যেসব ভেষজ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
যে কোন ভেষজ উপাদান আমাদের শরীরের জন্য দারুন উপকারী। ঠিক তেমনি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কিছু ভেষজ আছে যেগুলি উপকারী।
উচ্চ রক্তচাপে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনও লক্ষণ থাকে না। এটি হার্টের রোগ এবং স্ট্রোকের জন্য একটি বড় ঝুঁকি।
যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় একজনের মৃত্যু উচ্চ রক্তচাপ এর কারণে হয়ে থাকে।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিছু গুল্ম এবং মশলা আছে যেগুলি রক্তচাপের মাত্রা হ্রাস করতে পারে। নিচে এমন কয়েকটি ভেষজ এর নাম দেওয়া হলো –
তুলসী:
আয়ুর্বেদে তুলসীকে “হাড়ের রানী”, “গুল্মের রানী” এবং “প্রকৃতির মা ঔষুধ” বলা হয়েছে। ঔষুধী ও আধ্যাত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে একে জীবনের একটি elixir হিসাবে সম্মানিত করা হয়।
তুলসী রক্তনালীগুলিকে শিথিল করতে এবং রক্তকে পাতলা করতে সহায়তা করে, যা ফলস্বরূপ রক্তচাপ হ্রাস করতে সহায়তা করে।
তবে তুলসী মানুষের রক্তচাপকে হ্রাস করতে সাহায্য করে কিনা তা অনুসন্ধানের জন্য বিজ্ঞানীদের আরও গবেষণা করা দরকার।
ধনেপাতা:
ধনেপাতা ভিটামিন “সি” এবং ডায়েটিরি ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ যা রক্তচাপ হ্রাস করতে পারে।
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ক্যারোটিনয়েড অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রক্তচাপ এবং এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরল হ্রাস করে, যা হার্টের রোগের ঝুঁকিপূর্ণ কারণ।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ধনেপাতা সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক উভয় রক্তচাপকে হ্রাস করেছে।
রসুন:
রসুনে অ্যালিসিনের মতো সালফার যৌগ থাকে যা রক্ত প্রবাহ বাড়াতে এবং রক্তনালীগুলিকে শিথিল করতে সহায়তা করে রক্তচাপকে হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে।
মানব গবেষণায় দেখা গেছে রসুন উচ্চ রক্তচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সহায়তা করে।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২৪ সপ্তাহের সময়কালে রক্তচাপ কমাতে ওষুধের মত রসুনের নির্যাস কার্যকর ছিল। প্রতিদিন রসুনের প্রায় ৪ কোয়া খাওয়া যাবে।
দারুচিনি:
দারুচিনি উচ্চ রক্তচাপ সহ হার্টের রোগের চিকিৎসার জন্য বহু শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী ঔষধে ব্যবহৃত হচ্ছে।
১৪১ জন অংশগ্রহণকারী সহ ৯ টি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে দারুচিনি গ্রহণের ফলে সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টলিক রক্তচাপকে যথাক্রমে ৬.২ মিমি এইচজি এবং ৩.৯ মিমি এইচজি হ্রাস পেয়েছে।
আদা:
আদা অবিশ্বাস্যরূপে বহুমুখী এবং বিকল্প ওষুধের মধ্যে একটি। কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং রক্তচাপ সহ হার্টের রোগ ছাড়া আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক দিক উন্নতি করতে বহু শতাব্দী ধরে আদা ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এলাচ:
উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন লোকদের জন্য এলাচ বন্ধু হতে পারে। একটি সমীক্ষায় গবেষকরা উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন ২০ জন প্রাপ্ত বয়স্ককে দিনে ৩ গ্রাম করে ১২ সপ্তাহ এলাচ গুঁড়ো খেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
১২ সপ্তাহের পরে, সেসব লোকেদের রক্তচাপের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল। গবেষকরা মনে করেন যে মশলাটি তার মূত্রবর্ধক প্রভাবের কারণে রক্তচাপকে কমিয়ে দিতে পারে।
জোয়ান:
উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন হল একটি সাধারণ অবস্থা যা হার্টের রোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ হলে সাথে সাথে একটি ঔষধ খেয়ে নেন।
এটাকেই একমাত্র সহজ উপায় বলে মনে করি। কিছু প্রাকৃতিক খাবার রয়েছে যেগুলো রক্ত চাপের মাত্রা কমাতে পারে। তারমধ্যে একটি হল জোয়ান।
কিছু গবেষণা নির্দেশ করে যে জোয়ানে একটি উপাদান রয়েছে যা রক্তচাপের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে। তবে রক্তচাপের মাত্রা কমাতে জোয়ান কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে গবেষণা এখনও সীমাবদ্ধ।