দাঁতের মাড়ি সুস্থ্য রাখার উপায়।
আমরা যখন মুখের স্বাস্থ্যের কথা বলি তখন প্রথমেই দাঁতের স্বাস্থ্যের কথা সামনে আসে। স্বাস্থ্যকর সুন্দর দাঁত সুন্দর হাসি তথা মুখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই দাঁত যে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে সেটা হলো মাড়ি। মাড়ি শক্ত না থাকলে দাঁতের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা কষ্টকর।
দাঁতের গোড়া ক্ষয় হয়ে মাড়ি ফুলে ব্যথা হওয়া যে কতটা কষ্টের এটা যার হয় সে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে। এই অসহনীয় কষ্ট অনেকের পক্ষে সহ্য করা কঠিন হয়। এজন্য আগে থেকে নিয়মিত দাঁত ও মাড়ির যত্ন নিয়ে এ অবর্ণনীয় কষ্ট থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি।
মাড়ির রোগ কি?
মাড়ির রোগ শুরু হয় যখন দাঁতের নিচে প্লেগ জমতে শুরু করে। প্লেগ একটি আঠালো, ফ্যাকাশে হলুদ বর্ণের পদার্থ যা ব্যাকটিরিয়ায় পূর্ণ। এটি মাড়িতে সংক্রমণ ঘটায় ফলে দাঁত ক্ষয় এবং মাড়ির রোগ দেখা দেয়।
মাড়ির রোগর লক্ষণ:
- নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ
- দাঁতের গোড়া নড়ে যাওয়া
- মাড়ি থেকে সহজে রক্ত পড়া
- মাড়ি ফুলে লাল হয়ে যাওয়া
- খাবারের স্বাদ না পাওয়া
মাড়ির রোগ প্রতিরোধযোগ্য। নিচে মাড়ি সুস্থ্য রাখার কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো –
নিয়মিত ফ্লস করুন:
দিনে অন্তত একবার ফ্লস করুন। এটি আপনার ব্রাশের নাগালের বাইরে থাকা প্লেগ এবং খাবারের কণা সরাতে সহায়তা করে। এটি দিনে একবার করা ভালো।
ধূমপান ত্যাগ করুন:
মাড়ির রোগের সাথে ধূমপানের বেশ বড় সম্পর্ক রয়েছে। ধূমপান যেহেতু আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে, তাই মাড়ির সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়াও, ধূমপান আপনার মাড়ির ক্ষতি হওয়ার পরে আরোগ্য লাভের পথ কঠিন করে তোলে।
দিনে দুই বার ব্রাশ করুন:
দিনে দুইবার দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করুন। এটি আপনার দাঁত এবং মাড়ির মধ্যে আটকে থাকা খাবার এবং দাঁতের প্লেগ সরাতে সহায়তা করবে। আপনার জিহ্বাকেও স্ক্রাব করুন, কারণ জিহ্বাতে ব্যাকটেরিয়া জমে থাকতে পারে।
ফ্লুরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করুন:
টুথপেস্ট হিসাবে স্বাস্থ্যকর মাড়ির জন্য কোনটি সেরা তা আপনি কীভাবে জানবেন? এমন টুথপেস্ট ব্যবহার করুন যেটা ফ্লুরাইড সমৃদ্ধ এবং সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা অনুমোদিত।
ভেষজ মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন:
ভেষজ মাউথ ওয়াশগুলি প্লেগ হ্রাস করতে, জিঞ্জিভাইটিস প্রতিরোধ সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও এটি আপনার মুখ থেকে খাবারের কণা সরিয়ে ফেলতে সহায়তা করে। যদিও এটি ফ্লসিং বা ব্রাশ করার বিকল্প নয়।
মাঝে মাঝে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন:
নিয়মিত ভিত্তিতে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিলে মাড়ির রোগের লক্ষণ গুলি আগে থেকে শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাড়ির রোগের লক্ষণগুলি গুরুতর হওয়ার আগে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।
মাড়ি ক্ষয় হয়ে দাঁত উঠে গেলে মুখের গঠনই নষ্ট হয়ে যায়। মাড়ির ঠিক মত যত্ন না নিলে কোন না কোন সময় সমস্যা হবেই। প্রতিকারের চেয়ে যেহেতু প্রতিরোধ ভালো, এজন্য আসুন আমরা দাঁত ও মাড়ির যত্ন সচেষ্ট হই।