গর্ভাবস্থায় কমলালেবু রস বা কমলালেবু খাওয়ার উপকারিতা।

যেকোন তাজা ফল এবং শাকসবজি গর্ভবতী মহিলার ডায়েটের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। গর্ভবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের খাওয়ার অভ্যাস সম্পর্কে যত্নবান হওয়া উচিত কারণ একটি ভুল খাবার খাওয়ার ফলে গুরুতর সমস্যা হতে পারে।

কমলালেবু অবশ্যই আপনার গর্ভাবস্থার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সেরা ফল। সর্বাধিক উপকারিতা পেতে রস করে না খেয়ে পুরো ফলটি খাওয়া উচিত। কমলালেবু ভিটামিন “সি”, আয়রন, কপার এবং ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ। গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের সময় কমলা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় কারণ এটি ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নিন নিচে দেওয়া হলো-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:

প্রতি ১০০ গ্রাম কমলালেবুতে ৮৮% (DV%) ভিটামিন “সি” থাকে। ভিটামিন “সি”-এর চমৎকার উৎস কমলালেবু আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে হাজার গুণ। কমলালেবু ছাড়া অন্যান্য ফল যেমন- মাল্টা, জাম্বুরাতেও প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “সি” রয়েছে। নিয়মিত কমলা খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন “সি”-এর চাহিদা পূরণ হয়।

আয়রনের শোষণকে বাড়িয়ে তুলতে পারে:

ভিটামিন “সি” এবং সাইট্রিক অ্যাসিড উভয়ই আমাদের দেহে পাচনতন্ত্রে আয়রনের শোষণকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এছাড়া কমলালেবুতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনেড যা শরীরের ক্ষতিকারক পদার্থ বের করে শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়:

উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের সোডিয়াম গ্রহণ কমানোর পাশাপাশি পটাসিয়াম গ্রহণ বৃদ্ধি করা ঠিক গুরুত্বপূর্ণ। কমলা পটাসিয়ামের একটি ভাল উৎস। উচ্চ মাত্রায় পটাসিয়াম সমৃদ্ধ কমলা উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

ফাইবার এবং আলসার:

কমলালেবু ফাইবারের একটি ভাল উৎস। একটি মাঝারি কমলাতে ২.৮ গ্রাম ফাইবার থাকে। ফাইবার আমাদের পাকস্থলী ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। তাছাড়া কমলার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে। কোলেস্টেরল কমায় এবং আলসার দূরে রাখতে সহায়তা করে। ফাইবার আমাদের শরীরে চিনি শোষণ ধীর করে দেয়।

শিশুর মস্তিষ্ককে বিকাশে সহায়তা করে:

কমলা ভিটামিন বি 6 এবং ফলিক অ্যাসিডের একটি ভাল উৎস। গর্ভবতী অবস্থায় কমলা খাওয়া শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করবে এবং নিউরাল টিউব ত্রুটিগুলি প্রতিরোধ করে। কমলালেবুতে থাকা ফোলেট রক্তের কোষ গঠনে, নতুন টিস্যুর বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। তবে অতিরিক্ত ফোলেট গ্রহণ গর্ভের শিশু অতিরিক্ত ওজন নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়তা করতে পারে:

কমলালেবু দ্রবণীয় এবং অ-দ্রবণীয় ফাইবার এবং সেলুলোজ সমৃদ্ধ যা অন্ত্রের গতিবিধি নিয়মিত করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে যা গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ সমস্যা।

রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে:

কমলায় পটাসিয়ামযুক্ত সামগ্রী গর্ভবতী মহিলাদের রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে।

হাইড্রেটেড রাখতে পারে:

প্রতিদিনের তরল গ্রহণের ক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি কমলালেবু রস শরীরের তরল স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম সরবরাহ করে। ৮৮% জলের সামগ্রীর সাথে কমলা শরীরে জলের ভারসাম্য এবং হাইড্রেশনে সহায়তা করে।