শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করে যেসব খাবার।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার আমাদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের অক্সিজেন স্যাচুরেশন বাড়ায় এমন খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খুবই সহায়ক।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পাশাপাশি আয়রন এবং নাইট্রেট সমৃদ্ধ খাবার শরীর জুড়ে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করে। তাই বিটরুট, শাক, ডালিম, রসুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, স্প্রাউট, মাংস, বাদাম এবং বিভিন্ন বীজ খেতে হবে।
পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে যা আমাদের শরীরের সমস্ত কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের অধিকাংশ ভুগছে অক্সিজেন লেভেল কমে গিয়ে শ্বাসকষ্টের মত সমস্যায়। এর প্রধান কারণ এ ভাইরাসটি সরাসরি রোগীর ফুসফুসে সংক্রমিত হয়।
তাই এই পরিস্থিতিতে শরীরে যাতে কোন ভাবেই অক্সিজেনের ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করতে যে খাবারগুলি:
ব্রকলি:
ব্রকলি আয়রন সমৃদ্ধ এবং অসংখ্য ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। অন্যান্য সবজির মতো ব্রকলিতে প্রচুর অক্সিজেন রয়েছে। ব্রকলি দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো, তবে ব্রকলির রং সবুজ। ব্রকলি তরকারি হিসাবে খেতে পারেন।
সব থেকে ভালো হয় মসলা কম দিয়ে সেদ্ধ করে খাওয়া। শরীরের অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য ব্রকলি খুবই কার্যকরী।
গাজর:
বিটা ক্যারোটিন (ভিটামিন-‘এ’) এর আরেকটি চমৎকার উৎস গাজর।
গাজরে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল যা প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্য এবং টিস্যুতে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি গাজর সালাদ হিসাবে কাঁচা এবং রান্না করে খেতে পারেন।
লেবু:
অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এমন খাবার তালিকায় লেবুর অবস্থান শীর্ষে। এছাড়া এর ইলেকট্রোলাইটিক বৈশিষ্ট রয়েছে।
লেবু দ্রুত সর্দিকাশি, ফ্লু, অ্যাসিডিটি, বুক জ্বালা ইত্যাদির থেকে মুক্তি দেয়।
এছাড়া রক্তের প্রবাহে ক্রমাগত অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
মটরশুটি:
মটরশুঁটি, মসুর ডাল, শুকনো মটরশুটি এবং সয়াবিন শরীরকে অক্সিজেন প্রক্রিয়া করতে সহায়তা করে।
ফোলেট এবং আয়রনের আরেকটি বড় উৎস মটরশুঁটি, মসুর ডাল। মটরশুঁটি, মসুর ডাল, শুকনো মটরশুটি এবং সয়াবিন শরীরের অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করতে খুবই কার্যকরী।
ক্যাপসিকাম:
ক্যাপসিকামের PH মান ৮.৫। এটি পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। ক্যাপসিকামে থাকা উচ্চমাত্রায় ভিটামিন-‘এ’ স্ট্রেস সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকালের হাত থেকে দেহকে মুক্ত রাখে।
তাই বলা যায়, শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করতে ক্যাপসিকামের গুরুত্ব অপরিসীম।
বিটরুট:
বিটরুট ফাইবার, ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন “সি” এর একটি বড় উৎস।
আয়রন এবং ফোলেট সমৃদ্ধ হওয়ায় বীটরুট শরীরে নাইট্রেট তৈরি করে যা রক্তে অক্সিজেন শোষণে সহায়তা করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার:
আমরা সবাই জানি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার কোষকে ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে পারে এবং একাধিক রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
অ্যাভোকাডো, কলা, গাজর, রসুন এবং খেজুরের উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এসব ফল সবজির পিএইচ মান আট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজ:
তরমুজ বিটাকারোটিন, লাইকোপিন এবং ভিটামিন “সি” এর একটি খুব সমৃদ্ধ উৎস। তরমুজ ফলের PH মান ৯।
এতে অধিক পরিমাণে পানি এবং ফাইবার থাকার ফলে এটি ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে।
এই ফলে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন, বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন-“সি” থাকে যা শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও এনার্জির যোগান দেয় এবং শরীরকে সক্রিয় রাখে।
শস্যজাতীয় খাবার:
সাধারণত, শস্যজাতীয় খাবারে প্রোটিন, বিভিন্ন বি ভিটামিন এবং আয়রন থাকে যা রক্ত অক্সিজেনের মাত্রা উন্নত করে।
অনেক ভুট্টা, গোটা গম, ওট এবং চালের প্রতিদিনের প্রস্তাবিত পরিবেশনায় ১০০% আয়রন থাকে ভিটামিন বি দশ থেকে একশ শতাংশ থাকে।