দ্রুত শক্তি বা এনার্জি পাওয়া যায় কোন খাবারগুলি থেকে।

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যেভাবে মানুষের কাজের ক্ষেত্র বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততা। 

হাজারো ব্যস্ততার মধ্যে নিজেকে চাঙ্গা রাখা, এলার্জিতে পূর্ণ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

একটি কর্মময় স্বতঃস্ফূর্ত দিনের জন্য আমাদের এনার্জি লেভেল ঠিক রাখা খুবই দরকার। 

আমরা অনেকেই দিনের কোন একটা সময় কাজ করতে করতে খুব ক্লান্তি অনুভব করি।

এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো আমাদেরকে চাঙ্গা রাখতে, আমাদেরকে দিনভর এনার্জিটিক রাখতে সাহায্য করে। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের কাজের ফোকাস ও সফলতা বৃদ্ধি পায়।

নিচে এমন কয়েকটি খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হল যেগুলো স্বাস্থ্যকর এবং দিনভর চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে।

কলা:

আমাদের এনার্জি লেভেল কে বৃদ্ধি করার জন্য কলাকে বিবেচনা করা হয় সর্বোত্তম খাদ্য হিসেবে। কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন B6 এর চমৎকার উৎস হচ্ছে কলা 

এগুলো সবই আমাদের শরীরের এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করে।

মিষ্টি আলু:

আমরা যারা অতিরিক্ত এনার্জি খুঁজছি মিষ্টি আলু তাদের জন্য খুবই ভাল একটি উৎস।

আঁশযুক্ত মিষ্টি আলু এবং এর কার্বস আমাদের শরীর ধীর গতিতে হজম করে, যা আমাদেরকে অবিচ্ছিন্ন শক্তি সরবরাহ করে।

কফি:

আমরা যখন আমাদের এনার্জি লেভেল বৃদ্ধির চিন্তা করছি তখন কফি পান খুবই কার্যকরী।

এটি ক্যাফিন সমৃদ্ধ। এই যৌগটি আমাদের রক্ত প্রবাহ থেকে দ্রুত মস্তিষ্কে যেতে পারে এবং এপিনেফ্রিন হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এই হরমোন শরীর এবং মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে।

ডিম:

ডিম শুধু আমাদের পেট ভরিয়ে রাখে না, আমাদের শক্তিও সরবরাহ করে। ডিমে যে প্রোটিন থাকে তা আমাদের শক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

ডিমের প্রোটিন হজম হওয়ার পরে রক্তে শর্করার এবং ইনসুলিনে স্পাইক তৈরি করে না। এজন্য আমাদের এনার্জি বৃদ্ধিতে ডিম খুবই কার্যকরী।

আপেল:

আপেল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফল এবং এটি কার্বস ও ফাইবারের চমৎকার উৎস। প্রাকৃতিক চিনি এবং উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ আপেল সর্বদা এনার্জি সরবরাহ করতে পারে।

বাদাম:

বাদাম এনার্জির অন্যতম উৎস। বাদাম হলো উচ্চ ক্যালোরি, প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, কার্বহাইড্রেট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ।

এই পুষ্টিউপাদান গুলো আমাদের শরীরে ধীরে ধীরে শক্তি বা এনার্জি সরবরাহ করতে পারে।

বাদামে ওমেগা-3 এবং ওমেগা-6 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের শরীরের শক্তি উৎপাদন এবং ক্লান্তি হ্রাস করতে সহায়তা করে।

মুসুর ডাল:

খুবই পুষ্টিকর এবং প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস মসুর ডাল। যা শক্তি বা এনার্জি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

এক কাপ রান্না করা মসুর ডাল থেকে ৪০ গ্রাম পর্যন্ত কার্বহাইড্রেট এবং প্রায় ১৬ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়।

এছাড়া মসুর ডালে থাকা ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ এবং আয়রন আমাদের এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করতে পারে।

খেঁজুর:

খেঁজুরে প্রাকৃতিক শর্করা গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ খুব বেশি পরিমানে থাকে। খেজুরে উপস্থিত এই উচ্চ পরিমানে চিনি আমাদের শরীরে শক্তি সরবরাহ করে।

খেজুর অলসবোধ দূর করে, অবসন্ন ও জড়তাগ্রস্ত কাটিয়ে দ্রুত এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করে।

কিছুক্ষণ ব্যায়াম করার পরে আমরা ক্লান্ত অনুভব করি, খেজুর আমাদের হারানো শক্তি অনতিবিলম্বে পুনরুদ্ধার করতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

মটরশুটি:

মটরশুটি পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক শক্তির একটি দুর্দান্ত উৎস।

এটি কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ। মটরশুটিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ এবং ম্যাগনেসিয়াম আমাদের এনার্জি বা শক্তি বৃদ্ধি করে।

কমলালেবু

কমলা উচ্চ ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ। কমলাতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যৌগ থাকে যা আমাদের স্ট্রেস থেকে সুরক্ষা করতে পারে।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ১৩ জন মহিলা যারা ১ আউন্স কমলার রস খেয়েছে তাদের ক্লান্তি হ্রাস পেয়েছে এবং শারীরিক পারফরম্যান্সও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসব খাবার এনার্জি লেভেল বাড়ানোর পাশাপাশি অনেক স্বাস্থ্য সুবিধাও রয়েছে।

তাই এসব খাবারগুলো কম বেশি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান সুস্থ্য থাকুন এটাই কাম্য।