কি কি কারণে শরীরে চুলকানি হয়?

বিভিন্ন কারণে শরীরে চুলকানির সমস্যা হতে পারে। সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। চুলকানি খুব প্রচলিত একটা রোগ। বেশিরভাগ ত্বকের সমস্যার কারণেই চুলকানি হয়। যাদের ত্বক খুব শুস্ক, যখন ময়েশ্চার কমে যায়, তখন চুলকানির সমস্যা দেখা দেয়।

এ ছাড়া রক্তশূন্যতা, ডায়াবেটিস, হরমোন ও থাইরয়েডজনিত সমস্যা থাকলে শরীর চুলকাতে পারে। একই সঙ্গে সিস্টেমিক রোগ, যেমন- জন্ডিস, লিভার সমস্যা থেকেও শরীর চুলকাতে পারে।

চুলকানি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। খুব সহজের চেনা যেতে পারে চুলকানির লক্ষণ দেখলে। খুব সাধারণ কারণগুলি হল ফুসকুড়ি, আমবাত, ছত্রাক সংক্রমণ এবং কোন পোকার কামড়।

যাদের দেহের ত্বক শুষ্ক, তাদের চুলকানি বেশি হয়।

চুলকানি হওয়ার কারণগুলি কি কি?

চলুন জেনে নেওয়া যাক, চুলকানি হওয়ার কারণগুলি কি কি –

ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে :

ফাঙ্গাল ইনফেকশন হচ্ছে একটি সংক্রামক রোগ। আমাদের আবহাওয়ায় অনেক জীবাণু বসবাস করে, যা আমাদের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্য দিয়ে ত্বকে প্রবেশ করে। সাধারণত শরীরের একটি নির্দিষ্ট অঙ্গ প্রথমে আক্রান্ত হয়। এর তৎক্ষণিক চিকিৎসা না করা হলে ক্রমশ শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, তৈলাক্ত ত্বক, পানির সংস্পর্শে বেশিক্ষণ থাকা ইত্যাদি কারণে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়। এর কারণে ত্বকে চুলকানি হয়, ত্বক জ্বলে বা অস্বস্তি দেখা দেয়। ত্বকে ক্রমশ অস্বাভাবিক লাল বর্ণ ধারণ করতে থাকে।

অ্যালার্জির সমস্যার কারণে :

অ্যালার্জির সমস্যার কারণে ত্বকে চুলকানি হতে পারে। এগুলি এক্কিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বা পরাগের মতো পদার্থের সংস্পর্শে আসতে পারে। অ্যান্টিহিস্টামাইন গ্রহণ অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার লক্ষণগুলি পরিচালনা করতে সহায়তা করে। এই ওষুধগুলি ট্যাবলেট বা ক্রিম হিসাবে পাওয়া যায়।

কিডনির সমস্যার কারণে :

কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বের করে খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে না তখন ত্বক শুষ্ক ও ফেটে গিয়ে ত্বকে চুলকানি শুরু হয়। চুলকানির সাথে সাথে চুলকানোর স্থানটি লাল বর্ণ ধারণ করে।

স্ক্যাবিজের কারণে :

স্ক্যাবিজ হলো এক ধরনের চর্মরোগ, যা জীবাণু দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে। এর প্রধান লক্ষণ হলো শরীরে চুলকানি হয় ও গুটি গুটি লাল বর্ণের মতো ফুসকুড়ি ওঠে। শরীরের বেশিরভাগ জায়গায় যেমন কব্জি, আঙুলের ভেতর বা কোমরের আশপাশে হয়ে থাকে। রাতের বেলা এই রোগের তীব্রতা আরও বাড়ে। এই রোগ ছোঁয়াচে। তাই স্পর্শের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়, গামছা, বিছানার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করলে অন্যের শরীরে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুরা বিশেষ করে এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

অপরিস্কার বা নোংরা পানির কারণে :

চুলকানি হওয়ার অন্যতম কারণ হলো অপরিস্কার বা নোংরা পানি। অপরিস্কার বা নোংরা পানি দিয়ে গোছল করলে শরীরে হয়ে থাকে চুলকানির মতো রোগ। অপরিস্কার বা নোংরা পানি সাধারণ পুকুর, নালা, ডোবাতে হয়ে থাকে। আবার পানিতে যদি আর্সেনিক থাকে তাহলে ও চুলকানির সমস্যা হতে পারে।

লিভারে সমস্যা হলে :

একটি অসুস্থ লিভার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানির সৃষ্টি করে। যেমন যখন শরীরে জন্ডিস দেখা যায় আর সঙ্গে চুলকানি হয়, তখন বুঝবেন লিভারের সমস্যার কারণেই এটা হচ্ছে। এমনটা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

রেফারেন্স: