আয়ু বৃদ্ধি করার উপায়।

আমাদের দেশে মানুষের গড় আয়ু ৬৯ বছর। একটু নিয়ম মেনে চললে কিন্তু ৮০-৯০ বা ১০০ বছরের কাছাকাছি বাঁচা সম্ভব। মানুষের স্বাভাবিক আয়ু ১৫০ বছর হওয়া উচিত বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। কারণ, জন্মের পর থেকে প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে।

আসুন এবার জেনে নেওয়া, কী করলে আরও কিছু বছর বেশি বেঁচে থাকা সম্ভব-

পরিমিত ঘুম:

প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। কয়েক বছর আগে ইউনিভার্সিটি অব এথেন্স ও হার্ভার্ডের স্কুল অব পাবলিক হেলথের একদল গবেষক, দুপুরে সামান্য ঘুমান এমন ২৩ হাজার গ্রিক নাগরিকের ওপর দীর্ঘ ছয় বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখেছেন, তাঁদের কারও হার্টের রোগ, ক্যান্সার বা স্ট্রোক হয়নি। তাঁদের সিদ্ধান্ত দুপুরের সামান্য ঘুম আপনার জীবন রক্ষা করতে পারে, আয়ু বাড়াতে পারে।

স্বাস্থ্যকর খাবার খান:

স্বাস্থ্যকর খাবার মানে দামি খাবার খেতে হবে এমনটা নয়। আমাদের আশপাশে অনেক সহজলভ্য খাবার রয়েছে যা অনেক স্বাস্থ্যকর। চর্বিযুক্ত মাছ, শীমের বীজ, বাদাম, সবজি বা শাক ইত্যাদি বেশি বেশি করে খেতে হবে। যেকোনো ডাল, শস্যদানা, আলু ইত্যাদি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। এসব খাবারের প্রচুর পরিমাণে খনিজ ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আয়ু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এছাড়াও দিনে অন্তত পাঁচ রঙের পাঁচ রকমের ফল খাবেন পরিমিত মাত্রায়। যেমন পেয়ারা, পেঁপে, কলা, ডালিম, আমড়া ইত্যাদি।

ব্যায়াম:

নিয়মিত ব্যায়ামে বার্ধক্য-প্রক্রিয়ার গতি কমানো যায়। আমরা যদি প্রতিদিন ৩০ মিনিট, সপ্তাহে ৫ দিন শারীরিক অনুশীলন করি তবে তা আমাদের আয়ু বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা শারীরিক অনুশীলন করে তারা দীর্ঘ জীবন যাপন করে।

পরিশ্রমী হোন:

পরিশ্রমী হোন মানে অলসতা ছেড়ে দিন। সারা দিন শুয়ে বসে না কাটিয়ে নিজেকে কাজের মাধ্যমে বেস্ত রাখুন। এর অর্থ এই নয় যে প্রতিদিন ব্যায়ামাগারে গিয়ে এক ঘণ্টা ঘাম ঝরাতে হবে। এ কাজটি মজার সঙ্গেও করা যায়। হাঁটা বা দৌড়ানোর মতো কাজই যথেষ্ট। প্রতিদিনের কাজের মাঝেও এসব করা যায়। অফিসে যাওয়ার সময় বেশ কিছু পথ হেঁটে যান। আবার অফিসে লাঞ্চ বিরতির সময় আরেকটু হেঁটে আসুন।

দূষণ এড়িয়ে চলুন:

বর্তমান সময়ে বিশেষ করে বায়ু দূষণ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাড়ির ধোঁয়া থেকে দূরে বেঁচে চলুন। ধুলোবালিপূর্ণ পরিবেশে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। বায়ু দূষণে ক্রনিক রেসপাইরেটরি ডিজিস, ফুসফুস ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো রোগ হতে পারে। যেকোনো দূষণ এড়িয়ে চললে মৃত্যুঝুঁকি কমে আসবে। এবং আয়ু বাড়বে।

ওজন বাড়তে দেওয়া যাবে না:

উচ্চতার তুলনায় যদি ওজন বেড়ে যায়, তবে সুস্থ মানুষের চেয়ে ২৯ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সাময়িকীতে ২০১৩ সালে প্রকাশিত ১০০টিরও বেশি গবেষণা পর্যালোচনা করে গবেষকেরা এ তথ্য পেয়েছেন। ওজন বেড়ে গেলে হার্টের রোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসেরও আশঙ্কা বাড়ে। যা মৃত্যুঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ধূমপান বা মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন:

অ্যালকোহল বা ধূমপান করলে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়া, ক্যান্সার, যকৃতের রোগ, হার্টের রোগের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা মৃত্যুঝুঁকি বাড়ানোর অন্যতম কারণ হতে পারে। কাজেই আজই ধূমপান বা মদ্যপান বাদ দিন।