পোড়া ক্ষত সারানোর প্রাকৃতিক উপায়।
পোড়া একটি সাধারণ গৃহস্থালির আঘাত যা অসতর্কতার কারণে ঘটে থাকে। বিভিন্ন কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পুড়ে যেতে পারে। যেমন গরম ভাতের মাড়, গরম তেল, আগুন ইত্যাদি। পোড়ার মাত্রা অধিক হলে ক্ষত সৃষ্টি হয়, ফলে অস্বস্তিকর ব্যথা এবং জ্বালাভাব তৈরি হয়।
ছোটখাটো পোড়ার চিকিৎসা বাড়িতেই করা যায়। এছাড়া হালকা পোড়া সম্পূর্ণরূপে নিরাময়ে সাধারণত ১-২ সপ্তাহ সময় নেয় এবং সাধারণত দাগ সৃষ্টি করে না।
আর কিছু কিছু পোড়ার ফলে ক্ষত হয়, এসব ক্ষত সারাতে নিচে কয়েকটি প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো:
ঠান্ডা জল ও কুল কম্প্রেস:
পোড়া ক্ষত সারানোর প্রাকৃতিক উপায় হিসাবে ঠান্ডা জল ও কুল কম্প্রেস খুবই কার্যকরী।
২০ মিনিটের জন্য পোড়া জায়গায় ঠান্ডা জল লাগান। তারপর পোড়া জায়গায় অ্যান্টিসেপটিক সাবান দিয়ে হালকা করে ধুয়ে ফেলুন।
এছাড়া কুল কম্প্রেস পোড়া জায়গায় ব্যবহার করলে ব্যথা এবং ফোলা ভাব উপশম হবে। আপনি ৫-১০ মিনিটের ব্যবধানে কুল কম্প্রেস প্রয়োগ করতে পারেন।
অতিরিক্ত ঠান্ডা কম্প্রেস ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন কারণ অতিরিক্ত ঠান্ডা কম্প্রেস পোড়াকে আরও জ্বালাতন করতে পারে।
ঘৃতকুমারী:
অ্যালোভেরা অনেক ক্রিম, সানস্ক্রিন এবং ময়েশ্চারাইজারের একটি সাধারণ উপাদান। এর জেল ফর্মটি হলো পোড়ার চিকিৎসা এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার।
ঘৃতকুমারী উদ্ভিদ একটি প্রাকৃতিক প্রদাহ বিরোধী, ভাল সঞ্চালন প্রচার করে। এটিতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে।
মধু:
মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল। যা পোড়া ক্ষত সারানোর খুব কার্যকরী উপায়।
একটি ব্যান্ডেজে মধু লাগিয়ে পোড়া জায়গার উপর কিছু সময় রাখলে জায়গাটি জীবাণুমুক্ত হবে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করবে। এছাড়া মধু পোড়া ত্বককে প্রশমিত করে ও ব্যথা দূর করে।
টি ব্যাগ:
কালো চায়ে ট্যানিক অ্যাসিড থাকে, যা পোড়া ক্ষত থেকে তাপকে কম বেদনাদায়ক করতে সাহায্য করে।
এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে শীতল ২-৩টি টি ব্যাগ পোড়া জায়গায় ব্যান্ডেজ বা গজ এর ভিতর রেখে ব্যবহার করতে হবে।
কয়েক ঘণ্টা পর পর পরিবর্তন করে দিতে হবে। এতে আপনার পোড়া ক্ষতটি দ্রুত নিরাময় হবে।
পুদিনা পাতা ও টুথপেস্ট:
পোড়া ক্ষত সারানোর প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায় হিসেবে পুদিনা পাতা ও টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। পুদিনা পাতা বেটে ও টুথপেস্ট দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করতে পারেন।
তারপর পোড়া জায়গায় ভালো করে লাগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে দিতে পারেন। এতে আপনার পোড়া ক্ষত জায়গাটি ঠান্ডা হয়ে যাবে এবং ব্যথা কমতে থাকবে।
ভিনেগার:
এতে অ্যাসিটিক অ্যাসিড রয়েছে, যা ব্যথা, চুলকানি এবং পোড়ার প্রদাহ উপশম করতে সহায়তা করে।
এটি একটি অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যাস্ট্রিনজেন্টও, তাই এটি আপনার পোড়াকে সংক্রামিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
ভিনেগার পোড়া থেকে তাপ টেনে নেয়, তাই স্বাভাবিকভাবে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে তুলা বা নরম কাপড়ে ভিনেগার লাগিয়ে পোড়া ক্ষত জায়গায় ভালোভাবে লাগাতে হবে।
দুধ:
দুধের চর্বি এবং প্রোটিন উপাদান পোড়ার ক্ষত সারাতে খুবই কার্যকরী। পোড়া ক্ষত সারানোর জন্য পোড়া ক্ষত জায়গাটি ১০-১৫ মিনিটের জন্য দুধে ভিজিয়ে রাখুন।
পূর্ণ-চর্বিযুক্ত, সম্পূর্ণ-দুধের দই আপনার শুকনো ত্বককে ঠান্ডা এবং হাইড্রেট করতে সাহায্য করবে। ফলে আপনার পোড়া ক্ষত জায়গাটি খুব দ্রুত সেরে উঠবে।