ডায়াবেটিস রোগী ডিম খেতে পারবে?

হ্যাঁ, ডায়াবেটিস রোগীরা ডিম খেতে পারেন। তবে পরিমিত পরিমানে। প্রতি সপ্তাহে ৩ টা কুসুম ছাড়া।

বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের খাদ্য তালিকায় ডিম যোগ করেছেন। তারা বলছেন, প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে হার্টের রোগের ঝুঁকি কমে। সেই সঙ্গে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে।

ডিম একটি বহুমুখী খাবার এবং প্রোটিনের দুর্দান্ত উৎস। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন মনে করে ডিম ডায়াবেটিসযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি সেরা পছন্দ।

কারণ একটি বড় ডিমের মধ্যে প্রায় অর্ধেক গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে, তাই মনে করা হয় যে ডিম রক্তে শর্করাকে বৃদ্ধি করবে না।

যদিও ডিমে কোলেস্টেরল বেশি থাকে। একটি বড় ডিমের মধ্যে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে তবে এটি শরীরকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে না।

ডায়াবেটিস হলে রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা পরীক্ষা করা জরুরী। কোলেস্টেরল ঠিক মাত্রায় আছে কি না। রক্ত প্রবাহে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

ডিমের উপকারিতা

একটি সম্পূর্ণ ডিমের মধ্যে প্রায় ৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে। এছাড়া ডিম পটাসিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা স্নায়ু এবং পেশীগুলির স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে। পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা ভারসাম্য রাখতে সহায়তা করে।

ডিমে লুটেইন এবং কোলিনের মতো অনেক পুষ্টি থাকে। লুটেইন আপনাকে রোগ থেকে রক্ষা করে এবং কোলাইন মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে বলে মনে করা হয়। ডিমের কুসুমে বায়োটিন থাকে যা স্বাস্থ্যকর চুল, ত্বক এবং নখের পাশাপাশি ইনসুলিন উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মুরগির ডিম ওমেগা-3 এর পরিমাণ বেশি, যা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য উপকারী চর্বি। একটি বড় ডিমের মধ্যে প্রায় ৭৫ ক্যালোরি এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে – যা কেবল ১.৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট।

কোলেস্টেরল ও ডিম

বেশ কয়েক বছর আগে ডিমকে খারাপ বলে বিবেচনা করা হয়েছিল কারণ ডিমে কোলেস্টেরল বেশি। আপনার যদি ডায়াবেটিস হয় তবে ডিম অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।

বর্তমান সুপারিশগুলি পরামর্শ দেয় যে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতিদিন ২০০ মিলিগ্রাম এর বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ করা উচিত নয়।

একটি বড় ডিমের মধ্যে প্রায় ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। যেহেতু সমস্ত কোলেস্টেরল ডিমের কুসুমের মধ্যে থাকে তাই ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীদের সপ্তাহে তিনটি ডিমের বেশি খাওয়া উচিত নয়। যদি আপনি কেবল ডিমের সাদা অংশ খান তবে তিন তার বেশি খেতে পারেন।

যদি আপনার ডায়াবেটিস হয় তবে সিদ্ধ ডিম বেছে নেওয়া উচিত। প্রোটিন রক্তে শর্করাকে প্রভাবিত করে না বরং পেট ভরিয়ে রাখতে সহায়তা করবে। প্রোটিন কেবল হজমশক্তিকে ধীর করে না, গ্লুকোজ শোষণকেও ধীর করে দেয়।

ডিম নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। যেহেতু ডিমের কুসুমে কোলেষ্টেরল থাকে তাই সাদা অংশ কোন চিন্তা ভাবনা ছাড়াই প্রতিদিন খেতে পারেন।

রেফারেন্স:
এই সম্পর্কিত আরও পোস্ট পড়ুন: