ডায়াবেটিস হলে আমি কি পাকা আম বা মিষ্টি আম খেতে পারি?
গ্রীষ্মের রসালো, মিষ্টি ও সুঘ্রাণযুক্ত পাকা আম কে না খেতে পছন্দ করে? চারিদিকে লাল, হলুদ রংয়ের টুসটুসে আম।
কিন্তু এটা সবার জন্য সুখকর হয় না। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে।
প্রতিটি ডায়াবেটিস রোগীর একটা কমন প্রশ্ন হলো – আম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য নিরাপদ কিনা?
ডায়াবেটিস রোগীরা কি আম খেতে পারবেন?
হ্যাঁ, ডায়াবেটিস রোগীরা আম খেতে পারেন। যেসব ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করেন, সময়মতো ও পরিমিত আহার করেন, চিকিৎসকের নির্দেশাবলি মানে চলেন এবং ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে আছে। তিনি নিঃসন্দেহে পরিমাণমতো আম খেতে পারবেন।
কিন্তু যিনি এগুলো মেনে চলেন না। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। তিনি তার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী না খেলে জটিলতা অনেক বেড়ে যাবে।
আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স:
০-১০০ স্কেলে কোনো খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI)-এর মান ৫৫-এর কম হলে তা ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কারণ, ৫৫ এর চেয়ে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) মানযুক্ত খাবারগুলি ধীরে ধীরে হজম হয় যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়।
আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) ৫১ এজন্য আম রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে খুব বেশি প্রভাবিত করে না।
রক্তের শর্করার উপর আমের প্রভাব:
আম রক্তের শর্করার উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। এর প্রধান দুটি কারণ হলো: এই ফলের মধ্যে রয়েছে ফাইবার এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস।
ফাইবার আমাদের রক্ত প্রবাহে চিনির শোষণের হারকে ধীর করে দেয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রী রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
পাকা আমের সাথে পনির, মুষ্টিমেয় বাদাম ও সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন। আমিষের এই সংযোজন রক্তের শর্করার উপর আমের ক্যালোরির প্রভাব হ্রাস করে।
আয়ুর্বেদ কী বলে?
আয়ুর্বেদিক ভাষায় ডায়াবেটিস প্রমেহ নামে পরিচিত। যদিও আয়ুর্বেদ ডায়াবেটিস রোগীদের আম খাওয়ার পরামর্শ দেয় না কারণ এতে অতিরিক্ত ফ্রুকটোজ রয়েছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এতটা উপযোগী নাও হতে পারে।
তবে আপনি যদি আম খেতে চান, পরিমিত পরিমানে খেতে পারেন। দেশি টক-মিষ্টি আম বেছে নিন এবং অধিক মিষ্টি জাতগুলি এড়িয়ে চলুন।
এ সম্পর্কিত গবেষণার ফলাফল:
ফেডারেশন অফ আমেরিকান সোসাইটিস ফর এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজির (এফএএসইইবি) আয়োজিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমে প্রাকৃতিক চিনি থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন আম খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং এমনকি কমিয়ে দিতে পারে।
অন্যদিকে ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত একটি গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে, আম খাওয়া ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে।
সূত্রঃ Healthline, Times of India, NDTV