শীতকালে বিয়ে করলে সুবিধা কি?

শীতকাল চলে এসেছে মানে বিয়ের মৌসুম চলে এসেছে। অনেকেই শীতকালকে বিয়ের জন্য উপযুক্ত সময় হিসাবে মনে করেন। আসলে বিষয়টাও অনেকাংশে সত্যি।

কারণ শুধু একটা বিষয় যেমনঃ আবহাওয়ার বিষয়টা অর্থাৎ গরম, ঝড়, নিম্নচাপ, বৃষ্টি-এগুলোর ভোগান্তি শীতকালে থাকেনা বললেই চলে। আরো অনেকগুলো বিষয় রয়েছে যেগুলো আমরা নিম্নে আলোচনা করবো।

শীতের শুরু থেকেই বিয়ের ধুম পড়ে যায়। কখনো কি ভেবে দেখেছেন, কেন শীতে এতো বিয়ের ধুম পড়ে? শীত এলেই চারপাশে বিয়ের এতো আয়োজনের রয়েছে দারুণ কিছু রহস্য।

বন্ধুরা, চলুন তবে জেনে নেয়া যাক রহস্যের পেছনের কারণ-

ছুটিঃ

বেশিরভাগ স্কুলে নভেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। ডিসেম্বরে শুধু রেজাল্ট ঘোষণা। তাই গোটা ডিসেম্বর মাস জুড়ে স্কুল প্রায় বন্ধ থাকে।

এই সময় ছেলে-মেয়েদের ছুটির সাথে ছুটি মিলিয়ে গার্ডিয়ানরাও বেড়াতে যেতে পারেন। আর এই সুযোগেই সব আত্মীয়-স্বজনও একত্রিত হতে পারেন।

বছরের অন্যান্য সময় সবাইকে একত্রে পাওয়া এমন সহজ হয় না। তাই বিয়ের জন্য বেশিরভাগ মানুষ শীতকালই বেছে নেন।

খাওয়া দাওয়াঃ

পোলাও, বিরিয়ানী, রোস্ট, রেজালা, মাংসের চপ, বেগুনি -অতিরিক্ত তেল, মশলাযুক্ত খাবার গরমে খেতে গেলে আপনাকে একটু হলেও ভাবতে হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানে এগুলো তো একেবারে কমন। খাবারের মেন্যুতে এগুলো একেবারে চিরচেনা হয়ে উঠেছে। গরমের সময়ে খেতে হয় রয়ে-সয়ে।

খাবারে একটু এদিক-সেদিক হলেই পেটের ভেতর গুড়গুড় শুরু হয়ে যায়। কিন্তু শীতকালে সেই চিন্তা নেই। 

সাধারণতঃ শীতকালে আমরা যেমন নলেন গুড়ের তৈরি হরেক রকমের পিঠা খেয়ে পেট ভরি তেমনি বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠানেও খাই একেবারে কবজি ডুবিয়ে। তাই বিয়ের জন্য শীতকালই উপযুক্ত সময়।

শীতকালে খাবার সংরক্ষণের কোনো চাপ বা টেনশন থাকে না। রান্না করা খাবার সহজে নষ্ট হয় না।

কিন্তু গরমকালে খাবার পরিবেশন করতে দেরি হলে বা আগেভাগে করা রান্না নষ্ট হয়ে যাবার ভয় থাকে শুধু নয়, নষ্ট হয়েও যায়।

খাটা-খাটনিঃ

গরমের সময় অধিক পরিশ্রম করা যাই না। অধিক শীতে পরিশ্রম করলে শীতের অনুভূতিটা অনেকটা কমে যায়। অতিরিক্ত গরমে শরীর থেকে প্রচন্ড ঘাম ঝরে আর অধিক ঘাম ঝরা মানে পানিশুন্যতা। 

কিন্তু শীতে সেই ভয় একদমই নেই। বরং কাজ করলে জবুথবু, জড়তা ও অলসতা ভাবটা কাটে। বিয়েতে কাজ করার লোকের অভাব হয় না।

সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে দিতে আগ্রহী থাকে। তাই এসময় বিয়ের ধুম পড়ে যায়।

ফুলের সাজঃ

ফুল ছাড়া বিয়ের কথা আমরা ভাবতেই পারিনা। আর কে না জানে, শীত মানেই ফুলে ফুলে রঙিন চারদিক। হাত বাড়ালেই ফুল আর ফুল।

অনেকেরই বাড়ির উঠান গাঁদা ফুলে ভরা থাকে।

ফুলের সহজলভ্যতা বিয়ের উৎসবকে আরো বেশি জমকালো আর অভিজাত করে তোলে। ফুলের রঙ আর গন্ধে মন ভালো হয়ে যায় সবার।

সাজঃ

বিয়েতে বর-বউ দুজনকেই সাঁজতে হয়। বরের সাজ নিয়ে খুব বেশি মাথা ব্যথা না হলেও চলে কিন্তু কনের সাজ? বিয়ের সাজে কনেকে দেখতে সবার থেকে সুন্দর লাগা চাই।

আর তাইতো মনের মতো করে সাজতে চান প্রত্যেক কনেই।

কিন্তু গরমের সময়ে তা কতটুকু সম্ভব? যত দামি প্রসাধনীই ব্যবহার করা হোক না কেন, গরমে ঘেমে সব নষ্ট হবে। আর শীতে? যত খুশি সাজুন, নষ্ট হওয়ার এতটুকু ভয় নেই।

হানিমুনঃ

পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে, সর্বদা ভ্ৰমণের সেরা মৌসুম কখন তা নিয়ে বিতর্ক হয়।

তবে ভালো-মন্দ মিলিয়ে শীতকালই বেড়ানো বা ঘোরাঘুরির জন্য সবথেকে উপভোগ্য ও পছন্দের ভোটে এগিয়ে থাকে।

নতুন বিবাহিত দম্পতির বিবাহের পরে একসাথে ছুটি কাটানোর অর্থাৎ হানিমুনের জন্য সবথেকে ভালো সময় এটি। তাই এসময় বিয়ে এবং এর পরে হানিমুনে ঘোরাঘুরিটা জমে বেশ।

পরস্পরের পাশাপাশি থেকে উষ্ণতাও ভাগাভাগি, সেই সুযোগে সঙ্গীকে চিনে নেয়া, জেনে নেয়া। তাই বিয়ে এবং হানিমুনের জন্য শীতের সময়টাই উপযুক্ত।