ফোড়ন কি বা কাকে বলে? ডালে, অম্বলে ও লাউয়ের তরকারিতে কিভাবে ফোড়ন দিতে হয়।

ফোড়ন মানে টিপ্পনী বা টিপ্পনী কাটা অর্থাৎ কথার মাঝে কথা বলা। একটি কথা আমরা হরহামেশাই শুনে থাকি, কথার মাঝে ফোড়ন কাটিস না, আইছে আমার ফোড়ন মারতে ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় রন্ধন শিল্পের ফোড়ন শব্দটি নিয়ে।  ফোড়ন মূলতঃ গরম তেলে বিশেষ কয়েকটি মশলার মিশ্রন যা আলাদা আলাদাভাবেও ব্যবহার করা হয়।

কড়াইতে তেল গরম করে সবগুলো মসলা একসাথে ভেজে নিন। গরম অবস্থাতেই কড়াইতে জল শুদ্ধ ডাল ঢেলে দিন। এবার যে শব্দ সহকারে সুগন্ধি ধোঁয়া উঠবে একেই ফোড়ন বলে। এরপর অল্প ফুটিয়ে নামিয়ে নিন।

রান্নায় আলাদা স্বাদ আনতে বা স্বাদ বাড়াতে গরম তেলে মশলা ব্যবহারের কৌশল। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে তেল গরমের মাত্রা ও কোন তরকারিতে কোন মশলা বেশি স্বাদ বর্ধক বা মানানসই।

যেমন মুশুর ডালে আর মটর ডালে কালজিরা, মুগ ডাল আর ছোলার ডালে সাদাজিরা, তেজপাতা, অঢ়হড় ডালে সাদাজিরা, হিং, তেজপাতা, মাশকলাই ডালে মৌরী, তেজপাতা ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও প্রত্যেকটি ডালে শুকনো লঙ্কা ব্যবহার করতে পারেন।

আগে ডাল জল সহকারে সিদ্ধ করে নিন। প্রয়োজন অনুসারে জল কম বা বেশি রেখে ডালের ঘনত্ব কমাতে বা বাড়াতে পারেন।

তরকারিতে ফোড়ন দেওয়ার জন্য সাদাজিরা, কালোজিরা আর পাঁচফোড়ন ব্যবহার করা হয়। কড়াইতে তেল গরম করুন, ফোড়ন ভেজে নিন এরপরে ধোয়া কাটা তরকারি /সবজি তারমধ্যে ঢেলে দিন এবার রান্না শুরু করুন।বেশিরভাগ নিরামিষ তরকারিতে সাদা জিরা ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

চমিশালি নিরামিষ তরকারি তে পাঁচফোড়ন ব্যবহার করা হয়। মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি আমিষ তরকারির ক্ষেত্রে সাদা জিরা বেটে ব্যবহার করা হয়। কিছু কিছু নিরামিষ তরকারি তে শুধুমাত্র কালোজিরা ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

প্রতিটি ডালের ভিন্ন ভিন্ন ফোড়ন হয়। তাই কোন ডালে কি ফোড়ন দিতে হয় তা ঠিকভাবে জেনে নেওয়া উচিত। যেমন ::— ১। মুগ ও মুসুর ডালে জিরে— শুকনো লঙ্কা ফোড়ন, ২। বিউলির ডালে জিরে—শুকনো লঙ্কা—হিং ফোড়ন, ৩। ছোলার ডালে জিরে—শুকনো লঙ্কা— তেজপাতা ফোড়ন, ৪। টক ডালে সর্ষে—শুকনো লঙ্কা ফোড়ন, ৫। পেঁয়াজের ডালে রাঁধুনি—শুকনো লঙ্কা ফোড়ন ইত্যাদি ।

অম্বলে নামানোর পর ফোড়ন মিশিয়ে দিতে হয়। লাউয়ের তরকারিতে কালোজিরা ফোড়ন দিতে হয়।