কম ঘুমালে শরীরের কি কি ক্ষতি হয়?

সঠিক ঘুমকে সকল রোগের ওষুধ হিসাবে মনে করা হয়। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো আবশ্যক।

কিন্তু বর্তমান সময়ে রাতে না ঘুমিয়ে থাকাটা একটি ট্রেন্ড হয়ে গেছে।

মানুষ রাতে ঠিকমতো ঘুমালে শরীর ও মন দুটাই বিশ্রাম নিতে পারে। এতে করে শারীরিক অনেক সমস্যার সমাধান হয়।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবন কঠিনতম হয়ে উঠেছে। বদলে যাচ্ছে কাজের সময়। কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেরই প্রায়ই রাত জাগতে হয়।

কাউকে আবার নাইট ডিউটি করতে হয় প্রায়ই। পরিস্থিতির কারণে রাত জাগতে বাধ্য হন অনেকেই।

মাঝেমধ্যে এক-দুই রাত জাগলে তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। কিন্তু রাতের পর রাত জাগলে নানা দিক থেকে বিপদ এসে হাজির হয়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কম ঘুমালে শরীরের কি ক্ষতি হয়:

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বৃদ্ধি করে:

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঠিক মত না ঘুমালে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে, তার প্রভাবে রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে।

আর এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত যদি ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে শরীরের বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে:

আমরা যখন ঘুমায় তখন আমাদের মস্তিষ্ক নিজেকে রিচার্জ করতে থাকে।

সেই সঙ্গে সারা দিন ধরে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা এবং তথ্য ব্রেনে স্টোর করার কাজটাও এই সময় করে থাকে।

তাই ঠিক মতো ঘুম না হলে প্রথমেই স্মৃতিশক্তির উপর প্রভাব পড়ে। এর কারণে মনোযোগ এবং বুদ্ধি কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে থাকে।

ঠাণ্ডা-সর্দি লাগার আশঙ্কা বেড়ে যায়:

ঘুম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এক রাত কম ঘুমালে ঠাণ্ডা-সর্দি লাগার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

কারণ আপনার রাত জাগার অভ্যাস নাই তাই হটাৎ করে একদিন রাত জাগলে ঠান্ডা-কাশি, সর্দি হতে পারে।

আপনি যেদিন রাত জাগেন সেদিন হয়তো কোন কারণে রাত জাগেন, তাই সেসময় শরীরের স্বাস্থ্যের কোন খেয়াল নেওয়া হয় না। এতে করে ঠাণ্ডা-সর্দি লাগে।

ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট হয়:

আপনি যদি নিয়মিত ঘুম পড়েন তাহলে আপনার শরীর নিয়মের ভিতর চলতে থাকে, হটাৎ একদিন না ঘুমালে শরীরে দেখা দেয় অনেক সমস্যা।

কম ঘুম হলে কর্টিজল নামক স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যেতে শুরু করে।

ফলে একদিকে যেমন মন-মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, সেই সঙ্গে ত্বকের অন্দরে কোলাজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে যার কারণে সৌন্দর্যও নষ্ট হতে থাকে।

ওজন বাড়ে ও আয়ু কমে:

৬ ঘণ্টার থেকে কম সময় ঘুমালে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

কারণ ঘুম কম হলে স্বাভাবিকভাবেই খিদে বাড়তে থাকে। খিদে বাড়লে খাবার খাওয়া লাগে যার ফলে ওজন বাড়ে।

যারা ৫ ঘণ্টা বা তার কম সময় ঘুমায়, তাদের হঠাৎ করে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ মানুষদের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ঘুমের সঙ্গে হার্ট এবং ব্রেনের স্বাস্থ্যের সরাসরি যোগ রয়েছে।

তাই ঘুম ঠিক মতো না হলে শরীরেই সবথেকে দুটি ভাইটাল অঙ্গ দুর্বল হয়ে যেতে শুরু করে। আর এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ু কমতে থাকে।

কর্মোদ্যমতা কমে যায়:

রাতে মানুষের ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমালে দিনের বেলায় দেহ ও মন কর্মক্ষম থাকতে পারে।

ঘুমে অনিয়ম মানুষের কাজের উদ্যমতা কমিয়ে দেয়। এমনকি রাতে ঘুম কম হলে মানুষের ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।

রেফারেন্স: