লাল চাল না সাদা চাল, কোনটা বেশি স্বাস্থ্যকর?
চাল একটি শস্যদানা যা আমরা পেয়ে থাকি ধান থেকে। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের একটি অতি প্রয়োজনীয় অংশ হচ্ছে চাল থেকে রান্না করা ভাত। আমাদের দেশে ফলনশীল শস্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলানো হয় ধান।
ঢেঁকি ছাঁটা চালই আধুনিক সমাজ ব্রাউন রাইস বলে চেনে। সেই সময় থেকে মানুষের মুখে একটি প্রবাদ বাক্য চলে আসছে “আমরা মাছে ভাতে বাঙালি”।
সময় এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা মান, সেই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসেও এসেছে বদল। লাল চালের জায়গা নিয়েছে পলিশ করা সাদা চাল। তাই তো বেড়েছে রোগ।
রেড রাইস বা লাল চাল :
লাল চাল অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এই চালের ভাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং আয়রন থাকে। যার ফলে এটি ডায়বেটিস, হৃদরোগ, কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি প্রদাহ এবং ক্যান্সারের হাত থেকেও বাঁচাতে এটি সহায়ক ভূমিকা রাখে।
লাল চালের ভাত হজম করতে বেশি সময় লাগে যার ফলে ক্ষুধা কম লাগে। লাল চাল ওজন হ্রাসেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই চাল দেখতে লালচে বাদামি বর্ণের তবে রান্না হওয়ার পর গোলাপী রং ধারণ করে।
সাদা চাল বা হোয়াইট রাইস :
সাদা চাল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে এটি কলে ভাঙানো বা পলিশ করলে প্রাকৃতিক স্বাদ ও চেহারা পরিবর্তিত ঘটে। প্রক্রিয়াজাতের কারণে এতে থাকা লৌহ, ভিটামিন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম-সহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান অনেকটাই কমে যায়।
তবে এটি শক্তির ভাণ্ডার। এতে স্টার্চের ঘনত্বের কারণে যে কোনও চালের চেয়ে দেহে বেশি শক্তি দেয়। লাল চালের তুলনায় এতে আঁশ কম থাকে।
সাদা নাকি লাল চাল? কোনটা বেশি উপকারি?
স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে লাল চাল অন্যতম। কারণ লাল চালে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। সুস্বাস্থ্যের জন্য এই চালের অবদান অনস্বীকার্য।
- লাল চাল বেশি স্বাস্থ্যকর, বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং বেশি সুস্বাদু। অন্যদিকে লাল চাল পরিশোধন করে সাদা চাল তৈরির প্রক্রিয়ায় চালের প্রয়োজনীয় উপাদান অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়। আঁশও কমে যায়। এসব বিবেচনায় লাল চাল নিঃসন্দেহে ভালো।
- খোসা ফেলে দেয়ার পরও লাল চালের গায়ে একটি আবরণ থাকে। যা এর পুষ্টি উপাদানগুলোকে অক্ষত রাখে। লাল চালে সাধারণ সাদা চালের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ খাদ্য আঁশ, খনিজ, পুষ্টি এবং ভিটামিন রয়েছে।
লাল চাল খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা:
- হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করবে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- অ্যালঝাইমার রোগ আপনার কাছ থেকে দূরে থাকবে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধী।
- হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
- শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করবে
“আসুন আমরা লাল চাল খাওয়ার অভ্যাস গড়ি, সুস্থ্য থাকি।”