চুইঝাল মুখের রুচি বৃদ্ধি, কাশি, কফ ও যেকোনো ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
স্বাদে ঝাল কিন্তু খেতে খুবই সুস্বাদু। তাইতো বার বার খেতে মন চাই।
একটু চিন্তা করে বলুন তো কিসের কথা বলছি? হ্যা বন্ধুরা এটি বাংলাদেশের একটি অপরিচিত মশলা চুইঝাল বা চই। আমরা অনেকেই আছি যারা চুই ঝাল সম্পর্কে জানি না।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ করে খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইলে চুইঝাল বেশি পরিচিত।
রান্নায় চুইঝাল দিলে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায় আবার শরীরের জন্য উপকারী। বিভিন্ন ধরণের রান্নায় এটা ব্যবহার করা যায় যেমন মাছের ঝোল, মাংস, ডাল, পাতাকপি, ছোলা রান্নায় ইত্যাদি।
চুইঝাল গাছের কান্ড এর তুলনায় এর শিকড় বেশি সুস্বাদু।
এছাড়া পোলার্টিন, গ্লাইকোসাইডস, মিউসিলেজ, গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সিজামিন, পিপলাসটেরল রয়েছে। চুইঝালের কাণ্ড, শিকড়, পাতা, ফুল, ফল ইত্যাদি ভেষজগুণ সম্পন্ন। চুইঝালের শিকড়ে থাকে ১৩-১৫% পিপারিন।
চুইঝালের ঔষুধিগুণ বা উপকারিতা
নিচে চুইঝালের উপকারিতা আলোচনা করা হলো-
ব্যথা দূর করতে:
চুইঝালের সবথেকে বড় গুন হলো আমাদের শরীরের সব ধরনের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে।
সদ্য মায়েদের শরীরের ব্যথা, বাতের ব্যথা, কোমরে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা দূর করে শরীর সতেজ রাখতে সহায়তা করে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূরীকরণে:
খুবই সুস্বাদু একটি মসলা চুইঝাল। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান ও কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করতে সহায়তা করে চুইঝাল।
পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে ও খাবারের রুচি বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে:
চুইঝাল যেকোন রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করে এবং আলাদা একটা ফ্লেভার বা ঘ্রাণ যোগ করে। ফলে রান্না করা খাবারগুলো খুবই সুস্বাদু ও মুখরোচক হয়।
মানসিক প্রশান্তিতে:
স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা দূর করে মানসিক প্রশান্তি দিতে পারে চুইঝাল। এছাড়া ঘুমের ঔষুধ হিসেবে কাজ করে এবং শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে পারে।
কফ ও কাশিদূর করতে:
কাশি, কফ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও রক্তস্বল্পতা দূর করে। এক ইঞ্চি পরিমাণ চুই গাছের কচি লতার সাথে আদা পিষে খেলে সর্দি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
সতর্কতা
মরিচের বিকল্প হিসেবে চুইঝালের ব্যবহার করতে পারি। ভেষজ গুণ থাকার কারণে অনেক রোগব্যাধির আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
আপনি যদি জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হন বা অন্য কোনো কারণে রেগুলার কোনো মেডিকেল কোর্স-এর মধ্য দিয়ে যান তাহলে অবশ্যই খাওয়ার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।