কলার সাথে দই, পালং সাথে লেবু। কোন খাবারগুলো একসাথে খাবেন। কেন খাবেন?

আমাদের অনেকেরই এই বিষয়টা জানা নেই। জানলে একটু হলেও আপনি চেষ্টা করবেন। বিষয়টা যেমন মজার তেমনি শিক্ষণীয়ও বটে। আপনি পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন। আপনার শরীরের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।

অল্প আর একটু সচেতন হলে বা বুদ্ধি খাটালে আপনার শরীরে পুষ্টির শোষণ বা গ্রহণ আরো বেড়ে যাবে।

নির্দিষ্ট কিছু খাবার কেবল এক সাথে সম্পর্কিত। সংমিশ্রণে কিছু খাবার কেবল দুর্দান্ত স্বাদই দেয় না তবে তারা আপনাকে আরও কার্যকরভাবে পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে।

পুষ্টিবিদরা যে সমস্ত স্মার্ট খাওয়ার টিপস এবং কৌশলগুলি আপনাকে বলে থাকে সেগুলির মধ্যে এটি অন্যতম সেরা। আপনি সহজেই আপনার খাবারের পুষ্টির মান বাড়িয়ে তুলবেন – এবং খুব অল্প চেষ্টা করেই। স্বাস্থ্যকর খাবারগুলি মেশানো এবং সংমিশ্রনে অবশ্যই অনেক সুবিধা রয়েছে।

দারুন পুষ্টিকর জুড়ি, প্রোটিন আর পটাসিয়াম:

বিল্ডিং এর কাঠামো ধরে রাখে লোহার রড আর মানব শরীরের কাঠামো ধরে রাখে মজবুত হাড়। মজবুত শক্তিশালী হাড়ের পর আমাদের যেটা দরকার সেটা হলো মজবুত পেশি। প্রোটিন আর পটাসিয়ামের কেমিস্ট্রি মজবুত পেশি গঠনে খুবই কার্যকরী।

প্রাতঃরাশে আমরা অনেকেই কলা খেয়ে থাকি। কলাতে পাওয়া পটাশিয়ামের সাথে দইয়ের মতো উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবারের সংমিশ্রণ পেশী তৈরি করতে এবং ব্যায়ামের সময় হ্রাস হওয়া অ্যামিনো অ্যাসিডগুলি পূরণ করতে সহায়তা করে। তাই জিম করে সহজেই এই জুড়িটি উপভোগ করুন।

পুষ্টিকর জুড়ি: স্বাস্থ্যকর আঁশ বা ফাইবার এবং প্রোটিন:

দুপুরের খাবারে দুর্দান্ত পুষ্টির উপায় খুঁজছেন? প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফাইবার মিশ্রিত খাবার নির্বাচন আপনাকে বাড়তি শক্তি যোগাতে সাহায্য করতে পারে। মাছ, মাংসের সাথে গাজর, টমেটো শসা, লেটুস পাতা ইত্যাদি সহযোগে সালাদ রাখুন।

অন্যান্য ভাল বিকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে দই এবং ফল, চিনাবাদাম মাখন সহ একটি আপেল, বা পনির এবং গোটা শস্য দানা।

পুষ্টিকর জুড়ি: ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম:

ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় মজবুত করে। কিন্তু আপনার দেহের হাড়ের বন্ধু এই ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। তবে প্রাকৃতিকভাবে খুব কম খাবারে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।

ডিমের কুসুম ‘ডি’ এর একটি ভালো উৎস। তাই ডিমের সাথে যেকোনো ধরণের পনির বা ছানা খেলে আপনি ভিটামিন ‘ডি’ এর সাথে ক্যালসিয়ামের মিলন ঘটিয়ে দিলেন।

আপনার সকালের প্রাতঃরাশের অমলেটটি যদি পুষ্টির রানী হয়ে ওঠে তাহলে তো কোনো ক্ষতি নেই। পুষ্টির অতিরিক্ত বর্ধনের জন্য আপনি অমলেটের সাথে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ সবজি যেমনঃ ব্রকোলি, বাদামের টুকরো ইত্যাদি যোগ করতে পারেন।

পুষ্টিকর জুড়ি: ভিটামিন সি এবং আয়রন:

আমাদের দেশের সবচেয়ে সাধারণ পুষ্টির ঘাটতি হল আয়রনের অভাব। হেমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আপনার রক্তের অক্সিজেন বহনকারী উপাদান। কম আয়রন রক্তাল্পতার কারণ হতে পারে, যা ক্লান্তি, পেশী দুর্বলতা এমনকি চুলের ক্ষতিও করে। তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ – বিশেষত মহিলাদের জন্য। খাদ্য থেকে যতটা সম্ভব এই খনিজটি আহরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

ভিটামিন সি আয়রন শোষণে সহায়তা করে। কমলালেবু, পেয়ারা, আমড়া থেকে আমলকি অনেক ফল রয়েছে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। পালং শাক, কচু শাক, কচু জাতীয় সকল সবজি, কিসমিস থেকে রুটি অনেক খাবার রয়েছে আয়রন সমৃদ্ধ।

তাই সংক্ষেপে, লেবু + পালং অর্থাৎ ভিটামিন সি এর সাথে আয়রনের মিলন যে কতটা দরকার তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেকে ডাক্তারের পরামর্শ মতো কমলালেবুর রসের সাথে আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন।

পুষ্টিকর জুড়ি: ভিটামিন কে এবং ভাল ফ্যাটস:

ডেনসিটোমেট্রি জার্নালের অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১৩ ইস্যুতে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, ভিটামিন কে আপনার হাড়কে সুরক্ষা দেয় এবং রক্ত ​​জমাট বাঁধার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে ভিটামিন k-ফ্যাট-দ্রবণীয় হওয়ায় আপনার শরীর একই সময়ে কিছুটা ভাল ফ্যাটস না থাকলে কার্যকরভাবে এটি গ্রহণ করতে পারে না।

এজন্য আপনার সর্বদা স্বাস্থ্যকর চর্বিগুলি একত্রিত করা উচিত – যেমন: ঘি, মাখন, আখরোট, বাদাম, চিনাবাদাম, আমন্ড অয়েল, নারকেল তেল বা জলপাই তেল। সবুজ পাতাওয়ালা শাকসবজির সাথে স্বাস্থ্যকর চর্বির মিশ্রণ অর্থাৎ ভিটামিন k-এর সাথে ভালো চর্বির মিশ্রণ।

সূত্র: everydayhealth.com