ফ্যাটি লিভারের কারণ ও লক্ষণ কি কি?

লিভার বা যকৃৎ আমাদের শরীরের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ। লিভারের অন্যতম কাজ হলো খাবার হজম করা, খাবার থেকে পাওয়া শক্তি সঞ্চয় করা এবং রক্ত থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ ফিল্টার করা।

ফ্যাটি লিভার হেপাটিক স্টিটোসিস (hepatic steatosis) নামেও পরিচিত। লিভারে চর্বি জমে গেলে এটি ঘটে। লিভারে অল্প পরিমাণে চর্বি থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু অত্যধিক পরিমাণে চর্বি স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।

আধুনিক শহরের জীবনযাপনে খাওয়া-দাওয়ার অনিয়মের কারণে আজকাল অনেকেই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হচ্ছেন। অতিরিক্ত মদ্যপান ও খাওয়া দাওয়ার অনিয়ম ফ্যাটি লিভারের অন্যতম প্রধান কারণ। আবার ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হবার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে লিভারে ক্যান্সার হবার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

আজ আমরা ফ্যাটি লিভারের কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে জানবো –

ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ

অনেক ক্ষেত্রে, ফ্যাটি লিভার কোন লক্ষণীয় উপসর্গ সৃষ্টি করে না। কিন্তু আপনি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন অথবা আপনার পেটের উপরের ডানদিকে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করতে পারেন। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক, কি কি লক্ষণ দেখলে আপনি বুঝবেন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত :

  • প্রতিনিয়ত ক্লান্ত বা দুর্বলতা অনুভব করা।
  • ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া। চোখ হলুদ হলে বুঝতে হবে যে লিভার ভালোমতো কাজ করছে না এবং এটি সম্ভবত লিভার ডিজিজ বা যকৃত রোগের উপসর্গ।
  • পেট খারাপ না হওয়া সত্ত্বেও অকারণে মাঝে মধ্যেই পেটে ব্যথা হলে তা ফ্যাটি লিভারের উপসর্গ হতে পারে।
  • খাবার খাওয়ার প্রতি রুচি থাকে না। ক্ষুধা কমে যায়।
  • দ্রুত ওজন হ্রাস পায়।
  • নাক দিয়ে রক্ত পড়া।
  • পা ফুলে যাওয়া বা চুলকানি।
  • পুরুষদের স্তন বৃদ্ধি পায়।
  • ফ্যাটি লিভারের কারণ:

    ফ্যাটি লিভার বিকশিত হয় যখন আপনার শরীর খুব বেশি চর্বি উৎপন্ন করে। অতিরিক্ত চর্বি লিভারের কোষে জমা হয়, যেখানে এটি জমা হয় এবং ফ্যাটি লিভারের রোগ সৃষ্টি করে। অত্যধিক অ্যালকোহল পান অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের রোগ হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কি কি কারণে ফ্যাটি লিভার হতে পারে :

    মদ্যপান করলে:

    অতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদে অ্যালকোহল বা মদ্যপান সেবনে লিভারের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপানের অভ্যাস অকালে লিভার নষ্ট হয়ে যায়। লিভার অ্যালকোহলকে একটি কম বিষাক্ত পদার্থে রূপান্তরিত করার জন্য তার শক্তিকে ডাইভার্ট করে। অ্যালকোহলকে রূপান্তরিত করতে গিয়ে লিভারের প্রদাহ এবং ফ্যাটি লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়।

    দ্রুত ওজন হ্রাস:

    খুব দ্রুত ওজন কমানোর কারণে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হতে পারে। কারণ লিভার হজম প্রক্রিয়ায় প্রধান ভূমিকা পালন করে। প্রয়োজনীয় ডায়েট না পাওয়ায় লিভারের প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়। যার ফলে যাই খাবেন তা সরাসরি চর্বি হিসেবে লিভারে জমা হতে থাকবে।

    ডায়াবিটিসের কারণে:

    ডায়াবিটিসে আক্রান্তদের অর্ধেকের বেশি ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হয়। কারণ, তাদের শরীর গ্লুকোজ ও ফ্যাটি অ্যাসিড সঠিকভাবে পোষণ করতে পারে না। এগুলোর খানিকটা লিভারে চর্বি হিসেবে জমা হয়। যার কারণে তারা ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হন।

    লিভারের কার্যকারিতা কম হলে:

    লিভারের কার্যকারিতা কম হওয়ার কারণে ফ্যাটি লিভার রোগে মানুষ আক্রান্ত বেশি হয়ে থাকে। লিভার যখন ঠিক মতো খাবার হজম করতে পারে না তখনই লিভারে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে থাকে। পরবর্তীকালে তা ফ্যাটি লিভারের সমস্যা সৃষ্টি করে।

    রেফারেন্স: