স্ট্রোকের কারণ কি কি?
সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্যে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে, এমনকি মস্তিষ্কের কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কোন কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হয়ে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হয়ে যায়। এটাকেই চিকিৎসকেরা স্ট্রোক বলেন।
স্ট্রোক একটি মস্তিষ্কের রোগ। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের প্রধান কারণ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কি কি কারণে স্ট্রোক হতে পারে
উচ্চ রক্তচাপ থাকলে:
উচ্চ রক্তচাপ হলো স্ট্রোকের প্রধান কারণ। উচ্চ রক্তচাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্তের চাপ বেড়ে যায় এবং এর কারণে স্ট্রোক হয়ে থাকে। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড প্রেশার থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে। কাজেই যাদের উচ্চ রক্তাচাপ আছে, তাদের নিয়মিত ভাবে রক্তচাপ মাপা অবশ্য কর্তব্য।
রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকায়:
রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল থাকলে সেগুলো রক্তনালিতে জমাট বাঁধে। রক্তনালির একটি নির্দিষ্ট ডায়ামিটার রয়েছে। যখন এটি জমা হয় ডায়ামিটারটি আস্তে আস্তে সংকুচিত হয়ে যায়। কোলেস্টেরল জমাট বাঁধলে স্বাভাবিকভাবে যে পরিমাণ রক্ত যাওয়ার কথা, সে পরিমাণ রক্ত যেতে পারে না। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হয়ে যায়। যার ফলে স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটে থাকে।
ডিপ্রেশন বা মানসিক সমস্যা থাকলে:
ডিপ্রেশন খুবই কমন মারাত্মক একধরণের মানসিক ব্যাধি যা আপনার অনুভূতি, চিন্তা-চেতনা ও কাজকর্মের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দীর্ঘদিন ডিপ্রেশন বা মানসিক সমস্যা থাকলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ববনা বেশি থাকে। কোন কিছু নিয়ে টেনশন বা চিন্তা করার ফলে তৈরী হয় ডিপ্রেশন। এটা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে স্ট্রোক হতে পারে।
ধূমপান বা মদ্যপান করলে:
নিয়মিত অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপানের ফলে অন্যান্য অনেক অসুখের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের ঝুকিও অনেকটাই বেড়ে যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বদ অভ্যাস হল- তামাক সেবন ও মদ্যপান যা হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস এগুলোসহ মস্তিষ্কে স্ট্রোক ঘটাতে পারে। ধূমপানে বা মদ্যপানে স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণের বেশি বাড়ে।
বাইরের খাবার বা ফাস্ট ফুড খেলে:
দীর্ঘদিন পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে বাইরের খাবার বা ফাস্ট ফুড খাবার বেশি খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। বাইরের খাবার বা ফাস্ট ফুড খাবার বেশিরভাগই অস্বাস্থ্যকর যা শরীরের জন্য খুবই অপকারী। এ খাবার পেট খারাপ করার পাশাপাশি শরীর ও খারাপ করে। এসব খাবার দীর্ঘদিন ধরে খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের:
যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট বা এক্সারসাইজ করেন না, তাঁদেরও স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি। ডায়াবেটিস রোগীদের স্ট্রোক আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় তিন গুন বেশি, আর আক্রান্ত হলে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে বেশি। তাই ডায়াবেটিস হলে নিয়মিত ডায়েট বা এক্সারসাইজ করতে হবে।
ডায়াবেটিস রোগীদের খালি পেটে ব্লাড সুগার ১০০-১২০ মিলিগ্রামের নিচে এবং খাবার এর দুই ঘণ্টা পর ১৪০-১৬০ মিলিগ্রাম রাখা ভালো।