প্রেম করে বিয়ে নাকি দেখাশোনা করে বিয়ে।

যদি প্রশ্ন করি প্রেম করে বিয়ে নাকি দেখাশোনা করে বিয়ে করা ভালো? কেউ কেউ বলবে প্রেম করে বিয়ে করা ভালো। কেউ কেউ বলবে দেখাশোনা করে বিয়ে করা ভালো। আবার কেউ কেউ বলবে দুটোই ভালো। দুটোই ভালো যদি হয় মনের মিল।

বেশির ভাগ প্রেম শুরু হয় আবেগের তাড়নায়। তখন চোখে থাকে রঙ্গিন স্বপ্ন। মনে হয় যেন দুজন দুজনাকে ছাড়া বাঁচবো না। তুমি আমায় যেভাবে রাখবে আমি সেভাবেই থাকবো ইত্যাদি। তারপর হুট করে বিয়ের করার ডিসিশন নিয়ে ফেলে। বাবা মা বাধ্য হয়ে তাদের বিয়েতে মত দেয়। বিয়ের আগমুহূর্ত পর্যন্ত তারা জানে না আসলে বাস্তবতা কী। বিয়ের পরের দিন থেকে শুরু হয়ে যায় সংসারের বাস্তব রূপ। তখন একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ, সম্মান কমতে থাকে। দুজনের মাঝে তৈরি হয় দূরত্ব। তবে প্রেম করা বিয়ে যে সুখের হয় না তা কিন্তু নয়।

জীবনটা রূপকথা না। বিবাহিত জীবনে সুখী হতে হলে প্রেম ভালোবাসা থাকা আবশ্যক – কিন্তু তার সাথে অনেক ত্যাগ স্বীকারও করতে হয়। শুধুমাত্র স্বামী স্ত্রীর প্রতিই না, পরিবারের প্রতিও। আর এটা পারিবারিক ভাবে দেখাশুনা করা বিয়েতে বেশি থাকে।

সামাজিক ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে পারিবারিক বিয়ে:

যখন পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তখন দুই পরিবারের মানুষজন শুধু পাত্র পাত্রী দেখেন না পুরো পরিবার এবং পারিবারিক সবকিছু দেখেই বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে দুই পরিবারের জীবনযাপনের মান একই ভাবে বেড়ে ওঠা পারিবারিক জীবনচর্চা, পারিবারিক স্ট্যাটাস, মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির অনেক মিল থাকে। ফলে পাত্র-পাত্রী এবং দুই পরিবারের একে অপরের সঙ্গে মানিয়ে নিতে খুব বেশি কষ্ট হয়না সম্পর্ক গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী হয় প্রেমের বিয়ের তুলনায়।

পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মান বেশি থাকে:

যখন দুটি পরিবার মিলে একটি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তখন স্বাভাবিকভাবে পাত্র-পাত্রী একে অপরের প্রতি নিজেদের শ্রদ্ধা সম্মান বজায় রেখে চলার চেষ্টা করেন। কারণ এখানে শুধু দুজনের মান সম্মান নয় দুটো পরিবারের মান-সম্মান জড়িত থাকে। অনেক প্রেমের বিয়ে বিয়ের ক্ষেত্রে সম্মান, শ্রদ্ধা দেখা গেলেও যখন পারিবারিক নানা অসামঞ্জস্য সামনে পড়ে তখন দুজন দুজনের সম্পর্কে বিরূপ ধারনার সৃষ্টি হয় ও সম্পর্কে চির ধরতে থাকে।

পারস্পরিক বন্ধন মজবুত হয় পারিবারিক বিয়েতে:

পারিবারিক সম্মতি এবং পারিবারিক ভাবে বিয়ে হলে পরিবারের সদস্যগণ খুব স্বাভাবিকভাবে পরিবারের নতুন সদস্যকে মেনে নেন এবং মানিয়ে নিতে সাহায্য করেন। এটা সকলের মধ্যে সৌন্দর্য সম্পর্ক বজায় থাকে। প্রেমের বিয়েতে মেনে নিলেও সম্মতি দেওয়ার পরও ঝামেলা কোন না কোন ভাবে তৈরি হয়। যদিও সকলে এই রকম ভাবে না তারপরও কিছু সমস্যা থেকে যায়।

পারস্পরিক সমঝোতা ও ছাড় দেওয়ার মনোভাব বেশি থাকে:

প্রেমের বিয়েতে একে অপরের প্রতি অনেক সময় আশা-ভরসা বেশি থাকে। যা পূরণ না হলে অনেক সময় মান অভিমানে পর্ব অনেক দূর গড়ায়। অনেক সময় প্রেমিক প্রেমিকা ভাবেন প্রেম করে বিয়ে করার পরও সে কেন তার সমস্যা বুঝতে পারছে না বা এখনো এতো ছাড় কেন দিতে হবে। আর এতে সমস্যা শুরু হয় কিন্তু পারিবারিক বিয়েতে এই আশা জিনিসটি একটু কমই থাকে বরং যা পাওয়া হচ্ছে তাই নিয়ে অনেকের সুখে থাকার জন্য দুজনের মধ্য মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা বেশি দেখা যায় এতে সম্পর্ক সুখের হয়।