আয়রন সমৃদ্ধ খাবার কোনগুলো।

আয়রন এমন একটি খনিজ যা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপ করে। আয়রন হিমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা সারা শরীরের জুড়ে অক্সিজেন বহন করে। আমাদের শরীরে প্রতিদিন ১৮ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন।

এছাড়া গর্ভবতী মহিলাদের শরীরে দৈনিক ২৭ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন হয়।

আয়রনের ঘাটতি রক্তাল্পতা সৃষ্টি করে এবং ক্লান্ত লাগার পাশাপাশি মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য প্রাণীজ আয়রন ও উদ্ভিজ আয়রন এই দুই ধরণের আয়রন গ্রহণ করা জরুরি।

আসুন জেনে নেয়া যাক কোন খাবারগুলো আয়রন সমৃদ্ধ-

পালং শাক:

পালং শাক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। প্রায় ১০০ গ্রাম কাঁচা পালং শাকের মধ্যে ২.৭ মিলিগ্রাম (১৫% DV) আয়রন থাকে। এছাড়া পালং শাক ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ। ভিটামিন “সি” আয়রন শোষণকে বৃদ্ধি করে।

কলিজা:

১০০ গ্রাম কলিজাতে ৬.৫ মিলিগ্রাম (৩৬%) আয়রন থাকে।

ছোলা জাতীয় খাদ্য:

শিম, মসুর ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি এবং সয়াবিন জাতীয় খাদ্য আয়রনের একটি দুর্দান্ত উৎস। এক কাপ ১৯৮ গ্রাম রান্না করা মসুর ডালে ৬.৬ মিলিগ্রাম, আধা কাপ ৮৬ গ্রাম কালো শিমে প্রায় ১.৮ গ্রাম (১০% DV) আয়রন সরবরাহ করে।

লাল মাংস:

১০০ গ্রাম লাল মাংসে ২.৭ মিলিগ্রাম (১৫% DV) আয়রন থাকে। মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, কপার, সেলেনিয়াম এবং বেশ কয়েকটি “বি” ভিটামিন রয়েছে। লাল মাংস হেম আয়রনের একমাত্র সহজলভ্য উৎস।

কুমড়োর বীজ:

২৮ গ্রাম কুমড়ো বীজে ২.৫ মিলিগ্রাম (১৪% DV) আয়রন থাকে। এছাড়াও কুমড়োর বীজে ভিটামিন “কে”, জিঙ্ক এবং ম্যাঙ্গানিজের একটি ভাল উৎস।

ব্রকলি:

১ কাপ ব্রকলিতে ১ মিলিগ্রাম (৬% DV) আয়রন রয়েছে। ব্রকলি ভিটামিন “সি” এর দুর্দান্ত উৎস, যা আপনার শরীরকে আয়রন শোষিত করতে সহায়তা করে।

ডার্ক চকোলেট:

ডার্ক চকোলেট অবিশ্বাস্যভাবে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। ২৮ গ্রাম ডার্ক চকোলেটে ৩.৪ (১৯% DV) মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।

মাছ:

৮৫ গ্রাম মাছে ১.৪ মিলিগ্রাম (৮% DV) আয়রন থাকে। এছাড়া মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

চিংড়ি:

প্রতি ১০০ গ্রাম চিংড়িতে ১৫% আয়রন আছে। নিয়মিত চিংড়ি মাছ খেলে আমাদের শরীরে আয়রনের অভাব দূর হয়ে যায়। আয়রনের অভাবে অনেক সময় আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে

তরমুজের বীজ:

তরমুজের বীজ রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে। এক মুঠো তরমুজের বীজে প্রায় ০.২৯ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। আয়রন হিমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা শরীরের মাধ্যমে অক্সিজেন বহন করে। তরমুজের বীজ আমাদের শরীরে আয়রনের পরিমাণকে স্বাভাবিক রাখে ফলে রক্তশূন্যতা দূর হয়।

ড্রাগন ফল:

ড্রাগন ফল আয়রনের একটি ভালো উৎস। এই ফলটিতে প্রতি ২২৭ গ্রামে ৮% আয়রন থাকে। আয়রন সারা শরীর জুড়ে অক্সিজেন পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তোকমা:

১৩ গ্রাম তোকমাতে আয়রন ১০% রয়েছে। লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনের জন্য আয়রন অত্যাবশ্যক। যারা মাংস বা দুগ্ধজাত খাবার খায় না এমন লোকেদের জন্য তোকমা আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে।

কিসমিস:

কিসমিস আয়রনের একটি ভাল উৎস। যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। দেড় কাপ কিসমিসে ১.৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এটি প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের প্রতিদিন যে পরিমাণ আয়রন দরকার হয় তার প্রায় ৭ শতাংশ এবং প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ১৬% পূরণ করে।