কোন খাবার গুলো পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক, কোন খাবার গুলো পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে-
সেদ্ধ আলু:
আলুকে খুবই খারাপ একটি সবজি হিসাবে ধরা হলেও এটি খুব স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর। রান্না করা, খোসা ছাড়ানো আলু ভিটামিন “সি” এবং পটাসিয়াম সহ 11 টি ভিটামিন এবং খনিজ এর একটি ভালো উৎস।
আলুতে মাঝারি পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন থাকে। ১৪ জনের মধ্যে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা মাংস, শাকসবজি এবং আলু দিয়ে খাবার খায় তাদের কম ক্ষুধা লাগে।
কারণ আলুতে ইনহিবিটার 2 (inhibitor 2) নামে একটি প্রোটিন রয়েছে, যা ক্ষুধা দমন করতে পারে।
ডিম:
ডিম অবিশ্বাস্যভাবে স্বাস্থ্যকর। তাই ডিমকে পৃথিবীর অন্যতম স্বাস্থ্যকর খাবার বলা হয়। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস লুটেইন এবং জেক্সানথিন সহ বেশিরভাগ পুষ্টি উপাদান ডিমের কুসুমে থাকে।
ডিম উচ্চমানের প্রোটিনের একটি বড় উৎস। একটি বড় ডিমের মধ্যে নয়টি প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড সহ প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা সকালের নাস্তায় ডিম এবং টোস্ট খায় তারা কম ক্ষুধা অনুভব করে।
ডিমে থাকা প্রোটিন আমাদেরকে অনেক সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখতে সহায়তা করে। এটি কোনও ব্যক্তির সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণ এবং বার বার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করতে পারে।
ওটমিল:
ওটস, ওটমিল জনপ্রিয় ব্রেকফাস্ট। ওটমিল এর ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং ফাইবারের একটি দুর্দান্ত উৎস, বিশেষত বিটা গ্লুকান নামক দ্রবণীয় ফাইবার।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, অংশগ্রহণকারীরা ওটমিল খাওয়ার পরে বেশি পরিপূর্ণ এবং কম ক্ষুধার্ত বোধ করেন।
ওটসে বিটা গ্লুকান দ্রবণীয় ফাইবার আপনার পেট ভরিয়ে রাখতে সহায়তা করে।
মাছ:
মাছ উচ্চমানের প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং এতে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। ২০০৮ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
স্যুপ:
সাধারণত তরল খাবার বেশি সময় পেটে থাকে না। তবে স্যুপ কিছুটা আলাদা। গবেষণায় দেখা গেছে যে স্যুপ অন্যান্য ভারী খাবারের চেয়ে বেশি সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখতে পারে।
স্যুপ খেলে শরীরের ভিতরে প্রোটিনের পরিমাণ খুব বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট এবং উপকারি ফ্যাটের মাত্রাও বাড়তে শুরু করে। ফলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে।
মাংস:
যেসব খাবার গুলো পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে তার মধ্যে অন্যতম হল মাংস। মাংসে থাকা প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার খান:
প্রচুর পরিমাণে ফাইবারযুক্ত খাবার লাল আটার রুটি, শাক-সবজি, শসা ইত্যাদি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার পূর্ণতা বোধ করতে সহায়তা করতে পারে।
দানা জাতীয় খাবার:
মটরশুটি, মসুর, শিমের বীজ জাতীয় খাবার খুবই পুষ্টিকর পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। দানা জাতীয় খাবার অল্প খেলেই পেট ভরে যায় এবং অনেক সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে পাস্তা এবং রুটিযুক্ত খাবার খাওয়ার তুলনায় দানা জাতীয় খাবার যেমন ডাল খেলে ৩১% বেশি পরিপূর্ণ অনুভব করেছে।
পপকর্ন:
একটি গবেষণা পপকর্ন এবং আলুর চিপস খাওয়ার পরে কত সময় ধরে পেট ভরে থাকে তার পরীক্ষা করে।
দেখা গেছে পপকর্ন বেশি কার্যকর ছিল। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হওয়ার কারণে অল্পতে পেট ভরে যায় এবং অনেকক্ষণ খুদা লাগে না।
ফলে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
বাদাম:
বাদাম স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবারে পরিপূর্ণ তাই এটি স্বাস্থ্যকর। অন্যান্য খাবারের তুলনায় এটি অনেক সময় ধরে পেট ভরিয়ে রাখতে পারে ফলে ক্ষুধা কম লাগে এবং বেশি খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে।
এছাড়াও বাদামে প্রোটিন এবং মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ক্যালরি বার্ন বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যাদের বার বার খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা এই খাবার খেতে পারেন। উপরের খাবারগুলি অনেক সময় ধরে পেট পূর্ন রাখার পাশাপাশি পেটের স্বাস্থ্যও ভালো রাখতে সাহায্য করবে।