শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করবে যেসব খাবার।

শিশুর মস্তিষ্ক গঠনের জন্য সঠিক স্বাস্থ্যকর খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে থাকে। তাই শিশুর খাবারের প্রতি আমাদের অত্যন্ত যত্নবান হতে হবে।

শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সাহায্য করবে যেসব খাবার

চলুন জেনে নেওয়া যাক, শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য যেসব খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি-

ডিম:

প্রতিদিন শিশুদের একটি করে ডিম খাওয়ালে মেধা বিকাশে সহায়তা করবে। ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলিন নামক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য কোলিন প্রয়োজনীয়।

চর্বিযুক্ত মাছ:

সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। চর্বিযুক্ত মাছে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকায় শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

মস্তিষ্কের ৬০% শুধুমাত্র ওমেগা 3 চর্বি দ্বারা গঠিত এবং ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু কোষের উৎপাদনের জন্যও প্রয়োজনীয়। ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড নিউরন নামক মস্তিষ্কের কোষের গঠন উন্নত করতে পারে।

ওটস:

ওটস ও ওটমিল শক্তির জন্য একটি চমৎকার উৎস এবং মস্তিষ্কের জন্য জ্বালানী হিসেবে কাজ করে।

এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় বাচ্চাদের সন্তুষ্ট রাখে এবং তাদের জাঙ্ক ফুডে আসক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখে।

এছাড়া এগুলোতে ভিটামিন “ই”, “বি” কমপ্লেক্স এবং জিঙ্কও থাকে, যা বাচ্চাদের মস্তিষ্ককে তাদের সর্বোত্তমভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। বাড়তি স্বাদের জন্য আপেল, কলা, ব্লুবেরি এমনকি বাদামের মতো যেকোনো ফল যোগ করতে পারেন এর সঙ্গে।

সবুজ শাক:

ফোলেট এবং ভিটামিনে পরিপূর্ণ, পালং শাক, ব্রোকলি, সবুজ শাক ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। এছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য উপাদান যা শিশুর মস্তিষ্কের নতুন কোষ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

রঙিন সবজি:

রঙিন সবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে তা শিশুর মস্তিষ্কের কোষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই শিশুকে টমেটো, মিষ্টি আলু, কুমড়া, গাজর বা পালং শাকজাতীয় সবজি নিয়মিত খাওয়াতে পারেন।

ফল:

শিশুদের বেশি বেশি করে ফল খাওয়াতে হবে। যেমন আপেল, বড়ই, পেয়ারা, কমলালেবু, টমেটো এবং স্ট্রবেরি। এসব ফল উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ। ভিটামিন “সি” মস্তিষ্কের কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে থাকে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নতি করে।

বাদাম:

বাদামে স্বাস্থ্যকর চর্বি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন “ই” রয়েছে, যা মস্তিষ্ক এর জন্যই খুব উপকারী। বিশেষ করে আখরোট, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা আরও উন্নত করতে সহায়তা করে।

পরীক্ষায় দেখা গেছে, বাদামে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

দুগ্ধজাত খাবার:

দুধ, দই ও পনির জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ভিটামিন “বি” থাকার কারণে তা মস্তিষ্কের টিস্যু, নিউরোট্রান্সমিটার এবং এনজাইমের বৃদ্ধির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর এসব খাবারে ক্যালসিয়ামও অনেক বেশি থাকায় শিশুদের শক্তিশালী দাঁত ও হাড়ের বিকাশের সহায়তা করে।

তাই শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ান। আর তারা সরাসরি দুধ খেতে না চাইলে দই, পুডিং বা প্যানকেক তৈরির সময় পানির পরিবর্তে দুধ ব্যবহার করতে পারেন।