জীবনে হাসি-খুশি থাকার উপায়।
সুখ প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা। হাসি-খুশি জীবন কে না চায়? কিন্তু কিভাবে খুশি থাকা যায়? আমাদের চারপাশেই দেখবেন কিছু মানুষ আছে, যারা সব সময় হাসি-খুশি থাকে।
তাদের হাসি-খুশি থাকতে নাতো টাকার প্রয়োজন আছে না আছে সম্পদের। কেউ নিজের জন্য করে আনন্দ পায় আবার কেউ অন্যকে সাহায্য করে আনন্দ পায়।
জীবনে হাসি-খুশি থাকার জন্য খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় না। আপনি চাইলে খুব সহজেই সব সময় হাসি-খুশি থাকতে পারেন।
তাহলে জেনে নিন, জীবনে হাসি-খুশি থাকার উপায় সম্পর্কে-
ব্যায়াম করুন:
ব্যায়াম শুধু আপনার শরীরের জন্য নয়। নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক চাপ, উদ্বেগের অনুভূতি এবং বিষণ্নতা কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়াম ভালো হরমোনগুলির নিঃসরণ বাড়ায়।
নিউরোফর্মাকোলজিতে ২০১৫ সালের একটি সমীক্ষা দেখিয়েছে যে, দৌড়ানোর ফলে কিছু আসক্তিযুক্ত ওষুধের মতো মস্তিষ্কে একই ধরণের নিউরো-রাসায়নিক অভিযোজন ঘটে।
দৌড়ালে মস্তৃষ্কে এনডোর্ফিন, ডোপামিন, সেরোটোনিনের মতো ভালো অনুভূতি তৈরির রাসায়নিক নিঃসরণ বাড়ে। ফলে মন-মেজাজ ভালো থাকে, রাতে ঘুম ভালো হয়।
নিজের কাজকে সেরা ভাবুন:
অনেকেই আছেন, যারা নিজের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নন। সবসময় নিজের কাজকে ছোট মনে করেন। অন্যের সঙ্গে নিজের কাজের তুলনা করে মন খারাপ করেন।
দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখুন:
বেশি বেশি গান শুনুন, ঘুরতে যান দেখবেন দুশ্চিন্তা দূর থাকবে। ধনী, গরিব, ছোট, বড় সকলের জীবনেই কোনো না কোনো সমস্যা থাকে।
তাই সমস্যা নিয়ে না ভেবে তা ঠাণ্ডা মাথায় সহজভাবে নিন এবং ধীরে ধীরে একটি করে সমস্যার সমাধান করুন। দেখবেন কোনো সমস্যাই আর বড় সমস্যা মনে হচ্ছে না।
নেতিবাচক চিন্তা দূর করুন:
নেতিবাচক চিন্তা করবেন না। নেতিবাচক চিন্তা করে কখনো হাসি-খুশি থাকা যায় না। তাই হাসি-খুশি থাকতে হলে আমাদের নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিন।
কৃতজ্ঞ থাকুন:
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। শুধুমাত্র কৃতজ্ঞ হওয়া মনকে একটি উৎসাহিত করতে পারে বা আনন্দ দিতে পারে।
আপনি কী জন্য সফল, কেন আপনি অন্যের ভালো চান, এ বিষয়গুলো ভাবুন।
ভালো করার বা ভালো থাকার বিষয়গুলো কোথাও লিপিবদ্ধ করে রাখলে শান্তি বোধ করবেন। দেখবেন হাসি-খুশি থাকতে পারছেন।
নিজের মধ্যে সুখ খুঁজুন:
কোন কাজগুলো করে আনন্দ পান, এমন কাজগুলোই বেশি করুন।
সব সময় অন্যের সুখের জন্য কাজ না করে, নিজের পছন্দের কাজটিও মাঝেমধ্যে করার চেষ্টা করুন। দেখবেন হাসি-খুশি থাকতে পারছেন।
পর্যাপ্ত ঘুম:
পর্যাপ্ত ঘুম সুস্বাস্থ্য, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যাবশ্যক। বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্কদের ৭ বা ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়।
আপনার যদি পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, তাহলে কখনোই মন ও শরীর ভালো থাকবে না। কোনো কাজেই মন বসবে না। ভালো করে কোনো কিছুই করতে পারবেন না।
তাই যত কাজ থাকুন না কেন পর্যাপ্ত ঘুম পড়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যকে সাহায্য করুন:
পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি আনন্দ অন্যকে সাহায্য করার মধ্যে। অসহায় কাউকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন।
দেখবেন সাহায্য করার পর নিজের কাছেই খুব ভালো লাগছে। অন্যকে সাহায্য করলে দেখবেন মুখের মধ্যে হাসির আভা ছড়িয়ে পড়েছে।
নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিন:
অন্যের কথায় নিজের পছন্দকে বিসর্জন দেবেন না। সবসময় নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দেবেন।
সব সময় যদি অন্যকে খুশি রাখতে গিয়ে নিজের খুশি হারিয়ে ফেলেন তাহলে নিজে খুশি থাকতে পারবেন না। তাই নিজের খুশি বা পছন্দকে গুরুত্ব দিন।
শক্তির ওপর দৃষ্টি দিন:
নিজের শক্তি খুঁজে বের করে সে শক্তিকে কাজে লাগান। দেখবেন সবকিছুতেই আপনি ভালো করতে পারছেন।
সব কাজে সাফল্য আসলে মনটা এমনিতেই বেশি হাসি-খুশি হয়ে যায়।
হাসি-খুশি থাকুন:
আপনি যখন কোন কিছু নিয়ে খুশি হন তখন আপনি হাসতে থাকেন। হাসির ফলে মস্তিষ্ক ডোপামিন নিঃসরণ করে, যা আমাদের সুখী করে।
আমরা সবাই চাই ভালো থাকতে। কারণ ভালো থাকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাসি-খুশি থাকা। যিনি যতটা হাসি-খুশি দিন শেষে তিনি ততটাই সুখী।
হাসি-খুশি থাকলে অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগ কমিয়ে মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।