যারোটিন এবং খাদ্য আঁশ বা ফাইবার।
পাটশাকের উপকারিতা
পাটশাকের উপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলো –
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
পাট শাকের ভিটামিন “এ”, “ই” এবং “সি” শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন “সি” মুখের ঘা দূর করতে সাহায্য করে।
তাছাড়া ভিটামিন “সি” রক্তের শ্বেত কনিকা বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিন “এ” চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
আয়রণের ভাল উৎস:
এই শাকে প্রচুর পরিমান আয়রন থাকে যা রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে রক্তশূন্যতা দূর হয়। যাদের রক্ত স্বল্পতার সমস্যা আছে তারা পাটশাক খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর হয়:
পাটশাক ফাইবারের দুর্দান্ত উৎস। উচ্চ মাত্রায় ফাইবার গ্রহণ করলে আমাদের হজম স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। পাটশাকে প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করতে পারে।
নিদ্রাহীনতা দূর করে:
পাটশাকে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। ম্যাগনেশিয়াম শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন করে যা স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখে এবং নিদ্রাহীনতা দূর করে। তাই ভালো ঘুমের জন্য পাট শাক খেতে পারেন।
হাড়ের বৃদ্ধি সাধন করে:
পাটশাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
তাছাড়া এতে থাকা আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান হাড় গঠন এবং হাড়ভঙ্গুরতা রোধ করে।
উচ্চ রক্তচাপ দূর করে:
পাটশাকে থাকা উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম রক্তসঞ্চালন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দূর হয়।
এছাড়া পাটশাক রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাক এবং ষ্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
বাতের ব্যথা দূর করে:
পাটশাকে ভিটামিন “ই” থাকে। ভিটামিন “ই” গেঁটেবাত, আর্থরাইটস এবং প্রদাহ জনিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
তাই বাতের ব্যথা দূর করতে পাটশাক খেতে পারেন।
মুখের রুচি বৃদ্ধিতে:
মুখের রুচি বৃদ্ধিতেও পাটশাক খুবই উপকারী। সর্দি জ্বর থেকে উঠেছেন? মুখে রুচি নাই? তাহলে সহজলভ্য এই শাকটি খেতে পারেন। এটি মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
সতর্কতা
আপনি যদি জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হন বা অন্য কোনো কারণে রেগুলার কোনো মেডিকেল কোর্স-এর মধ্য দিয়ে যান তাহলে অবশ্যই খাওয়ার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
সূত্র: NDTV, Healthbenefitstimes, প্রথমআলো