ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ কি কি?

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বেশ অস্বস্তিকর। ঘন ঘন প্রস্রাব মানে হলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় প্রস্রাব হওয়া। এমনটি হতে থাকলে আমাদের প্রতিদিনকার কাজে বিঘ্ন ঘটায় এবং রাতে ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে থাকে।

ঘন ঘন প্রস্রাব হলে শুরুতে অনেকেই না বুঝে এন্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেন যা হিতে বিপরীত হতে পারে।

অনেকের দিনে ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসে আবার অনেকের রাতে বেশি আসে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে দিন বা রাতে সমান আসে। দিনে ৪-৫ বার প্রস্রাবের চাপ আসা মোটেই অস্বাভাবিক নয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লাডার যদি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কাজ করা শুরু করে তাহলেই ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসে।

আর এরকমটা নানা কারণে হতে পারে যেমন: অ্যালকোহল সেবন, ক্যাফিন, ডায়াবেটিস, পেলভিক রিজিয়ানে কোন অসুবিধা, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রয়া থেকেও হতে পারে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণ কি:

বেশি বেশি পানি পান করার কারণে :

বেশি বেশি পানি পান করা ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রধান কারণ। দৈনিক নিয়মিত ২ লিটার থেকে ২.৫ লিটার পানি শরীরে প্রবেশ করা ও শরীর থেকে বের হওয়া হচ্ছে স্বাভাবিক। এর চেয়ে যদি বেশি হয়ে থাকে তাহলে সেটা অতিরিক্ত। পানি পানের গুরুত্ব রয়েছে তবে বেশি পানি পান করলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। বেশি পানি পান করলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।

বসবাস স্থান ঠান্ডা-শুষ্ক থাকলে :

শীতকাল বা ঠান্ডা-শুষ্ক পরিবেশে মানুষের শরীর ঘামে না, ঐ সময় অতিরিক্ত প্রস্রাব তৈরি করে কিডনি শরীরে পানি ও লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ভেজা আদ্র পরিবেশে প্রসাবের বেগ বেশি পায়। আবার অনেক সময় বর্ষাকালেও লক্ষ করা যায় ঘন ঘন প্রসাব পায়। আপনি যেখানে বসবাস করছেন সেই জায়গাটা যদি ঠান্ডা-শুষ্ক, ভেজা হয় তাহলে আপনার ঘন ঘন প্রসাব হবে।

বেশি বেশি দুঃশ্চিন্তা করার কারণে :

দুঃশ্চিন্তা প্রায় সকল রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষাকালীন সময়ে বা ইন্টারভিউ দেয়ার পূর্বে অনেক বেশি দুঃশ্চিন্তা হয়, যার ফলে ঘন ঘন প্রসাবের বেগ পায়। কোন কাজের ফল বা রেজাল্ট শোনার আগের মুহূর্তে অনেক দুঃশ্চিন্তা কাজ করে, এতে করে ঘন ঘন প্রসাব পায়।

ডায়াবেটিস রোগের কারণে :

ডায়াবেটিসের একটি অন্যতম লক্ষণ হলো ঘন ঘন প্রসাব হওয়া। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে এটি অত্যধিক ঘন এবং সান্দ্র হয়ে যায়, কোষগুলি এ জাতীয় ডোজ চিনির সংমিশ্রণ সহ্য করতে পারে না, এটি প্রস্রাবে প্রবেশ করে, যার সাথে এটি পরবর্তীতে নিষ্কাশিত হয়। যার ফলে ঘন ঘন প্রসাব পায়।

কিডনি সমস্যা থাকলে :

কিডনি অকেজো হবার অন্যতম লক্ষণ হল ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। কিডনির সমস্যা থাকলে স্বাভাবিকের থেকে প্রসাব বেশি হয়। কিডনি ভাল কাজ করছে না, তা বোঝা যায় প্রস্রাবের মাধ্যমে। প্রস্রাবের রং, ঘন ঘন প্রসাব এইসবেই বোঝা যায় কিডনির সমস্যা। কিডনির সমস্যা হলে ঘন ঘন প্রসাবের সাথে ফেনাযুক্ত প্রস্রাব হতে পারে।

এলকোহল, চা, কফি অতিরিক্ত পান করলে :

ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য দায়ী অতিরিক্ত এলকোহল, চা, কফি। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর চা, কফি, অ্যালকোহল পান করলে প্রসাবের বেগ আসে বা প্রসাব পায়।

রেফারেন্স: