পুরুষদের ত্বক উজ্জ্বল করার উপায়।

শুধু যে মেয়েরা নিজেদের ফর্সা এবং সুন্দর দেখতে চায় তা কিন্তু নয়। পুরুষরাও মনে মনে চায় তাদেরও একটু সুন্দর দেখাক। বর্তমান সময়ে পুরুষরাও তাদের স্বাস্থ্য এবং চেহারা সম্পর্কে অনেক সচেতন হয়ে উঠছে।

আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততম জীবনে পুরুষদের ত্বকের যত্ন নেওয়া একেবারেই হয় না। দিনভর কাজ, ধুলাবালি, রাস্তার কালো ধোয়া, রোদের তাপ সব শেষে বাসায় ফিরে আয়নার নিজের চেহারা দেখে অবাক হওয়াটা শুধু বাকি থাকে। মুখে কালো ছোপ আর ধুলাবালিতে চেহারার উজ্জ্বলতা কোথায় যেন হারিয়ে যায়। এক্ষেত্রে সঠিক পরিচর্যা করলে চেহারার উজ্জ্বল্য আবার ফিরে পাওয়া সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে ছেলেদের ত্বকের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব-

কফি ও মধু:

১ চামচ মধু ও ১ চামচ কফি এবং কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল নিয়ে মুখে লাগান। ১০-১৫ মিনিট পর স্ক্রাব করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি মৃত চামড়া তুলে ফেলবে এবং ত্বককে মসৃণ ও সতেজ রাখবে।

কমলার রস এবং হলুদের পেস্ট:

ফর্সা ত্বকের জন্য কমলা একটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার। ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ এই ফলটি ত্বকের রং ফর্সা করে। এক্ষেত্রে ২ টেবিল চামচ কমলার রসের সাথে এক চিমটি হলুদের গুঁড়ো মেশাতে হবে। তারপর এই মিশ্রণটি মুখে লাগান এবং প্রায় ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।

পেঁপের মাস্ক:

পেঁপে ত্বককে করবে সুস্থ্য ও ফর্সা। পেঁপেতে পেপাইন রয়েছে, এটি একটি এনজাইম যা ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করে। এতে পেঁপের পেস্টে বানিয়ে মুখে লাগান এবং প্রায় ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

নারকেল তেল:

যুগ যুগ ধরে চুলের যত্নের পাশাপাশি নারকেল তেল ত্বকের যত্নেও ব্যবহার হয়ে আসছে। নারকেল তেল খুবই ভালো প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এটা ত্বককে ভেজা ভেজা রাখতে সহায়তা করে এবং আবহাওয়ার ক্ষতি থেকে বাঁচায়। ত্বক পরিষ্কার করতেও নারকেল তেল ব্যবহার করুন।

ঠাণ্ডা পানির ঝাপ্টা:

বাইরের রোদ থেকে আসে পানির ঝাপ্টা দিন। এতে ত্বকে সহজে কালচে ছোপ পড়বে না। বাইরে বেশিক্ষণ অতিরিক্ত ধুলাবালি ও কড়া রোদে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সম্ভব হলে দিনে ৩ থেকে ৪ বার মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপ্টা দিতে হবে।

আইস কিউব:

নিয়মিত একটা আইস কিউব মুখে ভালোভাবে ঘষে নিন। এতে করে ত্বকে রক্ত চলাচল সচল থাকে ও ত্বক দ্রুত উজ্জ্বল হয়।

লেবু:

লেবু রস করে তুলার বলের সাহায্যে বা হাত দিয়ে মুখে ভালভাবে লাগিয়ে নিন। লেবু ত্বকের অতিরিক্ত তেল, পিগমেন্টেশন, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন “সি” মুখের কালো দাগ দূর করে ত্বককে আরও ফর্সা করতে সাহায্য করে।

ত্বক পরিষ্কার করতে লেবুর রস ব্যবহার করুন কারণ এটি একটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার। লেবুর রস ত্বককে সতেজ এবং ফর্সা করে তুলবে কারণ লেবু একটি প্রাকৃতিক লাইটেনার।

শশা:

প্রাকৃতিক ভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করতে শশা খুব উপকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন বাসায় ফিরে মুখ ধোয়ার আগে শশার টুকরো দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখ ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।

শসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন “সি” ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। শসার খোসাতে প্রচুর ডায়টারি ফাইবার আছে যা ত্বককে ভিতর থেকে নরম রাখতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও রূপচর্চায় শসার বহুমাত্রিক ব্যবহার। শসার ফেইসপ্যাক ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।

কাঁচা হলুদ:

কাঁচা হলুদ ব্যবহারের ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। যুগ যুগ ধরে কাঁচা হলুদ রূপচর্চার অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ব্রণ সারাতে হলুদের মতো প্রাকৃতিক উপাদান খুব কমই আছে। কাঁচা হলুদে রয়েছে অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ ও ব্রণের ক্ষত সারাতে অতুলনীয়।

অ্যালোভেরা:

অ্যালোভেরা ত্বকের মৃত কোষগুলো তুলে ত্বককে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। এছাড়া অ্যালোভেরা ব্যবহারের ফলে ব্রণ দূর হয়ে যায়। অ্যালোভেরাতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং এন্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যের রয়েছে যা ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী। ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে, মসৃণ রাখতে, দাগ মুক্ত করতে এবং ত্বকে ব্রণের উপদ্রব কমাতে অ্যালোভেরা খুবই কার্যকরী।

মধু:

আদিকাল থেকে রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার চলে আসছে। তৈলাক্ত ত্বকে, শুষ্ক ত্বকে, ব্রণ যুক্ত ত্বকে মধু খুবই কার্যকরী। মধু প্রাকৃতিক ভাবেই ব্যাকটেরিয়াবিরোধী, মধুতে আছে এন্টিসেপ্টিক, এন্টিব্যাক্টেরিয়াল ও এন্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান। তাই মধু ব্রণ দূর করে এবং ব্রণ প্রতিরোধ করে।

শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু অনেক উপকারী। আধা চামচ মধুর সাথে এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।