যে কথাগুলো সন্তানকে প্রতিদিন বলা উচিৎ। জেনে নিন।
আপনার সন্তানকে নিশ্চয়ই আপনি নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসেন। প্রত্যেকেই চান তার সন্তান বেড়ে উঠুক একজন সফল এবং ভালো মানুষ হিসেবে। আর তাই নিজের সন্তানের দেখাশোনার কোনো ত্রুটি রাখতে চান না কেউ।
আপনার বাচ্চাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, আত্ম-সম্মান এবং চিন্তাভাবনা বাড়াতে বা জাগাতে এই দৈনন্দিন শব্দ বা বাক্যগুলো ব্যবহার করুন। সামান্য কিছু কথাই পারে তাকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারে।
নিরাপত্তাহীন বিশ্বে কিছুটা সুরক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য তাদের প্রতিদিনের জীবনে কিছুটা নিয়মশৃঙ্খলা প্রয়োজন।
যেমন ধরুন: বিছানায় যাওয়ার সময় হয়েছে বা হোমওয়ার্ক শেষ করো বা এখন টিভি বন্ধ করার সময়। এই ধরণের কথাগুলো প্রায় বলা ভালো।
ছোট বাচ্চাদের প্রায়শই অভিভাবক হিসাবে ক্রিয়াকলাপের একটি কার্যক্ষম সময়সূচী স্থাপন এবং বজায় রাখা আপনার উপর নির্ভর করে।
সর্বদা মনে রাখবেন যে নিয়মিত ও সঠিক খাবারের সময় এবং শয়নকালীন সময়ের অভ্যাসে শিশুরা উপকৃত হয়।
আপনার আদরের সন্তানকে প্রতিদিন কিছু বিশেষ কথা জানানো জরুরী। বিশেষ সেই কথাগুলো আপনার সন্তানের মনে ঢুকিয়ে দিলে জীবনের চলার পথে যেকোনো সমস্যার মোলাবেলা সহজেই করতে পারবে সে।
জেনে নিন কয়েকটি কথা সম্পর্কে যেগুলো প্রতিদিনই একবার করে বলা উচিত সন্তানকে।
যে কথাগুলো সন্তানকে প্রতিদিন একবার করে বলা উচিত:
তুমি পারবে:
আপনার সন্তানকে প্রতিদিন একবার করে বলুন তুমি এটা পারবে। তোমার উপর আমার পুরো বিশ্বাস আছে। তাকে বিশ্বাস করে ছোট খাটো কিছু দায়িত্ব পালন করতে দিন।
তাহলে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং সে আপনাকে আরো বেশি ভালোবাসবে।
বাচ্চা কিছু একটা করতে গেলে তুমি এটা পারবে না, এটা তুমি নষ্ট করে ফেলবে, এমনটা কখনো করবেন না।
ধৈয্য ধরে এগিয়ে যাও:
সন্তানকে প্রতিদিন একবার করে হলেও বলুন সে যেন হাল ছেড়ে না দেয়। প্রতিটি কাজেই তাকে উৎসাহ দিন এবং হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিতে মানা করুন।
তাকে বলুন ধৈর্য ধরে এগিয়ে গেলেই সাফল্যের দেখা পাবে সে। তাকে বিভিন্ন গল্প শোনান।
বাচ্চারা গল্প শুনতে খুব ভালোবাসে। অধ্যবসায়, পরিশ্রম, বিভিন্ন মোটিভেশনাল ইত্যাদি। এতে সে নিজের কাজের প্রতি আগ্রহী হবে।
আমি তোমায় ভালোবাসি:
প্রত্যেকেরই ভালবাসা, স্নেহ এবং গ্রহণযোগ্যতা ও একাত্মতার বোধ দরকার। আমরা ধরে নিতে পারি যে বাচ্চারা তাদের প্রতি আমাদের ভালবাসা জানে এবং বুঝতে পারে।
আপনার বাচ্চাকে জানতে দেওয়া যে, আপনি তাকে ভালবাসেন এবং তাকে অগণিত আলিঙ্গন দেখানো। কেবলমাত্র বাচ্চাদের ক্ষেত্রেই নয়, বয়স বাড়ার সাথে সাথেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।
যদি বাচ্চারা নিয়মিত “আই লাভ ইউ” শব্দটি শুনতে পারে তাহলে এটা একটা জাদুর মতো কাজ করে। আপনি তাদের পছন্দ করেন, একই রিঅ্যাকশন তারাও দেখাবে।
ধন্যবাদ:
আপনার সন্তানের প্রচেষ্টাকে স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ। আমাকে সেই হারিয়ে যাওয়া মোজাটি সন্ধান করতে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ বা টেবিল স্থাপনের জন্য ধন্যবাদ; তুমি এটি করার সময় আমি সালাদ তৈরি করেছি।
সামাজিক দক্ষতা এবং সৌজন্যতা বাড়ির ভিতরে এবং এর বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ।
আমি দুঃখিত:
আমরা সবাই আমাদের মেজাজ হারিয়ে ফেলেছি বা ভুল করে ফেলেছি। ভালোভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তোমার সেরা কাজটা করো:
ফলাফল কি হবে সেটা তোমার ভাবার দরকার নেই। তুমি তোমার সেরাটা দাও দাও।
সদা সত্য কথা বলবে:
এটি দুর্দান্ত না হলেও সর্বদা সত্য বলুন। যত তাড়াতাড়ি বাচ্চারা জানতে পারে আপনি সত্য শোনার পরে তাদের পছন্দ করবেন, এটি দুর্দান্ত না হলেও তারা যত বড় হবে তত বেশি সত্যবাদী হবে।
ব্যর্থতা কোনো অপরাধ নয় এটা আপনার সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন। আপনার সন্তান কখনো ব্যর্থ হলে তাকে বকাঝকা না করে ব্যর্থতা কে ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বলুন।
Life is not a bed of roses:
জীবনটা ফুলশয্যা নয়। জীবনে বাধা বিপত্তি আসবে। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবকিছু মিলিয়ে আমাদের এই জীবন।
মাঝে মাঝে খারাপ সময় আসে জীবনের। খারাপ সময় থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো সময়ে সেটাকে কাজে লাগানোর জন্য সন্তানকে উৎসাহিত করুন।
পরিবার তোমার সাথে:
মানুষ হিসাবে পরিপূর্ণতা লাভের বা বিকাশের জন্য একটা মানুষের জীবনে পরিবার সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করে।
পরিবার হলো সবচাইতে নিরাপদ যায়গা এবং পরিবার আপনার সন্তানকে কতটা ভালোবাসে সেকথা তাকে জানিয়ে দিন।
এতে সে নিজেকে নিরাপদ ভাববে এবং পরিবারের প্রতিও সে ভালোবাসা দেখাবে। কথায় বলে, পরিবারটাকে heaven বা স্বর্গ বানান তাহলে সন্তানরাও আপনাকে স্বর্গ ফিরিয়ে দেবে।
সূত্রঃ
familyeducation.com, hautemomslife.com