হাত পুড়ে ফোস্কা পড়লে করণীয় কি?
আমাদের অনেকেরই রান্না করতে গিয়ে অনেক সময়ই হাতে তেল ছিটকে হাত পুড়ে ফোস্কা পড়ে। এছাড়াও গরম কড়াই কিংবা খুন্তির ছ্যাঁকা লেগেও হাত পুড়ে ফোসকা পড়ে। ছ্যাঁকা লাগলেই সেখান থেকে ফোস্কা পড়তে বাধ্য।
হাত পুড়ে ফোস্কার আঘাত খুব একটা গুরুতর না হলেও বেশ যন্ত্রণাদায়ক। পুড়ে যাওয়া স্থানে জ্বালা যন্ত্রণার ফলে হাত দিয়ে কাজ করতেও অনেক সময় সমস্যা হয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে পড়লে দ্রুত আরাম লাভের জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো সম্পর্কে।
ঠাণ্ডা পানির ব্যবহার:
হাত পুড়ে ফোস্কা (burn blister) পড়লে ফ্রিজে থাকা ঠাণ্ডা পানি খুব কাজে দেয়। ঠাণ্ডা পানি পোড়া জায়গার জ্বালা কমিয়ে ফোস্কা পড়ার ঝুঁকি কমায়। প্রতি ২-৩ ঘণ্টা পর পর পুড়ে যাওয়া স্থানটি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তবে পোড়া স্থানে একদমই বরফ ব্যবহার করা যাবে না। কারণ বরফ পোড়া স্থানের রক্ত চলাচল বন্ধ করে দিয়ে পোড়া স্থানের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বেকিং সোডা:
হাত পুড়ে ফোস্কা পড়লে তা প্রতিরোধে বেকিং সোডা খুবই কার্যকরী। জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য থাকায় ক্ষত স্থানকে সংক্রমিত হতে দেয় না বেকিং সোডা। এটি ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ বজায় রাখে। বেকিং সোডা পুড়ে যাওয়ার ব্যথা ও যন্ত্রণা দ্রুত কমানোর পাশাপাশি ফোসকা দূর করে।
মধু:
মধু হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক, পোড়া জায়গায় মধু লাগালে জীবাণু নিধন করে ইনফেকশনের ঝুঁকি কমিয়ে দেয় ও দ্রুত ফোস্কা দূর করতে সহায়তা করে। একটি পরিষ্কার পাতলা সুতি কাপড়ে মধু লাগিয়ে পোড়া স্থানে লাগাতে পারেন। এতে পোড়ার ক্ষত দ্রুত ভালো হবে এবং ফোসকা দূর হবে।
টুথপেস্ট:
টুথপেস্টে পোড়া অংশের ব্যথা কমায় ও ক্ষত মসৃণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া হাত পায়ে ফোস্কা পড়লে টুথপেস্ট ব্যবহার করলে আরাম পাওয়া যায়। ক্ষত স্থান ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে এর চারপাশে সাদা টুথপেস্ট লাগাতে হবে। ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।
টি ব্যাগ:
হাত পুড়ে ফোস্কা পড়লে তা প্রতিরোধে টি ব্যাগ খুবই উপকারী। চা পাতায় আছে ট্যানিক এসিড যা ত্বককে শীতল করে। এজন্য পুড়ে যাওয়া স্থানে ভেজা ঠাণ্ডা টি ব্যাগ ব্যবহার করলে ত্বকের জ্বালা ভাব ও অস্বস্তি কমে যায় এর পাশাপাশি ফোসকা দূর হয়।
ডিম:
হাত পুড়ে ফোস্কা পড়লে তা প্রতিরোধে ডিম খুবই কার্যকরী। এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে ডিমের সাদা অংশ ফোসকা পড়া স্থানে ভালো করে লাগাতে হবে। দিনে ২-৩ বার লাগাতে হবে ফোসকা পড়া স্থানে। এতে করে জ্বলুনি, ফোলা ভাব ও ফোসকা দূর করবে।
লবণ:
লবণে রয়েছে সোডিয়াম ক্লোরাইড। এর প্রাকৃতিক নিরাময় শক্তি ও অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ফোসকা সারাতে ও দ্রুত পুড়ে যাওয়া সারিয়ে তুলতে কাজ করে। কয়েক ফোঁটা পানির সঙ্গে ১ চা চামচ লবণ মিশিয়ে পেস্ট বানাতে হবে। আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দিনে ২-৩ বার ব্যবহার করতে হবে।
অ্যালোভেরা:
অ্যালোভেরার ঔষধী গুণের জন্য, ময়শ্চারাইজিং এবং শীতলকারক বৈশিষ্টের কারণে, এটি পোড়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ২০১৩ সালে ৫০ জন অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে একটি স্টাডিতে দেখা গেছে যে, অ্যালোভেরা প্রাথমিকভাবে পুড়ে যাওয়া ক্ষত নিরাময়ে এবং ব্যথার উপশম কমাতে পারে।