শিশুর কোষ্টকাঠিন্যতা দূর করতে কি করবেন।

অনেকে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েন। এতে শিশুরও খুব অসুবিধা হয়। সাধারণত তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য অনেক কারণে হতে পারে, যেমন খাদ্যাভাসের পরিবর্তন, আঁশ জাতীয় খাবার কম খাওয়া, পানি কম খাওয়া, ফর্মুলা দুধ বা কোনও সাময়িক অসুস্থতা।

কোনো শিশু যদি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ করে ও মল যদি খুব শক্ত হয়ে মলদ্বারে ব্যথা সৃষ্টি করে থাকে তবে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়।

কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা যায়। সেগুলো নিচে দেওয়া হলো-

ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া:

শিশুদের খাদ্যতালিকায় ফাইবার জাতীয় খাবার রাখুন। ফাইবার হলো খাবারের সেই অংশ, যা পরিপাক হয়ে অবশিষ্ট হিসেবে জমা হয়ে মল তৈরি করে।

খাদ্যের আঁশ অংশটুকু হজম না হওয়ার কারণে এগুলো পরিপাকতন্ত্রের বেশ কিছু জলীয় অংশ শোষণ করে ধরে রাখে এবং এই জলীয় অংশসহ এগুলো মলের সাথে বের হয়ে আসে। এতে মল নরম হয়।

বেশি পরিমানে পানি পান:

কোষ্ঠকাঠিন্যতার সবথেকে সাধারণ সমস্যা হলো পানি কম খাওয়া। প্রতিদিন আমাদের অন্ত্রের গতিবিধির ঠিক রাখার পর্যাপ্ত পানি পান করা প্রয়োজন।

যদি শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করে তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে অন্যান্য তরল খাবার খাওয়াতে হবে। এতে করে অন্ত্রের গতিবিধি ঠিক থাকার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর হবে।

শিশুর মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলা:

শিশুকে মলত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। অনেক বাচ্চাই মলত্যাগ করার সময় একটু প্রাইভেসি পছন্দ করে।

টয়লেট ব্যবহার করতে শেখেনি এমন বাচ্চাকে ঘরের এক কর্নারে পটিতে বসিয়ে দিন যাতে সে প্রাইভেসি ফিল করে।

ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলা:

অনেক শিশুরই ফাস্ট ফুড এবং মাংস জাতীয় খাবার খুবই প্রিয়। কোষ্ঠকাঠিন্য রোধের জন্য এজাতীয় খাবার কম দেয়া উচিত। এ বিষয়ে মা বাবাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।

শাক-সবজি খাওয়া:

শাক-সবজি মানেই ফাইবার এটা আর আলাদা করে বলার দরকার হয় না। বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি রয়েছে যেগুলো নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভবনা কম যাবে।

যেমন – মিষ্টি আলু, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মটর শুঁটি, ক্যাপসিকাম, লাউ, গাজর, ব্রকলি, কলমি শাক, লাল শাক, শিম, ডাটা শাক এবং শসা, ইত্যাদি খাওয়ার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্যতা থেকে দূরে রাখা যায়।

দুধের উপর নির্ভশীলতা কমিয়ে আনা:

অনেক শিশুই দুধ খেতে পছন্দ করে। দুধ খাওয়ার কারনে শিশু অন্য কোন খাবার খেতে চায় না।

ফলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। এজন্য শিশুকে পরিমিত পরিমাণ দুধের সাথে ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়াতে উৎসাহিত করতে হবে।

শারীরিক কার্যক্রম:

শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে প্রতিদিন খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত। হাত পা নাড়াচাড়া করে খেলছে কিনা সেদিকে নজর রাখুন।

শিশু সারাদিন যদি শুয়ে বসে কাটায় তাহলে তার নড়াচড়া কম হবে। সারাদিনে কমপক্ষে ১ ঘন্টা হলেও শিশুর শারীরিক কার্যক্রম না হলে অন্ত্রে নড়াচড়াও স্বাভাবিকভাবে হবে না।

স্বাভাবিক কোষ্ঠকাঠিন্যতাই এই প্রাকৃতিক উপকরণগুলো চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।