দূর্বা ঘাস চর্ম রোগে সারাতে ও রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে।
দূর্বা এক ধরণের ঘাস। এটি একটি ওষধি উদ্ভিদ। যার রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। প্রাচীনকাল থেকে কোথাও কেটে গেলে রক্ত পড়া বন্ধ করতে দূর্বা ঘাস ব্যবহার করা হতো।
যেখানে সেখানে অযত্নে বেড়ে ওঠে দূর্বা ঘাস। রক্তক্ষরণ, কেটে যাওয়া বা আঘাতজনিত রক্তপাত বন্ধে, চুল পড়া কমাতে, চর্মরোগ দূর করতে, দন্তরোগ ও আমাশয়ে বেশ উপকারী দূর্বা।
ছোট বেলায় খেলার সময় পরে গিয়ে হাত পা কেটে গেলে দূর্বা ছেঁচে রস বের করে লাগিয়ে দিলে সাথে সাথে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যেত।
দূর্বা ঘাসের বৈজ্ঞানিক বা উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Cynodon dactylon এবং ইংরেজিতে Scutch grass. আয়ুর্বেদীয় মতে দূর্বা ঘাস মহৌষধ।
দূর্বা ঘাসের উপকারিতা
নিচে দূর্বা ঘাসের বিভিন্ন গুণাগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –
রক্তশূণ্যতা দূর করে:
দূর্বা রক্তশূণ্যতা দূর করে। কারণ দূর্বা বেটে রস খেলে রক্তশূণ্যতার সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
এছাড়া রক্ত পরিষ্কারক করে এবং চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পায়। এজন্য খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটা ভালো।
চর্ম রোগে সারাতে:
দূর্বা ঘাসের রয়েছে বিভিন্ন ঔষধি গুণাগুণ। যেমন এর এন্টিসেপটিক এবং এন্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা চর্মরোগ সারাতে সহায়তা করে।
যেমন চামড়ায় লাল লাল ফুসকুড়ি, চুলকানি, ঘা পাঁচড়া, একজিমা ইত্যাদি প্রতিরোধে দূর্বা ঘাস উপকারী।
রক্তপাত বন্ধ করতে:
প্রাচীনকাল থেকে কোনও স্থান কেটে গেলে রক্ত বন্ধ করতে দূর্বা ঘাস ব্যবহার করা হয়। কয়েকটি দূর্বা ঘাস হাতের তালুতে পিষে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
কাটা স্থান জোড়া লাগে এবং শুকিয়ে যায়। তবে দূর্বার শিকড় ব্যবহার করলে বেশী উপকার পাওয়া যায়।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া:
নাক দিয়ে রক্ত পরতে থাকলে দুর্বা ঘাসের রসের সঙ্গে কাঁচা দুধ মিশিয়ে খাওয়ালে এই রোগের উপশম হয়।
চুল পড়া প্রতিরোধে:
দূর্বা ঘাস চুল পড়া বন্ধ করে। পরিমাণ মতো নারিকেল তেল জ্বাল দিয়ে তার সাথে দূর্বার টাটকা রস মিশিয়ে আবার জ্বাল দিন।
চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে গোসলের ১ ঘণ্টা আগে ওই তেল চুলে মাখুন।
বমি বমি ভাব বন্ধে:
বমি ভাব বন্ধের জন্য দূর্বার ২-৩ চামচ রসের সাথে ১ চামচ চিনি মিশিয়ে খেতে হবে। এবং বমি ভাব কেটে গেলে খাওয়া আবার বন্ধ করে দিতে হবে।
দাঁতের সমস্যায়:
যারা দাঁতের সমস্যায় ভুগছেন তারা দুর্বা ঘাস নিয়মিত চিবান অথবা শুকিয়ে গুড়ো করে সেই গুড়ো দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজুন। দেখবেন দাঁতের সমস্যা ঠিক হয়ে গেছে।
আমাশয় প্রতিরোধে:
আমাশয়ে দূর্বা ঘাসের রস ২ থেকে ৩ চামচ ৩ থেকে ৪ বার খান। আমাশয় ভালো হয়ে যাবে। এছাড়া ডায়ারিয়াও কমাতে সাহায্য করে।
ঋতুস্রাবের সমস্যায়:
যেসব মেয়েদের ঋতুস্রাবের সমস্যা আছে তাদের ২-৩ চামচ দূর্বা ঘাসের রস মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ১০-১৫ দিন খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
উল্লেখিত পরামর্শগুলো মেনে চলার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেয়া ভাল।