দ্রুত করোনাভাইরাসের ঔষুধ বের করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চার ধরণের ঔষুধের পরীক্ষা করছে।
যে কোন ভ্যাকসিন তৈরিতে বিজ্ঞানীরা যথেষ্ট সময় নেন। কারণ ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা ও এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অসংখ্য পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করে ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। এ প্রক্রিয়া বেশ সময় সাপেক্ষ। সাধারণত একটি ভ্যাকসিন তৈরিতে ১২ থেকে ১৮ মাস বা আরও বেশি সময় লাগে।
করোনাভাইরাসের মহামারীতে জীবন বাঁচানো এখন অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেষ্টা করছে কিভাবে ভ্যাকসিন তৈরীর সময় কমানো যায়। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন দেশকে নিয়ে করোনভাইরাস প্রতিরোধে চার ধরনের ওষুধের উপর পরীক্ষা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিশ্বের ৪৫টি দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিন তৈরির এই পরীক্ষায় অবদান রাখছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যত বেশি দেশ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তত দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হবে।
প্রথমে নরওয়ে ও স্পেনের করোনভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের উপর ভ্যাকসিনের ট্রায়াল প্রয়োগের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারণ করেছেন। এই ট্রায়াল প্রয়োগের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও নিরাপদ কিনা বের করা সহজ হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের মহামারী ঠেকাতে চার ধরনের বেশ আশাব্যঞ্জক ভ্যাকসিন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে। এগুলো হলো –
- ম্যালেরিয়া ওষুধ ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রোক্সাইক্লোরোকাইন
- রিমডেসিভির নামক একটি অ্যান্টিভাইরাল যৌগ
- এইডস এর ঔষধ লোপিনাভির এবং রিটনোভির সংমিশ্রণ
- লোপিনাভির এবং রিটনোভির এর সাথে ইন্টারফেরন-বিটা এর সংমিশ্রণ
ক্লোরোকুইন – যা থেকে তৈরি হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন – বেশ পুরানো ওষুধ এবং যেটি ফ্রান্সের একটা ছোট্ট গবেষণায় করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার এই ঔষধ কে সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে গবেষণার ফলাফলগুলি যথেষ্ট নয় এবং আরও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে।
বিশ্বের এই ক্রান্তিলগ্নে যখন পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশি মানুষ গৃহবন্দী এবং অসহায় ভাবে করোনাভাইরাসের হাতে ঝরে যাচ্ছে মূল্যবান প্রাণ গুলি, তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ যাবতীয় দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের দিকে সবাই চেয়ে আছে এই আশায় যে, কোনো একটা সমাধান হয়তো আসছে যা আমাদের সবাইকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিবে।