কোন ব্যায়ামগুলি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কার্যকরী।

ব্যায়াম প্রিডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ডায়াবেটিসের বিকাশ রোধ করতে সাহায্য করতে পারে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন (ADA) লোকেদের প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট ব্যয়াম করতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত ব্যায়াম করলে রক্তের শর্করার মাত্রা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করবে। ব্যায়াম আপনাকে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি ও কার্ডিওভাসকুলারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

ব্যায়াম ঔষধের চেয়ে অনেক বেশি উপকারী। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, ডায়াবেটিসের ফলপ্রদ ঔষধ এর চেয়ে ব্যায়াম রক্তের গ্লকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বেশি কার্যকর। তাই নিচে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কয়েকটি কার্যকরী ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

হাঁটা:

নিয়মিত হাঁটা টাইপ-2 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

এছাড়া হাঁটা ডায়াবেটিস এর পাশাপাশি পেটের মেদ কমাতেও সহায়ক। সপ্তাহে ৭ দিন দ্রুত ৩০ মিনিট হাঁটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই কার্যকরী।

২০১৪ সালের একটি পর্যালোচনা অনুসারে, হাঁটা টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।

সাইকেল চালানো:

আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকেন তাহলে সাইকেল চালানো ব্যায়ামটি আপনার জন্য খুবই উপকারী হবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে, হৃদযন্ত্র ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং বাতজনিত ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যায়ামের জুড়ি নাই।

এছাড়া সাইকেল চালানো শরীরের জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে খুবই কার্যকরী।

সাঁতার কাটা:

নিয়মিত সাঁতার কাটার ফলে মাংসপেশি শক্তিশালী হয়, সহনশীলতা বাড়ে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।

সপ্তাহে ৭ দিন ৩০ মিনিট করে সাঁতার কাটা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী। সাঁতার শরীরের সকল অঙ্গের ব্যায়াম এর কাজ করে।

তাই সাঁতার শরীরের জন্য ভালো।

একটি ২০১৭ পর্যালোচনা থেকে পাওয়া গেছে যে পানির ব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

যোগব্যায়াম:

একটি ২০১৬ পর্যালোচনা অনুসারে, যোগব্যায়াম টাইপ 2 ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে শর্করা, কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।

যোগব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে, ঘুমের মান উন্নত করতে এবং মেজাজ উন্নত করতে সাহায্য করে।

নাচ:

নাচ মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে।

যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য, এটি শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ানো, ওজন কমানো, নমনীয়তা উন্নত করা, রক্তে শর্করার হার কমানো এবং রক্তচাপ কমানোর একটি কার্যকরী উপায়।

৩০ মিনিট নাচ করার মাধ্যমে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ১৫০ ক্যালোরি নষ্ট করতে পারে।

সিঁড়ি আরোহণ:

সিঁড়ি আরোহণ ব্যায়াম হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুসকে দ্রুত কাজ করার একটি স্বাস্থ্যকর এবং সহজ উপায়। বিশেষ করে যদি আপনার টাইপ 2 ডায়াবেটিস থাকে।

খাবার খাওয়ার ১-২ ঘন্টা পরে ৩ মিনিটের জন্য সিঁড়ি বেয়ে উপরে ও নিচে যাওয়া রক্তে শর্করাকে বার্ন করার একটি ভাল উপায়।

পাইলেটস:

পাইলেটস (Pilates) হলো একটি জনপ্রিয় ফিটনেস প্রোগ্রাম যা মূল শক্তি, সমন্বয় এবং ভারসাম্য উন্নত করার জন্য ডিজাইন করা হয়।

টাইপ 2 ডায়াবেটিসসহ বয়স্ক মহিলাদের একটি সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, এটি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ উন্নত করতে সাহায্য করে।

এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কার্যকরী ফিটনেস প্রোগ্রাম।

দলগত খেলা:

আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত থাকেন এবং একা খেলতে ভালো না লাগে তাহলে দলগতভাবে খেলতে পারেন। দলগতভাবে খেললে আপনার সময়টা ভালো কাটবে।

দলগতভাবে বাস্কেটবল, ক্রিকেট, ফুটবল, জোড়া টেনিস ইত্যাদি খেলা খেলতে পারেন। এগুলি আপনার শরীর ও মন ভালো রাখতে সাহায্য করবে।

রেফারেন্স: