একাধিক অংশীদার ভুক্ত (এজমালি) জমি কিভাবে ভাগ বাটোয়ারা করবেন জেনে নিন।

কোন ব্যক্তি মারা গেলে সাধারণত তার ছেলে মেয়েরা বা ছেলে মেয়েরা না থাকলে অন্যান্য উত্তরাধিকারীরা ওয়ারিশ হিসেবে জমির মালিক হয়ে থাকে, এখন এইভাবে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত এজমালি বা একাধিক অংশীদার ভুক্ত সম্পত্তি আপনি বিভিন্ন ভাবে ভাগবাটোয়ারা করতে পারেন।

পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে:
মৃত ব্যক্তির যে কয়জন ওয়ারিশ আছেন সবাই একত্রে বসে নিজেরা একমত হয়ে, কে কোন দিকে কতটুকু জমি নিবেন নিজেদের পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত জমি ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে পারেন।

সালিশের মাধ্যমে:
নিজেরা বসে জমি ভাগ বাটোয়ারা করা সম্ভব না হলে, যারা ময়মুরুব্বি আছেন তাদের দিয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে জমি ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে পারেন।

উপরের দুই ক্ষেত্রেই যার যার জমি দখলে নিয়ে পৃথক পৃথক নামজারী বা মিউটেশন করে আলাদা খতিয়ান খুলে নিজ নিজ খাজনা পরিশোধ করে পাকাপোক্ত ভাবে জমি ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে পারেন। এছাড়া পারস্পরিক সমঝোতা বা গ্রাম্য সালিশের মধ্য দিয়ে কোন লিখিত বাটোয়ারা হয়, তাহলে সেটি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বাটোয়ারা দলিল রেজিস্ট্রি করে নিতে পারেন। পরবর্তীতে যে কোন সমস্যায় এই দলিল খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
দেওয়ানী আদালতে বাটোয়ারা মামলা করে:
যদি নিজেরা আপসে ভাগ বাটোয়ারা করতে না পারেন তাহলে দেওয়ানী আদালতে বাটোয়ারা মামলা করে আপনাদের জমি ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি যে খতিয়ান নিয়ে মামলা করবেন সে খতিয়ান এর সকল শরিকদের অবশ্যই পক্ষ করতে হবে। বাটোয়ারা মামলায় বাদি এবং বিবাদী একই মর্যাদা সম্পন্ন তাই বিবাদীও তার অংশের জমি বাটোয়ারা চাইতে পারে। বাটোয়ারা মোকদ্দমায় দুই পক্ষের সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যালোচনা করিয়া প্রাইমারি ডিক্রি হয়। প্রাইমারি ডিক্রি অনুসারে বাদী বা বিবাদী চাইলে নিজেরা তাদের জমি ভাগ বাটোয়ারা করে নিতে পারেন।

কিন্তু যদি নিজেরা ভাগ-বাটোয়ারা করতে না পারেন, তাহলে সার্ভে জ্ঞান সম্পন্ন একজন এডভোকেট কমিশনারকে কোর্ট নিয়োগ করবেন, তিনি সরেজমিনে ওই জমি মেপে একটি প্রতিবেদন দিবেন, সেই প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ফাইনাল  ডিক্রি বা চূড়ান্ত ডিক্রি হবে। এবং অ্যাডভোকেট কমিশনারের এই প্রতিবেদন ডিক্রির একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। আপনার যদি বাটোয়ারা  ডিক্রি প্রাপ্ত ভূমিতে দখল না থাকে তাহলে এই ফাইনাল ডিক্রি জারির মাধ্যমে কোট মারফত আপনি আপনার বাটোয়ারা ডিক্রি প্রাপ্ত জমিতে দখলেও যেতে পারবেন।