শিশুদের জন্য সফেদা: দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করে।

একটু ভাবুন তো, প্রকৃতির দেওয়া ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজের মতো সাধারণ শর্করা কিন্তু কোনো এলার্জিক প্রতিক্রিয়া নেই, দারুণ মিষ্টি ও স্বাদ ফলটির। ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় এবং সকলেই উপভোগ করে। ফল হলুদ বা বাদামী রঙের, নরম, মিষ্টি, এবং একটি দানাদার গঠন আছে।

সফেদা বা Chikoo বা sapota-এর কথা বলছি যা আপনার শিশুকে ছয় মাসের পর থেকে ডায়েট রাখুন এবং সেও খুব পছন্দ করবে। ভাবা যায় প্রকৃতির দেয়া ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজের মতো সাধারণ শর্করা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী পুষ্টির যথেষ্ট পরিমাণ এতে বিদ্যমান।

বাংলাদেশ ও পূর্ব ভারতে এর নাম “sobeda/sofeda” (সবেদা বা সফেদা)। সফেদার বৈজ্ঞানিক নাম Manilkara zapota. হন্ডুরাস, ব্রাজিলে বলা হয় ‘sapoti’, ফিলিপাইনে এর নাম ‘chico’ ভারতে এর নাম ‘চিকু’ বা ‘চিক্কু’।

সফেদা গ্রীষ্মকালীন ফল কিন্তু এখন ছোটো বড়ো বিভিন্ন প্রজাতির সফেদা কম বেশি সারা বছর ধরে পাওয়া যায়। সফেদায় আছে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

শিশুদের জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে সফেদা উপকারী :

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামী দিনের দেশ তথা বিশ্বকে পরিচালনাকারী-শিশুদের খাবারের প্রতি তাই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া জরুরী।

শিশুর হজম শক্তি বৃদ্ধি করে:

ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজের পাশাপাশি এতে রয়েছে নির্দিষ্ট পরিমানে ফাইবার। তাই এটি শিশুর শক্তি ও পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শিশুর হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। পেট ঠিক তো জগৎ ঠিক।  শিশুর হজম শক্তি ঠিক মানে আপনি ঠিক মানে আপনি দুঃশ্চিন্তামুক্ত।

শারীরিক ও মানসিক বিকাশ :

সফেদার ভিটামিন এ,সি,এবং বি ৬ রয়েছে। ভিটামিন বি৬ মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে,হিমোগ্লোবিনের মাএা নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং, আপনার শিশুর জন্য ছোট এই ফল খুব স্বাস্থ্যকর।

কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করে:

সফেদা একটি উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। এতে থাকা ফাইবার হজম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এছাড়া সফেদা কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে:

ডায়েটারি ফাইবার ছাড়াও এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এ পরিপূর্ণ একটি ফল। এটি শিশুদের কোষের খাঁটি প্রতিরোধে সাহায্য করে।

চোখের জন্য ভালো:

সফেদায় ভিটামিন “এ” রয়েছে। ভিটামিন “এ” বাচ্চাদের চোঁখের স্বাস্থ্যের জন্য খুব দরকারী।  শিশুদের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে তাদের অবশ্যই সফেদা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে অর্থাৎ তাদের ডায়েটে সফেদা রাখতে হবে। সফেদা হাত দিয়ে ম্যাশ করে বা পিউরি বানিয়ে শিশুদের দিলে আরো ভালো হয়।

শক্তি সরবরাহকারী:

সফেদায় প্রাকৃতিক ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ রয়েছে। যা শিশুদের দেহে তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করতে পারে।

অনিদ্রা দূর করে:

এটি স্নায়ু শান্ত এবং মানসিক চাপ উপশম করার ক্ষমতা রয়েছে। এতে অনিদ্রা, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

সৌন্দর্য উপকারীতা:

নিয়মিত সফেদা খেলে শরীর থেকে টক্সিন অপসারণ করতে সহায়তা করে। সফেদায় রয়েছে ভিটামিন “এ” ও “সি” যা ত্বকে সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। সফেদা একটি ‘হ্যাপি’ খাবার হিসাবে পরিচিত।

এটি কোলাজেন উৎপাদন করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। সফেদা ফলের বীজের ঔষুধি গুণাগুণ অনেক। চামড়ার যে কোন ধরণের ইনফেকশন দূর করতে সফেদা বীজের তেল বেশ কার্যকর। সফেদা ফল ত্বকের অয়েন্টমেন্ট হিসেবে কাজ করে।

সতর্কতাঃ

যা কিছু বাচ্চাকে খাওয়াবেন পরিমাণমতো খাওয়াবেন। আপনার বাচ্চার শরীরের অবস্থা বুঝে খাওয়াবেন। সফেদা একটি পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু অতিরিক্ত খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারেঃ

অত্যাধিক খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। কাঁচা সফেদা খাওয়া হলে গলায় জ্বালা,শ্বাসে সমস্যা এমনকি আলসার ও হতে পারে।

সূত্রঃ

https://parenting.firstcry.com/articles/chikoo-sapota-for-babies-health-benefits-and-recipes/