স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণ কি কি?

মানুষের মস্তিষ্ককে কম্পিউটারের প্রসেসরের সাথে তুলনা করা হয়। সর্বদা সঠিক খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম মস্তিষ্কের জন্য উত্তম বলে মনে করা হয়। 

আলঝেইমার রোগের কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যায়। ক্রমেই ক্ষয় ঘটে স্মৃতিশক্তির। বয়সের সঙ্গে এ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

অনেক কারণেই মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে। মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে গেলে এর প্রভাব পড়ে ব্যক্তির মন-মেজাজ ও আচরণের ওপর। মস্তিষ্কের মধ্যে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে আচরণের সম্পর্ক থাকে যার কারণে রোগীর আচরণ বদলে যায়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কি কি কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যায়-

অপর্যাপ্ত ঘুম:

একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক আট ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। একটা চমৎকার ঘুম আপনার মস্তিষ্ককে অধিক কার্যকরী করে তোলে। ঘুমের অভাবে আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

ঘুমকে বলা হয় মেমোরি চার্জার। ঘুমের সময় আপনার মেমোরি পরবর্তী স্মৃতি ধরার জন্য প্রস্তুত হয়। তাই পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে স্মৃতিশক্তি বিপর্যস্ত হতেই পারে।

বয়সের বৃদ্ধির সাথে:

আপনার বয়স হিসাবে আপনি দেখতে পাবেন যে সময়ের সাথে সাথে আপনার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাচ্ছে। এমন হতে পারে যে সবেমাত্র কারও সাথে সাক্ষাৎ করলে কিছুক্ষন পরে তার নাম ভুলে গেলেন।

খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম ও পুষ্টিকর খাবারের অভাবে:

অসময়ে খাবার খাওরার অভ্যাস একদমই ভালো না স্বাস্থ্যের জন্য। তেমনি ভালো নয় স্মৃতিশক্তির জন্যেও। প্রতিদিন একই সময়ে অল্প করে হলেও খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

নিয়মিত পুষ্টিকর খাবারের অভাবে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে। শরীরে পর্যাপ্ত শক্তির জন্য নিয়মিত আপনাকে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শরীরে শক্তির পাশাপাশি  স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার।

হতাশা ও একাকিত্ব:

হতাশা ও একাকিত্ব থাকলে ব্রেনের উপর খুব চাপ পড়ে। যার ফলে মস্তিষ্কের অনেকটা ক্ষতি হয়ে থাকে। পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার কারণ স্মৃতিশক্তিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অনেকে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে পাগল হয়ে যায়।

হতাশাগ্রস্থ মানুষ কখনো ভালো কিছু করতে পারে না, কোনো কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। বেশি হতাশায় বা একাকিত্ব থাকলে ব্রেনে অনেক চাপ পরে, যার ফলে ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে।

উচ্চরক্তচাপ ও বংশগত কারণে:

উচ্চরক্তচাপ দেহ ও মস্তিষ্কের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই নিয়মিত রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে হবে। মন ও দেহের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের জন্য দেহে কোলেস্টরেলের মাত্রা ঠিক রাখা প্রয়োজন। তা না হলে স্মৃতিশক্তি দ্রুত কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

পরিবার বা বংশে কারো যদি এ রোগ পূর্বে হয়ে থাকে, তাহলে আপনারও হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাদের বংশের ইতিহাসে আলঝেইমার্স রয়েছে তাঁদের সন্তানদের পরবর্তীতে এই রোগটি হতে পারে।

দীর্ঘদিন অ্যালকোহল সেবন করলে:

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হলো দীর্ঘদিন অ্যালকোহল সেবন করা। অ্যালকোহল সেবনের ফলে আপনার মস্তিষ্কে দীর্ঘমেয়াদি অনেক বড় ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। অ্যালকোহল সেবনের ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো দূর্বল হয় এবং স্মৃতিশক্তি কমে যায়।

রেফারেন্স: