ডায়াবেটিস হলে আপনি কি আলু খেতে পারবেন?

আলু প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। এটি পটাসিয়াম এবং ভিটামিন-B সমৃদ্ধ। আলুর খোসা ফাইবারের একটি দুর্দান্ত উৎস। তবে আপনার যদি ডায়াবেটিস হয় তবে আপনি হয়তো শুনেছেন আলু কম খাওয়া বা না খাওয়ার কথা।

আসলে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কী খাওয়া উচিত এবং কী খাওয়া উচিত নয় সে সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। অনেক লোক মনে করে যে, আলুতে কার্বস বেশি তাই ডায়াবেটিস রোগীদের না খাওয়া ভালো।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আলু খেতে পারেন তবে সেটা অবশ্যই পরিমাণ মতো। তবে আপনি সিদ্ধ আলু খাচ্ছেন না ভাজা আলু খাচ্ছে সেটার উপরও নির্ভর করে। তেলে ভাজা আলু রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে।

প্রতিদিনের কার্বোহাইড্ৰেট গ্রহণের পরিমাণ:

সাধারণত পরামর্শ দেওয়া হয় ডায়াবেটিসে আক্ৰান্ত ব্যক্তিরা যেন উচ্চ কার্বোহাইড্ৰেট যুক্ত খাবার গ্রহণের পরিমাণ কম রাখে। ডায়াবেটিস আক্ৰান্ত রোগীরা প্রতিদিন তাদের কার্বোহাইড্ৰেট গ্রহণের পরিমান ২০-৫০ গ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে ভালো। তবে প্রতিদিন সর্বোচ ১০০ – ১৫০ গ্রাম পর্যন্ত গ্রহণ করতে পারে।

আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স:

আলু যেহেতু বিভিন্ন ভাবে খাওয়া হয়, কিভাবে এটা খাওয়া হয় তার উপরে ভিত্তি করে আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) একেক রকম হয়। আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি থেকে উচ্চ পর্যায়ের। উদাহরণস্বরূপ যে আলুটা আমরা সবসময় খাই নিকোলা আলু (Nicola potato) খোসাসহ সিদ্ধ করলে এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স: ৫৮, লাল আলু (Pontiac potato) খোসা ছাড়া ভাজি করলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স: ৯৩।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযোগী:

যে খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যত কম হবে সেটি রক্তে শর্করার পরিমাণ তত কম বৃদ্ধি করবে। ডায়াবেটিস থাকলে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ভালো।

যেহেতু আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি থেকে উচ্চ পর্যায়ের। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই পরিমাণ মতো এবং যেভাবে খেলে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে সেইভাবে খাওয়া ভালো। যেমন নিকোলা আলু (Nicola potato) খোসাসহ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি উপযোগী অন্য আলুর তুলনায়।

আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিভাবে কমানো যায়?

সাধারণভাবে, আলু যত বেশি রান্না করা হয় তত বেশি গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বৃদ্ধি পায়। অতএব, দীর্ঘ সময় বেকিং বা ভাজি করলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বৃদ্ধি পায়।

তাই তেলে ভেজে না খেয়ে সেদ্ধ করে সারারাত ফ্রিজে রেখে দিয়ে ঠান্ডা করে পরিমাণ মত খেতে পারি। আলু সেদ্ধ করার পরে ঠাণ্ডা করলে প্রতিরোধী স্টার্চের পরিমাণ বৃদ্ধি পাই যার ফলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমে যায়।

সতর্কতা:

৭০,৭৭৩ জনের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে সেদ্ধ, ছাঁকা আলুর তুলনায় ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আলু, টাইপ-2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৯% বৃদ্ধি করছিল।

ভাজা আলু এবং আলুর চিপগুলিতে উচ্চ পরিমাণে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে এবং ওজন বাড়িয়ে স্থূলত্বের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

সূত্র: হেলথলাইন