যেসব ফল ও সবজিতে কমলালেবুর তুলনায় বেশি ভিটামিন “সি” আছে।

ভিটামিন “সি” বলতে আমরা বুঝি সাইট্রাস ফল অর্থাৎ টক জাতীয় ফলগুলোকে। আর টক জাতীয় ফলের মধ্যে আমরা কমলালেবুকে বেশি গুরুত্বদি।

কিন্তু আমরা জানি না যে আমাদের হাতের নাগালে এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলোতে কমলার থেকে পরিমানে বেশি ভিটামিন “সি” রয়েছে।

যেমন- লেবু, আমলকি, পেঁয়ারা, আনারস ইত্যাদি। এছাড়া সব ধরণের শাক-সবজিতেই ভিটামিন “সি” থাকে।

খুবই মজার বিষয় হলো মানব দেহ ভিটামিন “সি” উৎপাদন করতে বা সঞ্চয় করতে পারে না। তাই এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়মিত আমাদের গ্রহণ করতে হয়।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৬৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন “সি” এর প্রয়োজন হয়।

ভিটামিন “সি” একটি দ্রবণীয় ভিটামিন যা ফল এবং শাকসবজি থেকে পাওয়া যায়।

এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হওয়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ভিটামিন “সি” – কোলাজেন সংশ্লেষণ, সংযোজক টিস্যু, হাড়, দাঁত এবং ছোট রক্তনালীগুলির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

এটি আমাদের দেহের ক্ষতিগ্রস্থ ত্বকের কোষগুলি মেরামত করতে সহায়তা করে।

একটি মাঝারি আকারের কমলাতে ৮৮% (DV) ভিটামিন “সি” রয়েছে, যা অন্যান্য অনেক সাধারণ ফল এবং সবজির তুলনায় আসলেই কম।

নিচে এমন কিছু ফল ও সবজির নাম দেওয়া হলো যেগুলোতে কমলালেবুর তুলনায় ভিটামিন “সি” বেশি।

পেয়ারা:

পেয়ারা থেকে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন “সি” পাওয়া যায়। একটি পেয়ারাতে একটি কমলালেবুর তুলনায় দুই থেকে পাঁচগুন বেশি ভিটামিন “সি” বিদ্যমান।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন “সি”- এর জুড়ি মেলা ভার। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে সহজে রোগবালাই শরীরের ধারে ঘেঁষতে পারে না।

তাই আমরা কমলার পরিবর্তে সহজলভ্য ও বারমাসী এই ফলটি আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারি।

আনারস:

আনারস একটি পুষ্টির পাওয়ার হাউস – আনারসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “সি” রয়েছে। ৭৯% (DV) ভিটামিন “সি” ছাড়াও আনারসে ব্রোমেলাইন রয়েছে।

এটি একটি হজম এনজাইম। ব্রোমেলাইন প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি হিসাবেও কাজ করে যা আপনাকে কঠোর পরিশ্রমের পরে দ্রুত শক্তি সঞ্চার করতে সহায়তা করতে পারে।

স্ট্রবেরি:

স্ট্রবেরীতে আছে প্রচুর ভিটামিন “সি” যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন রকম সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

মাত্র এক কাপ স্ট্রবেরী প্রতিদিনের ভিটামিন “সি” এর চাহিদার ১০০% পূরণ করতে সক্ষম। স্ট্রবেরিতে ভিটামিন “সি” এর পরিমাণ কমলার চেয়ে কিছুটা বেশি।

আম:

আমে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন “সি” বেশি রয়েছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

পাঁকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন “সি” এর পরিমাণ বেশি।

আমলকি:

আমলকিতে ভিটামিন “সি” এর পরিমাণ কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি। ভিটামিন “সি” তে পরিপূর্ণ আমলকী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

সর্দি-কাশির সারাতে ও হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন এক চামচ আমলকীর রস মধু দিয়ে খেলে সর্দি-কাশির প্রকোপ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

পেঁপে:

একটি কমলার চেয়ে পেঁপেতে কিছুটা কম পরিমাণে ভিটামিন “সি” রয়েছে।

যেহেতু কমলা সারা বছর পাওয়া যায় না তাই আমরা প্রতিদিনের ভিটামিন “সি” এর চাহিদা পূরণ করতে এই সহজলভ্য ফলটি আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারি।

ব্রোকলি:

ব্রকলি থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “সি” পেতে পারি। গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে, ভিটামিন “সি” বিভিন্ন অসুস্থ্যতা প্রতিরোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

আমরা সবসময় ভিটামিন “সি” বলতে কমলালেবু খুঁজি, তবে ব্রকলি থেকেও আমরা ভিটামিন “সি” পেতে পারি।

লাল এবং হলুদ ক্যাপসিকাম:

লাল এবং হলুদ ক্যাপসিকাম ভিটামিন “সি” দ্বারা পরিপূর্ণ।

একটি মাঝারি আকারের লাল ক্যাপসিকামে ১৬৯% ভিটামিন “সি” রয়েছে, যা কোলাজেন স্তরকে বাড়িয়ে তোলে এবং ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করতে পারে।

সূত্র: ndtv, হেলথলাইন