অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ কি?
উজ্জ্বল-সুন্দর চুলের অধিকারী হতে চান সবাই। কিন্তু অকালে চুল পড়া, সেই প্রত্যাশিত স্বপ্নের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। চুল ঝরে যাওয়ার এই প্রকট সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে, আপনাকে জানতে হবে বেশ কিছু বিষয়।
তরুণদের কাছে চুল পড়া এক বিরাট আতংকের নাম। চুল পড়া নিয়ে বেশিরভাগ মানুষই অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন।
চুল পড়া একটা স্বাভাবিক বিষয়। তবে অতিরিক্ত হারে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিলে এর কারণ খুঁজে বের করা প্রয়োজন।
চুল পড়ার কারণ
আসুন জেনে নেই, চুল পড়ার আসল কারণগুলি কি কি :
ভিটামিন ও মিনারেলস এর অভাবে :
অপুষ্টি বা দেহে ভিটামিন ও মিনারেলস এর অভাবে মূলত চুল পড়ার প্রধান কারণ। খাদ্য গ্রহনের সময় যদি আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করা না হয়, তবে তা শরীরের ঘাটতি পূরণ করতে পারবে না, ফলে অন্য সব কিছুর মতো চুলের গোড়াও দুর্বল হয়ে যাবে। যার ফলে দেখা দিবে চুল পড়া।
হরমোনজনিত কারণ :
অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন যেমন টেস্টোস্টেরন, অ্যান্ড্রোস্ট্রেনডিয়ন, ডিএইচটি হরমোনগুলো সাধারণত পুরুষের বেশি ও মহিলাদের কম পরিমাণে থাকে। এ হরমোনগুলো হেয়ার ফলিকলের ওপর কাজ করে ও চুল পড়া ত্বরান্বিত করে।
সে কারণে পুরুষের চুল বেশি পড়ে। তবে সবারই যে পড়বে তা নয়, যাদের এসব হরমোনের প্রভাব বেশি তাদের বেশি করে চুল পড়ে।
মানসিক চাপ ও মাদকাসক্তি :
মানসিক চাপ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের স্বল্পতার সৃষ্টি করে চুল দুর্বল করে ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, অনেকদিন ধরে মানসিক চাপে ভুগলে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। মানসিক চাপে থাকলে ঠিকমতো খাবার খাওয়া হয় না, যার ফলে দেখা দেয় চুল পড়ার সমস্যা।
অ্যালকোহল, ড্রাগস এসবের আসক্তি আপনার মাথার মূল্যবাণ চুলগুলোকে অসময়ে কেড়ে নিতে পারে। এমনিতেই এসবের কুফল অনেক। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও প্রচুর।
ওষুধ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও খুশকি :
ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকেও চুল পড়তে পারে, তবে তা বেশিদিন থাকেনা ৷ ওষুধ বন্ধ করে দিলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন চুল গজায় ৷ ক্যানসার রোগীদের কেমোথেরাপি দেওয়ার পর পুরো মাথার চুল পড়ে গেলেও সেই জায়গায়ই কিছুদিন পরে আবার নতুন চুল ওঠে ৷
চুল পড়ার প্রত্যক্ষ কারণের একটি হলো খুশকি। অ্যালার্জি বা চর্মরোগ থাকলে এটা আরো বেশি হয়। খুশকি চুলের গোড়া দুর্বল করে দেয়। যার ফলে চুল খুব সহজেই ঝরে পড়ে।
দূষণ ও জেনিটিক্যাল কারণে :
ধুলা ও ক্ষতিকারক উপাদান মাথার ত্বককে আক্রান্ত করে এবং চুলের প্রোটিনে ক্ষতি সাধন করে। বায়ু দূষণ চুল পড়া, অকাল্পক্কতা ও অকালে চুল ঝড়ে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি করে।
বংশে আপনজনদের কারো এই সমস্যা থাকলে উত্তরাধিকার সূত্রেও আপনি হতে যেতে পারে এই সমস্যা। দেখা যায় বাবা/চাচাদের টাক মাথার ইতিহাস থাকলে পরবর্তী প্রজন্মেরও বয়স বাড়লে টাক হয়ে থাকে।
শারীরিক পরিবর্তন :
বয়ঃসন্ধি, গর্ভনিরোধক পরিবর্তন, গর্ভাবস্থা, স্তন্যদানকারী মা ও পুষ্টিহীনতা চুল বৃদ্ধির চক্রকে আক্রান্ত করে। যা চুল পড়ার অন্যতম কারণ। সন্তান জন্মদান শরীরের ওপরে অনেক চাপ সৃষ্টি করে। যা চুলের ফলিকলকেও আক্রান্ত করে।
এই চাপ চুলের ফলিকলকে আলগা করে দেয় যার ফলে চুল পড়া শুরু হয়। শারীরিক পরিবর্তন এটা মাথার চুল পড়া শুরু করার অন্যতম কারণ।