গর্ভাবস্থায় কিউই ফল খাওয়ার উপকারিতা।

গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনের শ্রেষ্ট সময়। তাই এই সময় সব কিছুতে গর্ভবতী মায়ের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হয়।

বিশেষ করে খাবারের দিকে একটু বেশি নজর দিতে হয়। কোন খাবার খেলে সহজেই হজম হবে, বমি বমি ভাব সৃষ্টি হবে না ইত্যাদি।

আজ আমরা গর্ভবতী মায়েদের জন্য এমন একটি খাবার সম্পর্কে আলোচনা করবো, যে খাবারটি খেলে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না এবং পাশাপাশি গর্ভের বাচ্চার জন্যও খুব উপকারী।

গর্ভাবস্থায় কিউই ফল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ফল।

কিউইতে ভিটামিন “সি” ছাড়াও ভিটামিন “ই”, ভিটামিন “কে” এবং প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ফোলেট রয়েছে।

এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভালো।

গর্ভাবস্থায় কিউয়ি খাওয়ার উপকারিতা

কিউই বা চাইনীজ গুজবেরী হল একটি রসালো সবুজ ফল, যা অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী।

কম মাত্রায় শর্করা ও ফ্যাট এবং উচ্চ ভিটামিন “সি” ও “এ” সমৃদ্ধ কিউই হল গর্ভাবস্থায় সেবনের জন্য একদম আদর্শ একটি ফল।

আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক, গর্ভবতী মহিলাদের কিউই ফল সেবনের কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে-

উচ্চ ফোলেট সমৃদ্ধ:

ভ্রূণের জ্ঞানীয় বিকাশের ক্ষেত্রে ফোলেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর মস্তিষ্কের পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে।

ফোলেট স্বাস্থ্যের জন্য, সুস্থ্য লাল রক্তকণিকা তৈরি করতে এবং গর্ভাবস্থায় একটি ভ্রূণের নিউরাল টিউব ত্রুটি রোধে সহায়তা করে।

১০০ গ্রাম কিউইতে ৭% ফোলেট থাকে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে:

গর্ভাবস্থায় একটি স্বাভাবিক সমস্যা হল কোষ্ঠকাঠিণ্য। ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব, পেটের অস্বস্তি, পেট ব্যথা এবং গ্যাসট্রাইটিসের মত সমস্যাগুলির প্রতিরোধে সহায়তা করে কিউই।

এই ফলটি অন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখে। কিউই ফাইবার সমৃদ্ধ, ফাইবার প্রাকৃতিকভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

ভিটামিন এবং খনিজের সমৃদ্ধ উৎস:

কিউই ফল ভিটামিন “এ”, “বি”৬, “বি”১২, “ই”, এবং পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ যা শরীরের রক্ত ​​সঞ্চালন, স্ট্রেস কমানো, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি, মজবুত হাড় এবং দাঁত গঠন করে।

ভিটামিন “সি” এর উচ্চ উৎস:

কিউই ভিটামিন “সি”-তে ব্যতিক্রমীভাবে বেশি।

২০১২ সালের একটি গবেষণায় ১৫ জন পুরুষের মধ্যে যাদের ভিটামিন “সি”-এর মাত্রা কম ছিল প্রতিদিন দুটি কিউই খাওয়ার ফলে ভিটামিন “সি” এর অভাব দূর হয়েছিল।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ৪ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন দুটি কিউই খাওয়ার ফলে ভিটামিন “সি”-এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

এবং যাদের মধ্যে ভিটামিন “সি”-এর মাত্রা কম ছিল তাদের মধ্যে নিউট্রোফিল নামক ইমিউন কোষের কার্যকারিতাও উন্নত হয়।

নিউট্রোফিল হল শ্বেত রক্তকণিকা যা রোগজীবাণু এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।

কিউইয়ের মতো ভিটামিন “সি” সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া সর্বোত্তম প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।