ছোটো বেলার নারকেল পাতার ঘড়িটা ভালো ছিল। না ছিল সময়ের চিন্তা, না ছিল নষ্ট হওয়ার চিন্তা।
হাজার চেষ্টা করেও যেখানে আর ফেরা যাই না, সেটা হলো আমাদের ছোট বেলা। প্রত্যেকের শৈশব যে কতটা আনন্দের, কতটা মধুর সেটা বয়স কালে পরে এসে মনে পড়লে গুরুত্ব অনুভব করতে পারি।
স্মৃতি মনে করে একটু পুরোনো দিনে ফিরে যাওয়া। ছবিও কথা বলে। ছবি দেখে সাথে সাথে একটা অনুভূতি, আবেগ তৈরি হয়।
পরিণত বয়সের ঘড়িটা সবসময় আমাদের দাবড়াতে থাকে। আমাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেয় না। সময় হয়েছে এখনই বেরোতে হবে। সময় মতো এটা ওটা সেটা।
সময় মতো পরিশ্রম না করলে তুমি পিছিয়ে যাবে। সেটা ঠিক আছে। কিন্তু আবার বর্তমান সময়ে এটাও অনেককে ভাবায়, এতো পরিশ্রম করে এতো জায়গা জমি, ধন-সম্পদ, টাকা, বাড়ি-গাড়ি দিয়ে কি হবে। এতো কিছু না হলেও তো বেঁচে থাকা যায়।
খুব বেশি খাবার খেয়ে বদহজম হলে ডাক্তার যেমন বলেন পরিমিত পরিমানে খাবেন তেমনি অতিরিক্ত অর্থ অনর্থের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।
ছোটবেলায় বাবামায়ের আদর স্নেহে বেড়ে ওঠা। খেলাধুলা করা। কোনো চাপ থাকে না। কি মিষ্টি মধুর মায়াময় জীবন। কিন্তু পরিণত বয়সে বা যুবক বয়সে, সংসারের চাপ, অফিসের কাজের চাপ, চিন্তা টেনশন সবকিছু মিলিয়ে মনে ছোটবেলাটা কত সুন্দরই না ছিল।
একসময় মনে হয় আবার যদি ফিরে যেতে পারতাম ওই সময়ে। ভাই-বোন খেলার সাথীরা মিলে আবার মিলিত হতে পারতাম।
ছোট বেলায় আমরা খেলার সাথীরা মিলে নারকেল পাতা দিয়ে ঘড়ি বানিয়ে পরতাম। আর এখন আসল ঘড়ি পরি। তখন নারকেল পাতার ঘড়ি পরে যে মজা পেতাম এখন আসল ঘড়ি পরে তেমনটা পাই না।
ঘড়ি বা আরো অন্যান্য কতকিছু বানিয়ে কতনা খেলাধুলা করেছি, কত আনন্দ যে করেছি। সত্যিই ছোটবেলা আর ফিরে পাওয়ার নই। তাইতো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছেন –
“সেই, সেই ছেলেবেলা
আনন্দে করেছি খেলা
প্রকৃতি গো, জননী গো,
কেবলি তোমারি কোলে।
কোথা যে গেলেম চলে।”