আদালত হতে সাকসেশন সার্টিফিকেট বা উত্তরাধিকার সনদ কিভাবে পেতে পারেন?

সাকসেশন সার্টিফিকেট বা উত্তরাধিকার সনদ হচ্ছে কোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত এমন একটি সনদপত্র বা প্রমাণপত্র, যেটি একজন মৃত ব্যক্তির বৈধ উত্তরাধিকারী কারা এবং তারা মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি কে কতটুকু পাবে তা বর্ণনা করে।

মনে করুন একজন ব্যক্তি মারা গেছেন এবং তার ব্যাংকে কিছু টাকা গচ্ছিত ছিল। এবার তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী বা সন্তান ওই টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে গেলে ব্যাংক থেকে জানানো হলো যে আদালত হতে সাকসেশন সার্টিফিকেট বা উত্তরাধিকার সনদ লাগবে। এবং সাকসেশন সার্টিফিকেট ছাড়া তারা ঐ টাকা তুলতে পারবে না। সাধারণত কোন ব্যাংক একাউন্ট করার সময় গ্রাহক যদি কোন নমিনি না রাখেন সে ক্ষেত্রে তার উত্তরাধিকারীদের এই সমস্যায় পড়তে হয়। তবে ঘাবড়াবার কোন কারন নাই আপনি আদালত হইতে খুব সহজেই এবং কম সময়ের মধ্যেই সাকসেশন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হবে এবং আইনজীবীর মাধ্যমে যথাযথ আদালতে সাকসেশন সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জন্য মামলা করতে হবে।

কোন কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?

সাকসেশন সার্টিফিকেট মূলত মৃত ব্যক্তির ব্যাংকে জমানো টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে, প্রতিজ্ঞাপত্র, স্টক, সরকারের অন্য কোন জামানত, কোম্পানির শেয়ার, ডিবেঞ্চার এবং সর্বপরি মৃত ব্যক্তির অর্থসংক্রান্ত সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। সাকসেশন এক্ট ১৯২৫ এর ধারা ৩৭০ হতে ৩৮৯ তে সাকসেশন সার্টিফিকেট এর ব্যাপারে বলা আছে। তবে সাকসেশন সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জন্য ৩৭২ ধারায় মামলা করতে হয়। এবং ৩৭২ ধারায় মামলা করার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় সীমা নাই।

কোন আদালতে মামলা করবেন?

উত্তরাধিকার সনদ প্রাপ্তির জন্য জেলা জজ আদালতে মামলা করতে হয় বা জেলা জজ সাহেব যদি অন্য কোনো আদালতে এই ক্ষমতা ডেলিগেট করে থাকেন তাহলে সেই আদালতে মামলা করতে হয়। যেমন খুলনাতে সাকসেশন সার্টিফিকেট এর মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য সাব জজ প্রথম আদালতকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আর আপনার আবেদন যদি কোনো কারণে খারিজ হয়ে যায় তাহলে আপনি হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করতে পারবেন।

কিভাবে আদালতে মামলা করবেন?

মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীরা সকলে বা তাদের পক্ষে একজন সাকসেশন সার্টিফিকেট মামলা আইনজীবীর মাধ্যমে দায়ের করতে পারবেন। সাকসেশন সার্টিফিকেট মামলার আরজিতে অবশ্যই মৃত ব্যক্তি কত তারিখে, কোন কারনে মারা গেছেন এবং তিনি কোন ব্যাংকে, কোন একাউন্টে, কত টাকা রেখে গেছেন এবং মৃত ব্যক্তি কোন উইল করে জান নাই বা কারো বরাবরে সম্পত্তি বন্টন করিয়া যান নাই এই বিষয়গুলি থাকতে হবে। তাছাড়া সাকসেশন সার্টিফিকেট প্রাপ্তির মামলায় অবশ্যই মৃত ব্যক্তির মৃত্যু সনদ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশদের জাতীয় পরিচয় পত্র ইত্যাদি কাগজপত্র আদালতে দাখিল করতে হবে। আদালত আবেদনকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করবেন। এবং কাগজপত্র ও সকল বিষয় পর্যালোচনা করিয়া আবেদনটি মঞ্জুর করলে কোর্ট ফি দাখিল এর জন্য আদেশ দিবেন। আর কোর্ট ফি দাখিল করলে সনদ ইসু করবেন।

কোর্ট ফি এর পরিমাণ:

সাকসেশন সার্টিফিকেট মামলায় দাবীকৃত অর্থের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হলে কোন কোর্ট ফি লাগে না। তবে দাবীকৃত অর্থের পরিমাণ ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত  ১% কোর্ট ফি দিতে হয়। আর দাবিকৃত টাকা ১ লক্ষ বা তদুর্ধ যে কোন টাকার ক্ষেত্রে ২% কোর্ট ফি জমা দিতে হবে। সাকসেশন সার্টিফিকেট বা উত্তরাধিকার সনদ সাধারণত দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যেই পাওয়া যায়।